হাজারো রোহিঙ্গা ভাসছে নাফ নদীতে
আবারো আগুন জ্বলছে মিয়ানমারের রাখাইনে। বাড়ির পর বাড়িতে আগুন জ্বলছে। জীবন বাঁচাতে ছুটছে নির্যাতিত, ভাগ্য বিড়ম্বিত রোহিঙ্গা মুসলিমরা। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আবাসনের প্রতিটি স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে সোনবাহিনী। নিহতদের শোকে বাকরুদ্ধ আত্মীয়-স্বজন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশায় মিয়ানমারের হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদীতে ভাসছে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তুমব্রু ২নং পিলারের কাছে বিজিপির ৮ থেকে ১০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করায় দিশেহারা হয়ে তারা নদীর পানিতে ঝাঁপ দিচ্ছে।
অনুপ্রবেশকারী কয়েকজন রোহিঙ্গা জানায়, নাফ নদীতে হাজারো রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রোহিঙ্গাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত।
এদিকে, সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান।
তিনি জানান, দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিজিপি সীমান্তে রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে তিন থেকে চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক রাতে ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলার ঘটনার পর উত্তেজনা আর শঙ্কার মধ্যে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় রয়েছে।
উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার বাংলাদেশে প্রবেশের পর নাফ নদীর প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীরে বসে আছে সহায় সম্বলহীন কয়েক হাজার মানুষ। তারা যাতে কক্সবাজারের ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। আগের রাতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় আটক ১৪৬ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে মায়ানমারে।
মায়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের ওই হামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ সদস্যসহ অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছে।
এদিকে, রাখাইন রাজ্যের অবস্থা অত্যন্ত উত্তপ্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেখানে চারদিকে কেবল সেনাবাহিনীর সদস্যদের দেখা যাচ্ছে। অনেক মানুষ মারা গেছে, লোকজন কাঁদছে। অবস্থা খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে।
অন্যদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, রাখাইন থেকে স্থানীয়দের হেলিকপ্টারযোগে সরিয়ে নেয়া হবে। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও অনেককে সরিয়ে নেবেন।
স্থানীয়রা বলছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রচুর গাড়ি দেখা যাচ্ছে।