ধর্ষক ধর্মগুরুর ১০ বছরের কারাদণ্ড
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিতর্তিক ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিমকে নিজের দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার দুপুর আড়াইটায় রোহতক জেলার সুনারিয়া কারাগারে এ রায় দেন পাঁচকোলার বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক জগদীপ সিং।
এর আগে গত শুক্রবার ধর্মগুরু গুরমিতকে ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করে আদালত।
এরপর ধর্মগুরুকে বিশেষ নিরাপত্তার জন্য পাঁচকোলা থেকে রোহতকের এ কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে গুরমিতকে দোষী সাব্যস্ত করার পর ভক্তরা আইনশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে অন্তত ৩৮ জন নিহত এবং কয়েকশ’ জন আহত হয়।
এ কারণে সোমবার প্রভাবশালী ধর্মগুরু গুরমিতের দণ্ড ঘোষণা উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য আইনশৃংখলা বাহিনী।
নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের সহিংসতাপ্রবণ এলাকাগুলো। আইনশৃংখলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে গোটা উত্তর ভারত জুড়ে।
হরিয়ানা রাজ্যজুড়ে আধা সামরিক বাহিনীর ২৮ কোম্পানি সেনা নামানো হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
হরিয়ানার পুলিশ জানিয়েছে, রোহতক জেলায় বহু স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে কোনো ধরনের বিশৃংখলা হলেই পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোহতকের সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা নবদ্বীপ সিং বীরক জানান, এ জেলায় গুরমিত সিংয়ের ডেরা সাচ্চা সৌধার ১০টি কেন্দ্র রয়েছ। এরইমধ্যে তল্লাশি চালিয়ে কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আগাম সতর্কতার জন্য শ’ খানেক গুরমিত ভক্তকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া আগাম সতর্কতা হিসেবে হরিয়ানার সব স্কুল-কলেজ এবং পাঞ্জাবের ১৩টি জেলার স্কুল-কলেজ এবং ভারতের রাজধানী দিল্লি গাজিয়াবাদ ও নয়ডার বেশিরভাগ স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ডেরা সাচ্চা সৌধা নামের ধর্মীয় সংস্থার প্রধান ধর্মগুরু ৫০ বছর বয়সী গুরমিত রাম রহিম সিং।
হরিয়ানার সিরসা জেলায় সাতশ’ একর জায়গা জুড়ে সংস্থাটির সদর দফতর অবস্থিত। এখানে থাকা নারী শিষ্য ও সেবিকাদের গুরমিত নিয়মিত ধর্ষণ করে থাকেন বলে ২০০২ সালে অভিযোগ করেন এক নারী শিষ্য।
ওই নারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে চিঠি লিখে এ অভিযোগের কথা জানান। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এ ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়।
পরে ওই নারী শিষ্য ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ১৫ বছর পর সেই মামলার রায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।