৫০ কোটি টাকা দিলেও মিথ্যা বলবো না : বিশ্বজিৎকে বহনকারী রিক্সাচালক

বিশ্বজিৎ দাশ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে জেরার সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সেই সাহসী রিক্সাচালক রিপন সরদার বলেন, ‘৫০ কোটি টাকা দিলেও মিথ্যা বলবো না, যা দেখেছি আজ তাই বলে যাবো।’
মঙ্গলবার ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হকের আদালতে আসামিদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তিনি দৃঢ়চিত্তে সাক্ষ্য দেন। ‘ভগবানের দোহাই লাগে, আমি বোমা মারতে পারি না’ বলে চিৎকার করে নিরীহ বিশ্বজিৎ বলেছিল, কিন্তু তারা (হত্যাকারীরা) শোনেনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও মিটফোর্ড হাসপাতালে বিশ্বজিৎকে নিয়ে যাওয়া রিক্সাওয়ালা রিপন মামলার সাক্ষ্য দিতে এসে আদালতে এ কথা বলেন।
সাক্ষী হিসেবে রিপন তার সাক্ষ্যে আরো বলেন, ‘ঘটনার দিন সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে আমি ভিক্টেরিয়া পার্কের সামেন রিকশা নিয়ে দাঁড়ানো ছিলাম। ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ছাত্রলীগের ছেলেরা আইনজীবীদের ধাওয়া দিয়ে জজকোর্টের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। ফিরে আসার সময় ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশে ডেন্টাল ক্লিনিকের মাঝখানে একটা বোমা বিস্ফোরিত হয়। কিছু ছেলে ধাওয়া করে ওই ক্লিনিকের দোতলায় বিশ্বজিৎকে লোহার রড দিয়ে মারছে। কিছুক্ষণ পরে নীচে থেকে দেখি একজন একটা চাপাতি বের করে। এসময় বিশ্বজিৎ চিৎকার করে বলতে থাকে ভগবানের দোহাই লাগে আমি বোমা মারিনি, আমি বোমা মারতে পারি না। তারপরও তারা বিশ্বজিৎকে মারতে মারতে ক্লিনিকের ভেতরে নিয়ে যায়।’
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিপনকে জেরার সময় আঙ্গুল দিয়ে তিনি আসামিদের সনাক্ত করেন। তখন আইনজীবীরা তাকে মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছে মর্মে উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘পঞ্চাশ-একশ কোটি টাকা দিলেও আমি মিথ্যা সাক্ষী দেবো না, যা দেখেছি তাই বলবো।’ উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন নিরীহ দর্জি ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button