রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি মানবিক আচরণ দেখাতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণভবনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও রিয়াল অ্যাডমিরাল খোরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলো জানায়, মিয়ানমার সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবেতর জীবনের নানান তথ্য ও ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে, যা মানবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে শুরু করেছে। বিষয়টি মুসলিম সম্প্রদায়কে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে এবং এ নিয়ে মুলমানদের ভেতরে সেন্টিমেন্ট গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সরকারের শীর্ষ নীতি-নির্ধারক শেখ হাসিনা। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বিএনপিও রাজনীতি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। তাই কাউকে এসব সুযোগ দিতে চান না প্রধানমন্ত্রী। ইস্যুটি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার করতে সীমান্ত এলাকার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরার ব্যাপারে উদ্যোগী হতেও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সূত্রগুলো আরও জানায়, এসব বিষয় মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সহানুভূতিশীল হতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) নির্দেশ দিতে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছেন। আপাতত অনুপ্রবেশের পরবর্তী পরিস্থিতি কী হতে পারে, তা নিয়ে সরকার ভাবছে না বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো দাবি করে।
অন্য এক সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের দেশে প্রবেশেও বিধি-নিষেধ শিথিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সতর্ক থাকারও কথা বলা হয়েছে বিজিবিকে। বিশেষ করে, টেকনাফ, উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়িতে রোহিঙ্গাদের আপাতত জায়গা করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
এ সূত্র আরও জানায়, একইসঙ্গে ওইসব এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটু সতর্ক অবস্থানে থাকার ব্যাপারেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আশ্রয় নিয়ে তারা যাতে কোনও অপকর্মের সঙ্গে জড়াতে না পারে, সেদিকটা বিশেষ নজরে রাখতে হবে।
সূত্র জানায়, গণভবনের ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের ব্যাপারেও জোর দেওয়া হয়েছে। দেশটির সঙ্গে কোঅপারটিভ ওয়ে-তে আলোচনা চালাতে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।