ঈদের জামায়াতে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য আমাদেরকে অন্যভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছে: সৈয়দ মবনু

malসৈয়দ মবনু: আজকে জীবনে প্রথম এমন হলো, মন চাচ্ছিলো না ঈদের জামায়াতে যেতে। প্রথমত এ ক’দিন থেকে দেখছি মায়ানমারে রোহিঙ্গা সংকট এবার যেনো আগের থেকে বেশি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। মনটা একেবারে খারাপ। মনে করেছিলাম, বলে যখন কোন লাভ নেই তবে আর বলবো না। রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার পরও রাষ্ট্র আমাদের কথা  শুনতে চায় না, আর অন্য রাষ্ট্র?এত মানুষের লাশ, চিৎকার আর ধর্ষণ দেখলে মানুষের মন ভালো থাকে কীভাবে?
আমি আগেও বলেছি, এখানে বাংলাদেশ সরকারের তেমন কিছু করার নেই, সামান্য আশ্রয় দেওয়া ছাড়া। কিন্তু আশ্রয় তো সমস্যার মূল সমাধান নয়। তা ছাড়া মায়ানমারের সরকার তো চাচ্ছেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসুক। তা ছাড়া বাংলাদেশ কোন শক্তিশালী দেশ নয়। এখানে আভ্যন্তরিন যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া কিছুই করা সম্ভব নয়। রোহিঙ্গিারা যদি ভেতরে শুরু করতে পারে তবে সহযোগিতার প্রয়োজন, নতুবা অনুগ্রহ প্রকাশ ছাড়া কিছুই করা সম্ভব নয়।
আজকে সিলেট শাহী ঈদগাহে আমাদের সাথে ঈদের জামায়াতে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে আটটায় জামায়াত শুরু হয়। জামায়াতের আগে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুস্তাক আহমদ খান। তিনি তাঁর বক্তব্যে ঈদের ফাজায়েল এবং মাসায়েল নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গত ক’বছর থেকে বাংলাদেশে চামড়ার বিরাট মূল্যহ্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, যা বিশেষ করে মাদরাসার গরীব ছাত্রদের লেখাপড়ার ক্ষতির কারণ হয়ে যাচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষাকে ধ্বংসের জন্য এমন ষড়যন্ত্র কি না তা দেখার জন্য তিনি অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত তাঁর বক্তব্যে সবাইকে ঈদ মোবারক জানিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের করুণ চিত্র সবার সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি সেদেশে মুসলিম নির্যাতনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সে দেশের সরকারকে অনুরোধ করেন এই নির্যাতন অতি দ্রুত বন্ধ করতে।
সাথে সাথে তিনি একথাও বলেন, বাংলাদেশ তার সাধ্যানুসারে সেখানের বিপদগ্রস্থ মানুষদেরকে আশ্রয় দিচ্ছে। তবে ব্যাপাকহারে, চাহিদানুসারে দিতে পারছে না। কারণ, বাংলাদেশে প্রতি কিলোমিটারে এক হাজার লোকের বসতি। আর পাশের ধনী দেশে মাত্র ছয়শজন। ভারত সহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর উচিত বিপদগ্রস্থ রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দান করা। আমাদের সবার উচিৎ এই নির্মম ঘটনার নিন্দা জানানো এবং উন্নত বিশ্বের কাছে দাবী জানানো, তারা যেনো রোহিঙ্গাদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বুঝি স্বাধীনতার জন্য শরণার্থী হওয়ার কষ্ট, কারণ আমরাও এক সময় শরণার্থী হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছি। তাদের কষ্টের সাথে আমরাও মর্মাহত হচ্ছি। তবে স্মরণ রাখতে হবে, আমাদের অনেক কিছুর স্বাদ আছে, কিন্তু সাধ্য নেই। সবাই দোয়া করুন, সবাই প্রতিবাদ করুন, সবাই আওয়াজ দিন।
আজকের ঈদের জামায়াতে না গেলে অর্থমন্ত্রীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য শোনা থেকে বঞ্চিত হতাম। ঈদের জামায়াতে তাঁর বক্তব্য আমাদেরকে অন্যভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ধন্যবাদ মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যের জন্য।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button