মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে একযোগে চাপ দিতে হবে
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে এবং সহিংসতা বন্ধ করতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে একযোগে চাপ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট এ কথা বলেন।
মিয়ানমারের সহিংসতাকে জাতিগত নিধনযোগ্য, হত্যাযজ্ঞ বা গণহত্যা যে যে-নামেই ডাকুক না কেন মার্শা বার্নিকাট মনে করেন, এই পরিস্থিতি মারাত্মক, ভয়াবহ ও দুঃখজনক। এই অবস্থায় আর চুপচাপ বসে থাকার সুযোগ নেই। নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কথায় তারই প্রতিধ্বনি ঘটেছে।
বার্নিকাট বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের এ এক চরম বহিঃপ্রকাশ। কতটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি, কতটা ভয়, আতঙ্ক আর হুমকিতে এত বিপুল মানুষ এত অল্প সময়ে ঘর ছেড়েছে, দেশ ছেড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর নাম নিয়ে একেকজন একেক কথা বলবে। কিন্তু আমি বলব নিঃসন্দেহে এটা এক ভয়ানক মানবিক বিপর্যয়।
২৫ আগস্ট থেকে মার্কিন সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বার্নিকাট বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু করা এ সহিংসতার দায় মিয়ানমার সরকারকেই নিতে হবে এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সবার এ অঞ্চলের প্রতি নজর আছে, আগ্রহ আছে। চীন, ভারত, রাশিয়া তো বটেই, যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি দূর প্রাচ্যের দেশগুলো চায় এখানে অর্থনৈতিক কার্যক্রম হোক। ব্যবসা-বাণিজ্য চলুক। কিন্তু এ রকম সহিংসতা চলতে থাকলে, অস্থিতিশীলতা থাকলে সেটা সম্ভব নয়। কাজেই সবাই মিলে এর সমাধান খুঁজতে হবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে একযোগে চাপ দিতে হবে, যাতে সহিংসতা বন্ধ করে এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়।
ওয়াশিংটন থেকে সদ্য ঘুরে আসা মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, মিয়ানমারকে বিচ্ছিন্ন করার চেয়ে কূটনৈতিক সমাধানের জন্য তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার নীতি অনুসরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এর মাধ্যমে সু চির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সে দেশে ফেরত নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন তারা।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন অং সান সু চিকে সরাসরি বলেছেন, এই সংকটে তার বিস্তর দায়-দায়িত্ব রয়েছে। শুধু রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া নয়, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও।
এর আগে রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সাংবাদিকদের করা এক ব্রিফিংয়ে বার্নিকাট আরো বলেন, এই সংকট শুধু রোহিঙ্গাদের কিংবা বাংলাদেশের একার নয়, এটি একটি নিরাপত্তার সংকট, যা আন্তর্জাতিক রূপ নিতে পারে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতির বিষয়ে আগামী সপ্তাহে একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজার যাচ্ছে- জানিয়ে বার্নিকাট এই সংকটে মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।