এবারের সার্ক সম্মেলন নিয়েও অনিশ্চয়তা
আবারও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। গত বছরেও সম্মেলন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। সেবারের আয়োজক পাকিস্তানকে ভারত-বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সম্মেলন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করায় এটি স্থগিত হয়ে যায়।
এবারও সম্মেলন নিয়ে তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি সার্ক সম্মেলন সাধারণত বছরের নবেম্বরে অনুষ্ঠিত হলেও টাইমস অফ ইন্ডিয়া বলছে, এখনও সম্মেলনটির আয়োজন নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপের কথা জানা যায়নি। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে সার্ক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
সেইসব আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এরআগে ২০১৬ সালের নভেম্বের পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এসে সার্ক সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জের ধরে দেশটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে সহায়তার অভিযোগ তোলে ভারত। পরে এ ‘অজুহাতে’ সম্মেলন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। ভারতের দেখাদেখি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানও নিজেদের সরিয়ে নিলে সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য, সার্কের চার্টার অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশের কোনও একটি দেশ এই শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করলে, তা এমনিতেই স্থগিত হয়ে যায়। এবারও সম্মেলন করা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রে তারা জানিয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের পরষ্পর শত্রুতার জের ধরে কার্যত অচল হয়ে থাকা সার্ক সম্মেলন এবারও আলোর মুখ দেখতে নাও পারে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অধিবেশন চলাকালে, বিভিন্ন পার্শ্ব বৈঠকে সার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনের অনিশ্চয়তার প্রসঙ্গই উল্লেখ করেননি সুষমা। তবে এজন্য প্রথমে সন্ত্রাস দমনের প্রতি জোর দিয়েছেন তিনি। সুষমা বলেন, আঞ্চলিক সমৃদ্ধি, যোগাযোগ ও সমন্বয়ই কেবল শান্তি ও নিরাপত্তা আনতে পারে। কিন্তু এ অঞ্চলে গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে আমরা সব রকমভাবে সন্ত্রাস দূর করব, এটা এ অঞ্চলের স্থায়িত্বের জন্য প্রয়োজনীয়। সার্কের এ অচলাবস্থায় ভারত বিমসটেকের মাধ্যমে দাঁড়াতে চাইছে। যেখানে পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই রয়েছে। ফলে এটি মূলত ভারতের কর্তৃত্বাধীন পাকিস্তানবিহীন একটি ‘সার্ক’ হয়ে উঠেছে। এছাড়া বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) নামে রেল ও জ্বালানি লেনদেন বিষয়ক একটি বিকল্প সমন্বয় জোটও গড়ে তোলা হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের বিভিন্ন পার্শ্ব বৈঠকেসুষমা মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা ও বাণিজ্য চুক্তি প্রভৃতি না থাকার সমালোচনা করে বলেন, সার্ক তার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, সার্কের এ অচলাবস্থায় ভারত বিমসটেকের মাধ্যমে দাঁড়াতে চাইছে। যেখানে পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই রয়েছে। ফলে এটি মূলত ভারতের কর্তৃত্বাধীন পাকিস্তানবিহীন একটি ‘সার্ক’ হয়ে উঠেছে। এছাড়া বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) নামে রেল ও জ্বালানি লেনদেন বিষয়ক একটি বিকল্প সমন্বয় জোটও গড়ে তোলা হয়েছে।