নতুন প্রজন্মের সাথে দেশের সেতুবন্ধন তৈরী করে দিতে চায় বিবিসিসি
এনাম চৌধুরী: এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশন এর মাধ্যমে ব্রিটেনে বেড়ে উঠা আমাদের নতুন প্রজন্মের সাথে বাংলাদেশকে ভিন্ন আঙ্গিকে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স। নানাবিধ সমস্যার কারণে বর্তমান প্রজন্মের ধারণা ব্যবসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের যথাযথ পরিবেশ নেই। সেই সাথে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব, সঠিক আইডিয়া না দেয়া, আইন সৃঙ্খলার বিষয়ে ভুল চিত্র তুলে ধরার কারণে বাংলাদেশ থেকে এই প্রজন্মের এনআরবিরা মুখ ফেরিয়ে নিচ্ছে। এ ধারা যদি চলতে থাকে তা হলে বাংলাদেশের সাথে আমাদের যে ‘জেনারেশন গেপস’ তৈরী হবে সেটা কাঠিয়ে উঠা অসম্ভব হবে। এতে দেশ হারাবে অর্থনৈতিক ভাবে একটি বিশাল সম্ভাবনার প্রস্তুত ক্ষেত্র। ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স বর্তমান বাংলাদেশের সাথে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সেতুবন্ধন তৈরী করে দিতে চায়। চেম্বার নেতৃবৃন্ধ বলেন, জীবন-জীবিকার প্রয়াজনে প্রবাসীরা জন্ম মাঠি ছেড়ে থাকলেও আমাদের মন, ভবিষ্যতের স্বপ্ন সব পরে থাকে দেশে। আমাদের ভবিষ্যত সন্তানেরা অনেক সময় দেখে তাদের পিতা-মাতা দেশের জন্য সব দিতে প্রস্তুত অথচ তারা দেশে তাদের উপযুক্ত মর্যাদা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, আর সে কারণে তারা দেশ মুখী হতে আগ্রহী নয়। এদেরকে দেশমুখী করা যেকোন সময়ের দাবী।
সোমবার (২ অক্টোবর ) পূর্ব লন্ডনের বারাকা রেস্টুরেন্টে আগামী ২১ থেকে ২৭ অক্টোবর সিলেটে অনুষ্টিতব্য এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশন ২০১৭ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেম্বার নেতৃবৃন্ধ উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সম্মেনলের সার্বিক প্রস্তুতি সাংবাদিকদের অবহিত করেন চেম্বার প্রেসিডেন্ট এনাম আলী এমবিই।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর সিনিয়র উপদেষ্টা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগীর বক্ত ফারুক, ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মনির আহমেদ, লন্ডন রিজিওন প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ, ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর মেম্বারশীপ সেক্রেটারী সুরকুম খালেদ আহমেদ, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপ সেক্রেটারী আবুল হায়াৎ নুরুজ্জামান, কমিউনিটি এফেয়ার্স সেক্রেটারী ডক্টর সানাওয়ার চৌধুরী, ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল হেলাল খান, ডাইরেক্টর মোহাইমিন মিয়া, ডাইরেক্টর শফিকুল ইসলাম, ডাইরেক্টর আব্দুল মুমিন কমিউনিটি নেতা আলা উদ্দিন প্রমুখ।
সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রসিডেন্ট এনাম আলী এমবিই বলেন, এই সম্মেলন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম সম্মেলন, ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এটির প্রথম আয়োজক। আমরা চেষ্টা করবো আমাদের সবটুকু প্রচেষ্টা দিয়ে সম্মেলনের ডেলিগেটদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার। ইতিমধ্যে অন্যান্য দেশের এনআরবি ব্যবসায়ীরা তাদের উপস্তিতি নিশ্চিত করেছেন এবংকয়েকশো ডেলিগেট অংশ নেবেন আশা প্রকাশ করে চেম্বার প্রেসিডেন্ট বলেন, সিলেটকে আমরা এই সম্মেলনের জন্য বেঁচে নিয়েছি কারণ সিলেটের প্রবাসীরা এনআরবি’র মূল সূত্র। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এ দেশে এসে আমাদেরকে বিশ্বময় পরিচয় করে দিয়েছেন, আমরা তাদের উত্তরসূরী হিসেবে আজ গর্ব করে বলছি আমরা প্রবাসী, তাই এনআরবি ক্যাপিটাল সিলেটের এবারের প্রথম সম্মেলন হবে ইতিহাসের একটি অংশ। চেম্বার প্রেসিডেন্ট, সাংবাদিকদের সহযুগিতা কামনা করে বলেন,নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিরা এই কনভেনশন এর মাধ্যমে যাতে উৎসাহিত হয় সে জন্য মিডিয়ার সহযুগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মনির আহমেদ বলেন, এনআরবি ব্যবসায়ীরা দুটি দেশের রেপ্রেজেন্টিভ হিসেবে আমরা কাজ করছি। সে হিসেবে আমাদের অবশ্যই দেশের কাছে আলাদা চাওয়া-পাওয়ার অনেক কিছু আছে। আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। সরকার এনআরবি ব্যবসায়ীদের যেকোন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি মর্যাদা দিচ্ছে সে হিসেবে আমরা কনভেনশনটির জন্য এখন উপযুক্ত সময় মনে করছি।
আপনারা জানেন – আমাদের বর্তমান জেনারেশন কেমন? দেশের প্রতি তাদের কমিটমেন্ট কি? তারা দেখছে তাদের পিতা কিংবা স্বজনরা দেশে গিয়ে ব্যবসা -বাণিজ্য কিংবা অন্যান্য নানা ক্ষেত্রে সুবিধার চেয়ে নানা ভাবে অসুবিধায় পড়ছেন ,আর যে কারণে তারা দেশ বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। আমরা ব্রিটিশ- বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর মাধ্যমে আমরা আমাদের বর্তমান জেনারেশনকে বাংলাদেশমুখী করে দেশ ও প্রবাসের মধ্যে সেতু বন্ধন গড়ে দিতে চাই।
ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর সিনিয়র উপদেষ্টা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগীর বক্ত ফারুক বলেন,
এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশন ২০১৭ এনআরবিদের জন্য একটি মর্যাদার বিষয় এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স সেই মর্যাদাপূর্ণ আয়োজনের গর্বিত আয়োজক হতে পেরে সত্যি আনন্দিত। তিনি আন্তর্জাতিক এ কনভেনশন বাস্তবায়নে সকলের সহযুগিতা কামনা করেন।
লন্ডন রিজিওন প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ বলেন, আমাদের প্রত্যাশা এনআরবি গ্লোবাল কনভেনশন বাংলাদেশকে অনেক উচ্চমাত্রায় পৌঁছে দেবে। বিশেষ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য এটি একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। আমাদের প্রত্যাশা আমরা এই কনভেনশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিক ধারণা তুলে দিতে পারবো।