কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা স্থগিত
গণরায় মেনে স্বাধীনতার ঘোষণা এখনই না দিয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে স্পেন থেকে আলাদা হতে মাদ্রিদের সঙ্গে আলোচনা চাইলেন কাতালুনিয়ার নেতা কার্লেস পুজদেমন।
গত ১ অক্টোবরের গণভোটের পর মঙ্গলবার বার্সেলোনায় আঞ্চলিক পার্লামেন্টে ভাষণে ওই জনরায়ের ভিত্তিতে এখনই স্বাধীনতার ঘোষণা না দেওয়ার পক্ষে অবস্থান জানান তিনি।
এদিকে মাদ্রিদ পুজদেমনের স্বাধীনতার এই ‘প্রচ্ছন্ন’ ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভাষণে পুজদেমন বলেছেন, কাতালুনিয়ার মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে স্পষ্ট রায় দিয়ে দিয়েছে।
তবে পার্লামেন্টকে তিনি বলেছেন ভোটের কার্যকারিতা আপাতত স্থগিত রাখতে, যাতে ম্পেন সরকারের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা থাকে।
কাতালুনিয়ার মানুষের উপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানালেও বর্তমান অবস্থায় উত্তেজনা প্রশমন করার পক্ষে নিজের অবস্থানও জানান পুজদেমন।
কাতালান কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, গণভোটে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার স্পেন থেকে কাতালুনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ওই ভোটকে অবৈধ ঘোষণা করেছে মাদ্রিদ। স্পেনের সাংবিধানিক আদালত এর ফলকে স্থগিত করেছে।
গণভোটের রায় পক্ষে গেলে স্বাধীনতার ঘোষণা সুগম করতে গত মাসে একটি আইন পাস করেছিল আঞ্চলিক সরকার। পুজদেমনের আহ্বান পেলে সেই আইন অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারত কাতালান পার্লামেন্ট।
কাতালান প্রেসিডেন্ট পুজদেমনের পার্লামেন্টে এই ভাষণ সামনে রেখে ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো তার উপর চাপ বাড়াচ্ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা না দেওয়ার জন্য।
আঙ্গেলা মেরকেল টেলিফোনে স্পেনের নেতা মারিয়ানো রাখয়কে ‘স্পেনের অখণ্ডতার প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন’ বলে সোমবার জার্মান চ্যান্সেলরের এক মুখপাত্র জানান।
ফ্রান্সের মন্ত্রী নাতালি লুইজিও জানান, তার দেশ কাতালুনিয়ার স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেবে না।
গণভোটের পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে বিশাল বিশাল সমাবেশ হয়েছে বার্সেলোনায়। রোববার এক সমাবেশে অখণ্ড স্পেনের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সমর্থক কাতালুনিয়ার বিচ্ছিন্নতার বিপক্ষে অবস্থান জানান।
স্বাধীনতা ঘোষণা করলে স্পেনের পার্লামেন্ট সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ জারি করে কাতালুনিয়ার স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ করবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে কাতালুনিয়া থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সদরদপ্তর ও নিবন্ধিত কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আবেরতিস, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইনমোবিলিয়ারি কলোনিয়াল ও টেলিকম কোম্পানি সেলনেক্সসহ অনেকেই তাদের প্রতিষ্ঠান কাতালুনিয়া থেকে সরিয়ে মাদ্রিদে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। -বিডিনিউজ