শনিবার সিলেটে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী গ্লোবাল বিজনেস কনভেনশন
এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২২টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে সিলেটে শুরু হচ্ছে ‘এনআরবি গ্লোবাল বিজনেস কনভেনশন’। ২১-২৭ অক্টোবর সপ্তাহব্যাপী এই কনভেনশন শুরু হবে শনিবার থেকে। কনভেনশনের আয়োজক সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। নগরীর মেন্দিবাগস্থ আবুল মাল আব্দুল মহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিতব্য কনভেনশন উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রচারনা ও অতিথিদের বরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন আয়োজক কমিটির সদস্যরা। চেম্বার সূত্র জানিয়েছে, কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কনভেনশনের উদ্বোধন করবেন।
আয়োজকরা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতেই বৃহৎ পরিসরের এই কনভেনশন। বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও অনৈক্য, বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে দেশে বিনিয়োগে উৎসাহ পাচ্ছেন না প্রবাসী উদ্যোক্তারা। সাধ্য ও ইচ্ছা থাকা সত্তেও জন্ম মাটিতে অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনয়নে দিন দিন নিরুৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসীরা। বিশেষ করে বাংলাদেশী তরুণ প্রজন্মের যারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি প্রভৃতি দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। দেশের প্রতি তাদের টান ক্রমেই কমছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে নতুন প্রজন্মের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও দেশ মাতৃকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হবে এই কনভেনশন থেকে।
বুধবার সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেম্বার সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদও এমনটা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত এনআরবিদের দেশে বিনিয়োগে আকৃষ্টকরণ, নতুন প্রজন্মের এনআরবিদের মধ্যে দেশের প্রতি টান সৃষ্টিসহ যৌথ উদ্যোগে রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিই হবে কনভেনশনের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, কনভেনশনটি আয়োজনে আমরা সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাচ্ছি। কনভেনশনটি সিলেটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো পরিচিত করে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কনভেনশনে উপস্থিতি যাতে পরিপূর্ণ হয়, এজন্য বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী প্রবাসী ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করেছেন আয়োজকরা। এতে বিপুল সাড়া পাওয়ার পর সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন আয়োজকরা। এ কনভেনশনে বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, নেদারল্যান্ড্স, পর্তুগাল, সুইডেন, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, ডেনমার্ক, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ ২২টি দেশের বাংলাদেশী প্রবাসী ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করবেন। কনভেনশনে প্রবাসে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী এবং প্রবাস ছেড়ে দেশে আসা শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা বক্তব্য রাখবেন, নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা বলবেন। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশীদের দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী করার জন্য উৎসাহমূলক বক্তব্য রাখবেন।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠিতব্য কনভেনশনে সিলেটের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটসহ সারাদেশে বিনিয়োগের যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে, শিল্পায়নের যে অবারিত সুযোগ রয়েছে এসব বিষয় সম্পর্কেও সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে।
কনেভনশন উপলক্ষে ২১ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে নগরীতে র্যালী বের করা হবে। সপ্তাহব্যাপী আয়োজনে সেমিনারসহ আইসিটি, পর্যটন ও শিক্ষা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এনআরবিদের অবদান বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গতকাল বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে কনভেনশন সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট এনাম আলী এমবিই। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়েল্স-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান দিলাবর এ হোসেন, সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি মোঃ এমদাদ হোসেন, পরিচালক ও এনআরবি গ্লোবাল বিজনেস কনভেনশন আয়োজক কমিটির আহবায়ক নুরুল ইসলাম, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাংবাদিক আব্দুল মালিক জাকা, দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক আবদুল কাদের তপাদার, গোলাম মোস্তফা ফারুক, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, বাসস এর ব্যুরো চীফ মকসুদ আহমদ মকসুদ, আব্দুল করিম কিম, আব্দুল বাতিন ফয়সলসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও চেম্বারের পরিচালকবৃন্দ।