যুক্তরাষ্ট্রে তিন সপ্তাহে গুলিতে নিহত ৯০০
লাস ভেগাসের কনসার্টে গুলির ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে গেল তিন সপ্তাহে গুলিতে প্রায় ৯০০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরো প্রায় ২ হাজার জন আহত হয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের কনসার্টে হামলায় নিহত হন ৫৯ জন। এ ঘটনায় আহত হন কমপক্ষে ৫২৭ জন।
৬৪ বছর বয়সী স্টিফেন প্যাডক আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ গুলির ঘটনা ঘটায়। নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ জানায়, গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, লাস ভেগাসের ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন গুলির ঘটনায় অন্তত ৮৯৬ জন মারা গেছেন।
গুলির ঘটনাগুলোর প্রথম শিকার সাউথ ক্যারোলিনার পাম্পলিকোর ২৩ বছর বয়সী এলি বেকোট। ১ অক্টোবর লাস ভেগাসের কনসার্টে প্যাডকের গুলিতে তিনি মারা যান। এছাড়া ওই পরিসংখ্যান মতে, ১ অক্টোবর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত গুলির ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯৯০ জন।
এসব হত্যাকাণ্ডের বেশিরভাগই পিস্তলের মতো ছোট বন্দুক দিয়ে ঘটানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে লাস ভেগাসের ঘটনায় প্যাডক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বেশ কয়েকটি অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করেছিলেন। ঘটনার পর তার হোটেল কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে ১৭টি বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, প্রতিবছর আমেরিকায় গড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ গুলিবদ্ধি হয়ে মারা যান। তাদের কেউ আত্মহত্যা করেন, কেউ অন্যের ছোড়া গুলিতে নিহত হন। এছাড়া সরকারের তৈরি এক পরিসংখ্যান মতে, দেশটিতে প্রতিবছর বন্দুকের গুলিতে ১ হাজার ৩০০ শিশু মারা যায়।
আমেরিকার রয়েছে এক অদ্ভুত বন্দুক সংস্কৃতি। দেশটির মানুষের একটি বড় অংশেরই নিজের কাছে বন্দুক রাখা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক পক্ষপাত।
অনেকেই এটিকে নিজেদের ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে। বিশ্বের আর কোথাও এমন সংস্কৃতি দেখা যায় না। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব জাস্টিসের (এনআইজে) ২০০৯ সালের তথ্য মতে, আমেরিকার বেসামরিক মানুষের হাতে রয়েছে আনুমানিক ৩১ কোটি বন্দুক।
এক্ষেত্রে এর পরের অবস্থানে ভারত থাকলেও এর সঙ্গে আমেরিকার তুলনা চলে না। কারণ সব মিলিয়ে ভারতে বেসামরিক মানুষের হাতে ৪.৬ কোটি বন্দুক রয়েছে।
আর সুইজারল্যান্ডভিত্তিক স্মল আর্মস সার্ভের (এসএএস) তথ্যমতে, সারা বিশ্বে বেসামরিক মানুষের হাতে থাকা অস্ত্রের পরিমাণ ৬৫০ মিলিয়ন বা ৬৫ কোটি।
অর্থাৎ সারা বিশ্বে বেসামরিক মানুষের কাছে থাকা অস্ত্রের প্রায় অর্ধেকই রয়েছে আমেরিকায়। এসবই বৈধ অস্ত্রের হিসাব, তা-ও আবার প্রায় এক দশক আগের।
সংঘাতপূর্ণ বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বেসামরিক মানুষের হাতে থাকা সব অস্ত্রের হদিস দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে এসএএস।