সিলেটে খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার
তামাবিল স্থলবন্দর উদ্বোধন
স্থলবন্দরটি উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল গত আগস্টে। কিন্তু নানা জটিলতায় শেষপর্যন্ত তা আর হয়নি। অবশেষে সকল জটিলতা কাটিয়ে সিলেটে বহুল প্রতীক্ষীত তামাবিল স্থলবন্দরের উদ্বোধন হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান শুক্রবার এই স্থলবন্দরের উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতির জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রায় সাড়ে ৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ স্থলবন্দরটি চালু হওয়ায় দেশ উপকৃত হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়ার পাশাপাশি দারিদ্রতা কমবে বলে মন্তব্য অর্থমন্ত্রীর।
তামাবিল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জনায়, তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০২ সালে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে দীর্ঘ সময়ে এ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া থমকে ছিল। অবশেষে ২০১৫ সালের ৮ মে স্থলবন্দর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করতে ২৩ দশমিক ৭২ একর ভূমি অধিগ্রহণ, এক লাখ নয় হাজার ৩৩০ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, আড়াই হাজার মিটার সীমানাপ্রাচীর, আট হাজার ১৮০ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ সড়ক, ২৭ হাজার বর্গমিটার উন্মুক্ত স্টক ইয়ার্ড, ৭৪৪ বর্গমিটার ওয়্যারহাউস, এক হাজার ৩৪৯ বর্গমিটার অফিস কক্ষ, ডরমিটরি ও ব্যারাক ভবন এবং দুই হাজার মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হয়। এছাড়া দুটি ওয়েটব্রিজ স্থাপন ও পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ারও নির্মাণ করা হয়। তামাবিলকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপান্তর করতে ব্যয় হয় ৬৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
নির্মাণ কাজ শেষে গত আগস্টে তামাবিল স্থলবন্দরের উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে শুক্রবার প্রতীক্ষীত এ স্থলবন্দরটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘তামাবিল স্থলবন্দর চালু হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশই উপকৃত হবে। দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হবে। এ স্থলবন্দরের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়বে, দারিদ্রতাও কমবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে ১১টি স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আরো ১০টি কন্টেইনার বন্দর স্থাপনের কাজ চলছে। স্বাধীনতার সময় দেশের ৭০ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে ছিল। বর্তমানে তা সাড়ে ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশে এখন তিন কোটি ৮০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন হয়।’
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘খালেদা ক্ষমতায় থাকাকালে একটা স্থলবন্দরও চালু করতে পারেননি। অথছ শেখ হাসিনা ১১টি স্থলবন্দর চালু করেছেন। তামাবিল স্থলবন্দর চালু হওয়ায় রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।’
স্থলবন্দরটি চালু হওয়া বিষয়ে তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, ‘এই স্থলবন্দরটি চালু হওয়ায় ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, আসাম ও ভুটানের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো সম্প্রসারিত হবে। একই সাথে সরকার প্রতি বছর এ স্থলবন্দর থেকে শত শত কোটি টাকা রাজস্ব আয় করবে এবং বেশ কিছু শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে।’