নতুন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী উইলিয়ামসন

williamব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন গ্যাভিন উইলিয়ামসন। তিনি এত দিন চিফ হুইপের দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে মাইকেল ফ্যালন পদত্যাগ করার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই উইলিয়ামসনকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হলো।
যৌন নিপীড়নের অভিযোগের জের ধরে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ফ্যালন। যুক্তরাজ্যের কয়েক ডজন এমপির বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নমূলক আচরণের অভিযোগ নিয়ে চলমান ডামাডোলের মধ্যে পদত্যাগ করেন ফ্যালন।
নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া গ্যাভিন উইলিয়ামসন ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেকটা অপরিচিত। সামরিক বিষয়ে তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। তবে তার তরুণ্যকেই এ পদের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বিশ্বাসভাজন বলে পরিচিত।
২০১০ সালে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন গ্যাভিন উইলিয়ামসন। ২০১৬ সালে থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর উইলিয়ামসন কনজারভেটিভ পার্টির চিফ হুইপের দায়িত্ব পান।
ডেপুটি চিফ হুইপ জুলিয়ান স্মিথ এখন চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করবেন। আর ডেপুটি চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ট্যাটন এলাকার এমপি এস্থার ম্যাকভি।
বিবিসির রাজনীতিবিষয়ক সহকারী সম্পাদক নরমান স্মিথ বলেন, থেরেসা মে নেতৃত্ব নিয়ে দলে এবং দলের বাইরে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এমন অবস্থায় চিফ হুইপ পদে পরিবর্তনের বিষয়টি অনেকটা অবাক করার মতো ব্যাপার।
যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভি ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রীসহ নারীদের প্রতি যৌন হেনস্তার গণ-অভিযোগ বিশ্বে তোলপাড় তোলে। এ ঘটনা জানাজানির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীরা ‘মি টু’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে নিজেদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে শুরু করে।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের সঙ্গে কাজ করেন—এমন কর্মীরা যৌন নিপীড়নমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে ৩৬ জন এমপির একটি তালিকা প্রকাশ করেন। গত দুই দিনে সেই তালিকা আরো দীর্ঘ হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপিদের বিরুদ্ধেও।
পদত্যাগপত্রে মাইকেল ফ্যালন বলেন, তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর আচরণের যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার বেশির ভাগই মিথ্যা। তবে তার অতীত জীবনে করা একটি আচরণ ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীকে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মানের চেয়ে নিম্নতর বলে মনে করেন তিনি।
২০০২ সালে এক সান্ধ্য ভোজসভায় সাংবাদিক জুলিয়া হার্টলি-ব্রিউয়ারের হাঁটুতে হাত বুলিয়ে ছিলেন মাইকেল ফ্যালন। তখন ওই ঘটনা জানাজানি হলে ফ্যালন ক্ষমা চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তার এক মুখপাত্র।
পদত্যাগের পর মাইকেল ফ্যালন বিবিসিকে বলেন, ১০ থেকে ১৫ বছর আগে যেসব বিষয় বাহবা পেত, এখন সেগুলো চরম আপত্তিকর হিসেবে দেখা হয়। তিনি বলেন, এখন বিষয়টি সম্পর্কে পার্লামেন্টকে ভাবতে হবে।
পার্লামেন্ট বা দলীয় কর্মীদের প্রতি যৌন হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইতিমধ্যে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সেটিকে স্বাগত জানান ফ্যালন। সব দলের সম্মতিতে আপত্তিকর আচরণ বন্ধে একটি স্বাধীন সংস্থা গড়ে তোলার কথা বলেছেন মে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button