বিপিএল উৎসবে মাতোয়ারা গোটা সিলেট

BPLবিপিএল নিয়ে মাতামাতির অন্ত নেই সিলেটে। গত ক’দিন থেকেই ক্রিকেট আর টিকিট ছিল টক অব দ্য সিলেট। কাংখিত টিকিট সকলের ভাগ্যে জোটেনি। মিলিয়ন-বিলিয়ন ক্রিকেটে প্রেমীদের তুলনায় টিকেট সংখ্যা মাত্র আটার হাজার ১৮০০০ হাজার। সংঘত কারনে এ অনুপাত, কোনভাবে মিলানো দায়। তারপরও টিকেট চাই.. চাই…। কিন্তু কপালে জুটেনি চাওয়া-পাওয়ার। তাই টিকেট নিয়ে, কর্তৃপক্ষের উপর উঠে আসে প্রশ্নবিদ্ধ, নানা প্রশ্ন। কর্তৃপক্ষ শাসক দলের পরিচয়ে পরিচিত। সেকারনে কথা উঠে ক্রিকেট স্বপ্ন-উৎসব জিম্মি যেন প্রভাবশালীদের স্বার্থ ছকে। কিন্তু বাস্তবতার এ দূর্ভেদ্য জাল ছিন্ন করার সুযোগও অসাধ্য। ক্ষুব্ধ ক্রিকেট প্রেমিরা টিকেট না পেয়ে ধ্ওায়া করেছে মহানগর আ’লীগ এর যুগ্ন সম্পাদক বিজিত চৌধুরীকে। একই সাথে পুলিশের লাটিচার্জে রক্তাক্ত হয়েছেন ক্রিকেট প্রেমির্ওা। টিকেট নিয়ে কথা উঠে কালোবাজিরির। গতানুগতিক এ পন্থায় ক্রিকেট বানিজ্য করে ১৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুনঞ্জন প্রবল হয় বাজারে। পরিস্থিতির এমন পর্যায়ে বিপিএল বয়কটের আহবান জানান দলের জেলা আ’লীগ সেক্রেটারী শফিকুর রহমান চৌধুরী। জেল হত্যা দিবসের একটি অনুষ্ঠান থেকে এ ঘোষনা দেয়া হয়। মুলত টিকেট ঘিরে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম এর প্রশ্ন তুলে এমন ঘোষনা দেওয়া হয়েছে বলেন জানান তিনি। এর মধ্যে দিয়ে ক্রিকেট উম্মাদনার উত্তাল হাওয়া, সরকারের পালে ধরে রাখতে যে পারেনি শাসক দল অনুগত কর্তৃপক্ষ, তাই হয়ে উঠে স্পষ্ট।
তবে ঘটনা-রটনার নানা বাঁক গড়িয়ে বিপিএল মহাযজ্ঞ ম্লান হয়নি। উৎসব-উৎসাহ নিয়ে উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান স্মরনীয় করে রাখতে সবুজে সুভাষিত লাক্কাতুরা সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জড়ো হতে থাকে ক্রিকেট প্রেমিরা। এশিয়ার অন্যতম সুন্দর এ স্টেডিয়ামটি হয়ে উঠে প্রথমবারে মতো বিপিএল ইতিহাস। তাই সে মহেন্দ্রক্ষণে অংশিদার হতে দর্শকদের ছিল নানা রকম প্রস্তুতি। প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন এর পাশাপাশ জার্সি, ক্যাপ, পতাকা ছিল হাতে হাতে। সেই সাথে সমর্থিত দলের রং এ রঙ্গিন হওয়ার খায়েশ তো আছেই। টিভি ক্যামরোর নজরে আসতেও ছিল তাদের নানামুখী কসরৎ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে দর্শকদের ভীড়ও বেড়ে যায়। নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিপিএল শুরু ও দেশের ক্রিকেটের মেগা এই ইভেন্টকে সুরক্ষা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা গড়ে তোলে। একই সাথে সড়ক যোগাযোগে নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকটি সড়কে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রন আরোপ করে মেট্রোপলিটন পুলিশ। গ্রিন গ্যালারিসহ ১৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামে পর্যাপ্ত গোপন ক্যামেরাও বসানো হয়। স্টেডিয়াম, নগরীর প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সহ সুরমা নদীর উপর স্থাপিত ব্রিজগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। নগরীর যেসব স্থানে ক্রিকেট দলগুলো রয়েছে সেসব এলাকা থেকে স্টেডিয়ামমুখী সকল সড়কে যান চলাচল কিছুটা নিয়ন্ত্রণ সিদ্ধান্ত গ্রহন করে পুলিশ। এসব সড়ক এড়িয়ে চলার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেকারনে নিরাপত্তা ও শৃংখলার চাদরে যেন মোড়ানো ছিল সিলেট। নগরীর সড়ক ছিল সারাদিন ফাকা ফাকা, সকলের মুখে মুখে ছিল বিপিএল আর ক্রিকেট। দৃষ্টির শেষে সীমার ঠিকানায় বিপিএলের পঞ্চম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচ শুরুর পূর্বে উভয় দলের ক্রিকেটারদের সাথে পরিচিত হন বিসিবি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপন।
প্রত্যাশিত বিপিএল উৎসব উপলক্ষে নগরীর হোটেলগুলোতে কদর বেড়ে গেছে। দেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রিকেট প্রেমীরা এখন সিলেটে নোংগর তুলেছেন। বিপিএল জাগানিয়ের ইতিবাচক চাপ এখন সারা সিলেটে। সেকারনে ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি ভুমি সিলেট এখন ক্রিকেট উৎসবে, মাতোয়ারা।
এমন আয়োজন ক্রিলেটীয় লড়াইয়েও ম্লান হতে দেয়নি স্বাগতিক দল সিলেট সিক্সার্স। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৯ উইকেটে গুড়িয়েই শুরু হয়েছে সিলেটের নতুন বিপিএল যাত্রা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক দলের বোলারদের সামনে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয় সাকিব আল হাসানের দল। জবাবে ১৬.৫ ওভারে মাত্র এক উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নাসির হোসেনের সিলেট (১৩৭/১)।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button