নিজস্ব প্রতিরক্ষা জোট গঠন করছে ইইউ

EUমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় ন্যাটোর উপর আর নির্ভর না করে নিজস্ব প্রতিরক্ষা জোট সৃষ্টি করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ব্রেক্সিটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডিসেম্বর মাসেই যাত্রা শুরু করছে পেসকো। ন্যাটো এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। খবর ডয়চে ভেলের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব সদস্য দেশ সব ক্ষেত্রে বাড়তি সহযোগিতার পথে সাধারণত এগোয় না। শেঙেন থেকে শুরু করে অভিন্ন মুদ্রা ইউরো- বারবার এই বাস্তব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নতুন প্রতিরক্ষা জোটের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। আপাতত ২৩টি দেশ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাকে নতুন মাত্রা দিতে রাজি হয়েছে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা কাঠামো সৃষ্টি হবে। এ কাঠামোর পোশাকি নাম পার্মানেন্ট স্ট্রাকচার্ড কো-অপারেশন বা ‘পেসকো’। আগামী ডিসেম্বর মাসেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা।
আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল ও মাল্টা এ প্রতিরক্ষা জোটে যোগ দেবে কিনা, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। ব্রেক্সিট না ঘটলেও ব্রিটেন এমন জোটে অংশ নিত না, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ডেনমার্কও এ জোটের বাইরে থাকবে বলে ধরে নেয়া যায়। অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পেসকো’র আওতায় ৫০০ কোটি ইউরোর এক প্রতিরক্ষা তহবিল গঠন করা হবে। এছাড়াও আর্থিক সহযোগিতা ও প্রতিরক্ষা গবেষণার জন্যও আলাদা তহবিল থাকবে। সদস্য দেশগুলো তাদের জাতীয় পরিকল্পনা পেসকো’র কাছে পেশ করবে। ইইউ’র নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাঠামোয় দুর্বলতা কাটাতে সম্মিলিতভাবে কাজ করবে দেশগুলো।
ইইউ পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ইউরোপের নিজের পায়ে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তার মতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি আরও গুরুত্ব পাচ্ছে। ইউরোপের প্রতিবেশী অঞ্চলে সংকট দেখা দিলে ইইউ’কে প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে। বর্তমান অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে সামরিক জোট ন্যাটোর উপর নির্ভর করতে চাইছে না ইইউ দেশগুলো। তবে ন্যাটোর ২৮টি সদস্য দেশের মধ্যে ২২টি ইইউ সদস্য হওয়ায় পেসকো’কে ন্যাটোর প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সম্পূরক হিসেবে তুলে ধরছে ইউরোপীয় দেশগুলো।
ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এর ফলে ন্যাটোর মধ্যে ইউরোপীয় স্তম্ভ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল। তার মতে, পেসকো গঠন হলে ইউরোপে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। ফলে ন্যাটোর মধ্যে আরও ভালোভাবে দায়দায়িত্ব বণ্টন করা সম্ভব হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত দুই দেশ ফ্রান্স ও জার্মানির উদ্যোগেই অবশেষে পেসকো গঠন করা সম্ভব হয়েছে। সেই ১৯৫০-এর দশক থেকেই ব্রিটেন এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছিল। এবার ব্রেক্সিটের কারণে এ জোট সম্ভব হল।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button