দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’
পররাষ্ট্রনীতিতে ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ আনছে পৃথিবীর অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক ও সামরিক পরাশক্তি চীন। দেশটি বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপাল ও শ্রীলংকার সঙ্গে সুসম্পর্কিত তৈরি করে এ অঞ্চলের প্রভাব বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছে।
ফলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে ভারত যে ‘সিকিউরিটি জোন’ তৈরি করেছিল অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় জয়ন্ত ঘোষালের এক লেখায় এসব কথা তুলে ধরা হয়েছে।
এই সাংবাদিক, চীনের মোকাবিলায় জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও আমেরিকার সঙ্গে ভারতকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন।
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন ডোকলামের পর কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। চীন এখন তার পররাষ্ট্রনীতিতে নিঃশব্দ বিপ্লব আনছে।
চীন প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সামনে সাম্রাজ্য বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে ভারত যে ‘সিকিউরিটি জোন’ তৈরি করে তা আজ অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। মিয়ানমার, নেপাল, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাতে নিজের ‘নতুন পজিশন’ তৈরি করে ফেলেছে চীন।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, মূলত পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে আর্থিক সাহায্য বাড়িয়ে ভারতের সঙ্গে এসব দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে চীন।
দেশটি পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রসম্ভার ও ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা বাড়াতে চীনের সক্রিয় সাহায্য ভারতের সাবেক ‘সুপিরিয়রিটি’র কর্তৃত্বে ভাঙন এনেছে। ইসলামাবাদকে ‘লো ইন্টেনসিটি কনফ্লিক্টে’ যাওয়ার জন্য সাহায্য করছে চীন।
এ অবস্থায় ভারতের সামনে চারটি করণীয় আছে বলে প্রতিবেদনটিতে তুল ধরা হয়েছে। তা হল- চীনের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়টিকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা, দক্ষিণ চীন সাগর বিতর্ক সম্পর্কে ভারতের কঠোর মনোভাব প্রদর্শন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা এবং পাকিস্তান-চীন সম্পর্কের মোকাবেলায় জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও আমেরিকার সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
একসময় চীনের পররাষ্ট্রনীতি আক্রমণাত্মক না হয়ে নিরপেক্ষ ছিল। কিন্তু আর্থিক অগ্রগতি অর্জনের পর দেশটির কূটনীতি বদলাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।