ব্রিটিশ তরুণ সেনা এখন হিজাব পরা মুসলিম নারী
জন্মেছেন ছেলে হয়ে। জীবনের প্রায় ২৫ টি বছরও কাটিয়েছেন ছেলে পরিচয়ে। পুরুষ সেনা হিসেবে কাজ করেছেন ব্রিটিশ টেরিটোরিয়াল আর্মিতে। কিন্তু গত কয়েক বছরে আমূল বদলে গেছে ব্রিটিশ এই তরুণ সেনা সদস্য লরেন্সের জীবন। তিনি এখন আপাদমস্তক হিজাব পরিহিত মুসলিম নারী। পরিচয় লুচি ভ্যালেন্ডার নামে। মাসুদ নামে এক মুসলিম যুবকের দ্বিতীয় স্ত্রী হিশেবে সংসারও করছেন।
বর্তমানে ২৮ বছর বয়সী লুসি ভ্যালেন্ডারের ছোটবেলা ছিল অন্যসব ছেলে সহপাঠিদের মত। খেলাধুলা, পাঠশালা কিংবা আড্ডা সবকিছুতে তার প্রবেশ ছিল ছেলে হিসেবে। বয়স যখন ১৪ তখন তিনি অনুভব করেন; তার যে শারীরিক গঠন এবং অনুভুতি তা তার ছেলে পরিচয়ের সাথে যায় না। মনে হচ্ছিল মেয়ে হয়ে জন্মালেই তার জন্য ঠিক হত। তারপরও সবকিছুকে ছাপিয়ে তিনি তার পৌরষত্ব জাহির করার জন্য চেষ্টা করেন। অন্যান্য তরুণদের মত নিশি ক্লাবে যাওয়া, চুটিয়ে আড্ডা মারা এবং মদ্যপান সবকিছুই করেছেন। মেয়েদের সাথে মনের মিলও হয়েছিল বেশ কয়েকবার। কিন্তু দু এক মাস না যেতেই সে সম্পর্ক আর টেকেনি। সর্বশেষ নিজের পুরুষ পরিচয় ধরে রাখতে ২০১০ সালে যোগ দিলেন ব্রিটিশ টেরিটোরিয়াল আর্মিতে। কিন্তু মনের দিক থেকে তিনি তার পুরুষ পরিচয়কে আর মানতে পারলেন না। বছর খানেক পর সে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে তিনি তার লিঙ্গ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোন পরিবর্তনের ঔষধ সেবন করেন এবং ২০১১ সালে সার্জারির মাধ্যমে তার লিঙ্গ পরিবর্তন করা হয়। অনলাইনে জীবন সঙ্গী খুঁজতে গিয়ে পরিচয় হয় মুসলিম যুবক মাসুদের। তার কাছ থেকেই জানা হয় ইসলাম সম্পর্কে। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। মাসুদ লুচি কে তার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিবাহ করে। ব্রিটেনের বিভিন্ন গণমাধ্যম এই ঘটনাকে ব্রিটেনে প্রথম কোনো নজির বলে উল্লেখ করে। লুচি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, একজন নারী হিসেবে তিনি জীবনটাকে বেশ উপভোগ করছেন। আর ইসলাম ধর্মে তিনি জীবনের পরিপূর্ণ শান্তি খুজে পেয়েছেন। ইসলামিক পোশাকে মোড়া লুচি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। এখন আর নিশি ক্লাবে যান না, বাদ দিয়েছেন এ্যালকোহল সেবন।