ফের পর্দায় আসছেন নওমুসলিম ব্রিটিশ নারী মারিয়ম ফ্রাঙ্কোজ

maryamনতুন টিভি শো ‘দ্য ট্রুথ এবাউট মুসলিম ম্যারিজ’ বা মুসলিম বিবাহ সম্পর্ক সত্যতা’ নিয়ে ফের পর্দায় হাজির হচ্ছেন ইসলামে ধর্মান্তরিত ব্রিটিশ নারী মারিয়ম ফ্রাঙ্কোজ-সারাহ। কিন্তু ধর্মান্তরিত এই ব্রিটিশ নারী সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? আসুন তার সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই…
কে এই মরিয়াম ফ্রাঙ্কোজ-সারাহ?
ফ্রাঙ্কো-ব্রিটিশ লেখক মরিয়াম ফ্রাঙ্কোজ-সারাহ’র (৩৪) জন্ম ১৯৯২ সালে। তিনি ইসলাম, ফ্রান্স ও মধ্যপ্রাচ্যে সমস্যা সম্পর্কিত বিষয়ের একজন ব্রডকাস্টার এবং শিক্ষাবিদ।
তিনি বর্তমানে একজন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করছেন।
তিনি ‘নিউ স্টেটসম্যান’ অনলাইনের জন্য মাসিক কলাম লিখে থাকেন। এছাড়াও তিনি মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট আই’ এর একজন নিয়মিত লেখক।
তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য দিয়েছে। ২০১৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় ও লুথার কলেজে এবং ২০১৫ সালে কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দেন।
২০০৩ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট করার পর ২১ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তুরিত হন।
যে কারণে মারিয়ম ফ্রাঙ্কোজ-সারাহ ছিলেন একজন শিশু তারকা?
১৯৯০ এর দশকে মারিয়ম একজন শিশু অভিনেত্রী হিসাবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া বিখ্যাত ‘সেন্স অ্যান্ড সেন্সসিবিলিটি’ চলচ্চিত্রে তিনি মার্গারেট ড্যাশউড চরিত্রে এম্মা থম্পসন ও কেট উইনসলেটের পাশাপাশি অভিনয় করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছিলেন।
এরপর তিনি ১৯৯৭ সালে মুক্তিপাওয়া ‘পওজ’ চলচ্চিত্রে নাথান কভেলারি ও হিথ লেজারের সঙ্গে অভিনয় করে তারকা বনে যান।
এছাড়াও ২০০০ সালে মুক্তিপাওয়া ‘নিউ ইয়ার ডে’ চলচ্চিত্রে তিনি হিদার চরিত্রে অভিনয় করে ভক্তদের মন কাড়েন।
‘মুসলিম বিবাহ সম্পর্কে সত্যতা’ অনুষ্ঠানটি কি সম্পর্কে এবং কখন সম্প্রসারিত হবে?
‘মুসলিম বিবাহ সম্পর্কে সত্য’ নামের এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হবে।
এতে দেখানো হবে ব্রিটেনের মুসলিম নারীরা তাদের বিবাহ সম্পর্কে কিভাবে অজ্ঞাত থেকে যাচ্ছে।
এই ডকুমেন্টারিটিতে এমন নারীদের সাক্ষাত নেয়া হয়েছে, যাদের বিবাহ অন্যান্য দম্পতিদের মতো তাদের একই অধিকার এবং সুরক্ষার সামর্থ্য দেয় না।
হিজাব ছাড়তে না চাওয়ায় কুয়েতের স্কুলে চাকরি পেলেন না ব্রিটিশ নারী
হিজাব ছাড়তে না চাওয়ায় কুয়েতের একটি নার্সারি স্কুলের শিক্ষক হিসাবে বিবেচিত হননি ব্রিটিশ নারী ফৌজিয়া খাতুন। ইংরেজিমাধ্যম স্কুলটি চাকরি করতে হলে তাকে অবশ্যই হিজাব অপসারণ করতে হবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়ে দেয়।
কুয়েতের মতো পুরোপুরি একটি মুসলিম দেশের একটি স্কুলের এমন আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ এই নারী।
ফৌজিয়া খাতুনের (২৩) আশা ছিল উপসাগরীয় মুসলিম এই দেশটিতে শিক্ষক হিসেবে কাজ করার। এজন্য তিনি দেশটির একটি নার্সারি স্কুলের ইংরেজী শিক্ষক পদে আবেদন করেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের এই কথায় তিনি অত্যন্ত হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
স্কুলের এইচআর বিভাগ থেকে তাকে একটি ইমেল পাঠানো হয়েছে। এই ইমেলে বলা হয়, ‘এটি একটি ইংরেজি স্কুল। এ কারণে বাবা-মায়েরা তাদের শিশুদের জন্য হিজাব পরিহিত শিক্ষিকা চান না।’
এতে আরো বলা হয়, স্কুলটিতে চাকরি করতে চাইলে আপনাকে স্কুলে প্রাঙ্গনে মাথা হিজাব পরিধান করতে দেয়া হবে না এবং নিয়ে কোনো ধরণের নেগোশিয়েশনের অনুমোদন দেয়া হবে না।
‘ইংলিশ প্লে-গ্রুপ এডুকেশনাল’ প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই দাবি করে আসছে যে, হিজাব পরিহিত স্টাফদের গর্বের সঙ্গে তারা নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
স্কুলটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘ইংলিশ ন্যাশনাল কারিকুলাম অনুযায়ী হাই প্রোফাইল ইংরেজি বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা শিশুদের ইংরেজি শেখানো হয়।’
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ফৌজিয়া খাতুনের জন্ম ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের ব্র্যাডফোর্ডে। বর্তমানে তিনি একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, তাদের পাঠানো ইমেইলটি ছিল পুরোপুরি বৈষম্যমূলক।
তিনি বলেন, ‘ইমেলটি পড়ার পর আমি আমার নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। হিজাব ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বেড়িয়ে আসার জন্য বলাটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। এটি আমার ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না। হিজাব আমার জীবনের একটি অংশ।’
ফৌজিয়া বলেন, ‘আমি একজন স্বাভাবিক ব্রিটিশ মেয়ে এবং আমার হিজাব একই পরিচয়ের অংশ। তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে ব্রিটিশ বাবা-মা কিংবা ইংরেজী স্কুল হিজাব পরিধানের কারণে আমাকে খুব আক্রমণাত্মক করতে চাইবে না। আমি ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছি এবং আমি একজন ইংরেজ।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button