বড় ধরনের হোঁচট খেল ব্রেক্সিট সমঝোতা
চরমভাবে হোঁচট খেল ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) সমঝোতা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সোমবার ইইউ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বিচ্ছেদ কার্যকর করার বিষয়ে এক প্রকার সমঝোতা করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নর্দান আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) নেতা অ্যারলেন ফোস্টারের এক ফোনকলে ভেস্তে যায় সবকিছু।
স্বাধীন আয়ারল্যান্ড ইইউর সদস্য। আর নর্দান আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের অংশ। বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার পর এই দুই ভূখন্ডের সীমানা নিয়ে সম্ভাব্য সংকট এড়াতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে নর্দান আয়ারল্যান্ডকে বিশেষ মর্যাদা দিতে রাজি হন। যার ফলে যুক্তরাজ্যের অংশ হয়েও নর্দান আয়ারল্যান্ড ইইউ আইনের অধীনে থাকত। কিন্তু ডিইউপি নেতা অ্যারলেন আলোচনা চলা অবস্থায় টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে জানিয়ে দিয়েছেন, এমন চুক্তি তিনি সমর্থন করবেন না। ব্রেক্সিট কার্যকর করতে হলে সমগ্র যুক্তরাজ্যকেই বেরিয়ে আসতে হবে।
নর্দান আয়ারল্যান্ডের জন্য ভিন্ন কোনো ব্যবস্থা করা চলবে না। থেরেসা মের কনজারভেটিভ দলের যেসব এমপি ব্রেক্সিটপন্থি বলে পরিচিত, তারাও ডিইউপির এই হস্তক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। এমন এমপির সংখ্যা ৩০-এর মতো বলে ধারণা।
সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় মাত্র ১০ আসন দখলে থাকা ডিইউপির সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আছে থেরেসা মের সরকার। যে কারণে ডিইউপির এত দাপট।
সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও বিরোধীদের ঘায়েল করার লক্ষ্যে থেরেসা মে ২০১৬ সালে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ডিইউপির সঙ্গে চুক্তি করে সরকার গঠনে বাধ্য হন তিনি। এখন ডিইউপির হস্তক্ষেপ মধ্যবর্তী নির্বাচনের সেই ক্ষতই থেরেসার সামনে হাজির করছে। ডিইউপির চাওয়াকে সমীহ না করলে থেরেসা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। বিশ্লেষকেরা বলছেন, থেরেসা মের নেতৃত্ব কতটা ভঙ্গুর, তা খোলাসা হয়ে গেছে ডিইউপির হস্তক্ষেপের ঘটনায়।
তবে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে থেরেসা মে বলেছেন, কিছু বিষয়ে ভিন্নতা থাকলেও সফল সমাপ্তির বিষয়ে তিনি আশাবাদী। আর ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যে ক্লদ ইয়ঙ্কার বলেন, অপ্রত্যাশিতভাবে আলোচনা ভেঙে গেছে। তবে সময় খুবই সংক্ষিপ্ত হলেও তারা আরেক দফা আলোচনায় বসতে রাজি।