বিশ্বব্যাপী ইসলাম ভীতি ছড়ানোয় ওআইসির উদ্বেগ
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মহাসচিব একমালুদ্দিন ইহসানোগলু ইসলাম ও মুসলমানদের মর্যাদাকে হেয়প্রতিপন্ন করার হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বিশ্বব্যাপী এক ধরনের বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি ইসলামের সুমহান আদর্শে ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল সর্বত্র ইসলামফোবিয়া বা ইসলাম ভীতি ছড়ানোর অপপ্রয়াসে লিপ্ত।
তাঞ্জানিয়ার জাঞ্জিবারে অনুষ্ঠিত ‘‘ইসলামী সভ্যতা’’ শীর্ষক ৫ম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পেশকৃত এক বিবৃতিতে গত মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘আমি একান্তভাবে বিশ্বাস করি, ইসলাম এবং ইসলামী মূল্যাবোধ সম্পর্কে যথাযথ ধারণার সঠিক চিত্র তুলে ধরে এর বহুমাত্রিক প্রচারণার মাধ্যমে ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক অসহিষ্ণুতা রোধের এজেন্ডা বাস্তবায়ন হতে পারে। সামগ্রিক মানবিকতা আমাদের সাধারণ মূল্যবোধ সুরক্ষায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে।
সম্মেলনের মূল উপজীব্য হচ্ছে, পূর্ব আফ্রিকায় ইসলামী সভ্যতার বৈচিত্র্যকে উচ্চকিত করা এবং এ অঞ্চলের মানুষের সাথে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি বিষয়ে গবেষণা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়। আজ শুক্রবার সমাপ্য ওআইসির অন্তর্ভুক্ত ইস্তাম্বুলবেজড রিসার্চ সেন্টার ফর ইসলামিক হিস্টরি, আর্ট এন্ড কালচার (আইআরসিআইসিএ), ন্যাশনাল রেকর্ডস এন্ড আর্কাইভস অথরিটি অব ওমানের যৌথ উদ্যোগে জাঞ্জিবার ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন গণতান্ত্রিক জাঞ্জিবারের প্রেসিডেন্ট আলী মোহাম্মদ শেইন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওমানের তথ্যমন্ত্রী আব্দুল মোনেম বিন মানসুর আল হাসানী।
ইহসানোগলু বলেন, তাঞ্জানিয়া শুধুমাত্র ইসলামী সভ্যতা ধারণ ও বিকাশের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তই নয় বরং আন্তঃসাংস্কৃতিক সম্মিলন ও সহাবস্থানেরও এক জ্বলন্ত বাতিঘর, যা কিনা ইসলামের শাশ্বত ঐতিহ্য-সংস্কৃতির প্রকৃষ্ট প্রতিফলন। পবিত্র মক্কা থেকে আবিসিনিয়ায় মুসলিম ব্যবসায়ী ও ধর্মপ্রচারকদের হিজরতের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম পূর্ব আফ্রিকায় ইসলামের অনুপ্রবেশ ঘটে। কিছুদিন এখানে সীমাবদ্ধ থাকার পর ধীরে ধীরে আফ্রিকার বিস্তীর্ণ ভূভাগের সর্বত্রই ইসলামের প্রসার ঘটে।
হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীতে পূর্ব-পশ্চিম আফ্রিকার গোটা অঞ্চলে মুসলিম সুলতানী শাসকদের গৌরবময় অধিষ্ঠান ইতিহাসের প্রধান এবং স্মরণীয় অধ্যয় হিসেবে অনন্তকাল জাগরুক থাকবে। তখন গোটা অঞ্চলে ইসলামী শিক্ষা-সভ্যতা ও তাহজিব তামাদ্দুনের ঐতিহ্যিক প্রচার, প্রতিষ্ঠা এবং মুসলিম শাসকদের নিরহংকার জনবান্ধব অবদান ইতিহাসের সোনালী সোপান হিসেবে চির ভাস্বর হয়ে থাকবে।