ব্রেক্সিটে নাটকীয় অগ্রগতি
ব্রেক্সিট আলোচনার নাটকীয় অগ্রগতি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসার (ব্রেক্সিট) আনুষ্ঠানিকতা প্রশ্নে চলমান আলোচনা পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। প্রথম ধাপের খসড়া নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের জোটভুক্ত দল আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) আপত্তির মুখে পরবর্তী আলোচনা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সেই অচলাবস্থা কাটিয়ে শেষ মুহূর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরেছেন তেরেসা। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হওয়া উচিত বলে মনে করছে ইউরোপিয়ান কমিশন। শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার এ কথা বলেন।
তবে উভয়পক্ষের সামনে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। তিনি বলেন, ‘ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য আলোচনা ও ব্রেক্সিট বাস্তবায়নকাল সমঝোতা চুক্তির চেয়ে আরও কঠিন হবে। মনে রাখতে হবে সামনেই রয়েছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’
শুক্রবার ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী তেরেসার সঙ্গে বৈঠকের পর জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকার (খসড়া চুক্তিতে) সমর্থন দিয়েছে বলে আমাকে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। তার ভিত্তিতে আমার বিশ্বাস, এখন আমরা প্রয়োজনীয় গতিতে সামনে অগ্রসর হতে পারব। আজকের ফলাফল অবশ্যই সমঝোতা। যদিও যুক্তরাজ্য ও ইইউ উভয়ের জন্যই আলোচনা কঠিন ছিল।’ বিবিসি জানায়, ব্রেক্সিটের প্রথম ধাপের খসড়া প্রস্তাব নিয়ে তেরেসা সরকারের শরিক দল নর্দান আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি) জোরাল আপত্তি তোলায় সোমবার একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়নি। ব্রেক্সিটের পর নর্দান আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থা কি হবে এবং তা কিভাবে ‘নিয়ন্ত্রিত’ হবে তা নিয়ে মূল জটিলতা দেখা দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতভর এ বিষয় নিয়ে আলোচনার পর শুক্রবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস পৌঁছেছেন মে। সেখানে পৌঁছে তেরেসা বলেন, ‘কোনো কিছু নিয়ে ‘কঠোর মতবিরোধ নেই’ এবং শুক্রবার চুক্তি সম্পন্ন হবে। ইইউর নাগরিকরা আগের মতোই যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে পারবেন।’
এদিকে শুক্রবার ডিইউপির নেতা আরলেন ফস্টার বলেন, (খসড়া প্রস্তাবে) যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে তিনি ‘সন্তুষ্ট’। ইউরোপিয়ান কমিশনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলার অর্থ আগামী সপ্তাহে ইইউ নেতাদের সম্মেলনে খসড়া চুক্তিটি উপস্থাপন করা হবে। ওই সম্মেলনে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তেরেসা। দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা চলবে।