লন্ডনে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দূতাবাস নির্মাণ করছে যুক্তরাষ্ট্র
১০০ কোটি ডলার (প্রায় ৮০০০ কোটি টাকা) খরচ করে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দূতাবাসটি নির্মাণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের কেন্দ্রে মেফেয়ার এলাকায় টেমস নদীর তীরে এটা অবস্থিত। নকশাকাররা বলছেন, নতুন এই দূতাবাসটিতে স্থাপত্য শিল্পের নকশার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। একটা খোলামেলা পরিবেশে নির্মিত হলেও দূতাবাসটি যেকোনো হামলা থেকে নিজেই নিজেকে রক্ষা করবে। দুর্গের মতো শান্ত ও সৌম্য দেখতে চতুষ্কোণাকৃতির দূতাবাসটি একটি পার্কের কেন্দ্রে নির্মাণ করা হয়েছে। এটার কোনো সীমানা প্রাচীর নেই। চার বছরের নির্মাণ কাজ শেষে খুব শিগগিরই এটা উদ্বোধন করা হবে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, প্রাচীরের বিপরীতে এটার চারপাশে একটা পুকুর রয়েছে। পুকুরে রয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত ও গভীর পরিখা। দূতাবাসের ছাদে বসানো হয়েছে সৌর প্যানেল, যা এর চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। দূতাবাস ভবনে রয়েছে তুষারশুভ্র গ্লাসের তৈরি হাঁটার পথ, রয়েছে মার্কিন সংবিধানের বিভিন্ন উদ্ধৃতি। রয়েছে নতুন ধাঁচের ভাস্কর্য।
আরও রয়েছে একডজনের মতো বাগান যেটা আমেরিকার মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের শস্য-শ্যামল প্রকৃতির প্রতিনিধিত্ব করছে। এখানে রয়েছে একটি পানশালা, একটি ব্যায়ামাগার, একটি ডাকঘর এবং একটি অত্যাধুনিক মেরিন সেনা ব্যারাক। সিআইয়ের একটি কার্যলয় রয়েছে এখানে। দূতাবাসটির নকশা নিয়ে এর আগে সমালোচনা হলেও নির্মাণের পর ব্রিটেনের অনেক সংবাদমাধ্যমই এর ব্যাপক প্রশংসা করেছে।
লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোন তার সমালোচনায় বলেছিলেন, লন্ডন শহর আরও শ্বাসরুদ্ধকর কিছুর আশা করেছিল। দ্য গার্ডিয়ানের এক সাংবাদিক এক প্রতিবেদনে বলেছিলেন, দুই ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক ও বিচারক এর নকশা বাতিল করার চেষ্টা করেছিলেন। কারণ এটা দেখতে খুবই বিরক্তিকর। তবে ইভিনিং স্টানডার্ড দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ সজ্জাকে ‘চোখ ধাঁধানো’ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে ডেইলি মেইল বলেছে, এটার বাইরের দিকটা দেখতে ‘মোলায়েম’।
২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি এটা উদ্বোধন করা হবে। লন্ডন সফরে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এটা উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বন্ধু ব্রিটেনের নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট জনসনকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, আমরা তার আগমনের অপেক্ষায় আছি। তবে ট্রাম্প কখন আসবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তিনি খুবই ব্যস্ত একজন প্রেসিডেন্ট। তবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প লন্ডনে আসবেন বলে জল্পনা রয়েছে।