বিমান চালালো ৬ বছরের শিশু!

amerউত্তর আফ্রিকার মরক্কোয় বাড়ি আমেরের। বয়স মাত্র ৬ বছর। ভালো করে বুলি ফোটার পর থেকেই কম্পিউটারের পোকা আমের ঢুকে পড়ে ইউটিউবে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে উড়ে বেড়ানো বিমানগুলো তাকে টানে। ইউটিউব-এ বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানের টেকঅফ থেকে ল্যান্ডিংসহ সব ধরনের ভিডিও দেখা শুরু করে সে। এ মাসেরই গোড়ায় ইতিহাদ এয়ারওয়েজে বাবা-মায়ের সঙ্গে মারাকাস থেকে আবুধাবি আসছিল আমের।
মাঝ আকাশে পাইলটের সঙ্গে দেখা করতে চায় আমের। ৬ বছরের যাত্রীর ডাক শুনে একটু অবাকই হয়ে গিয়েছিলেন বিমানের ফার্স্ট অফিসার ক্যাপ্টেন সমীর ইয়াকলেফ। সটান এসে হাঁটু মুড়ে বসে পড়েন আমেরের সামনে। তার পর এতটা অবাক জীবনে আর কখনও হয়তো হননি তিনি।
বিমানের টেকঅফ থেকে ল্যান্ডিং— প্রতিটি ধাপই গড়গড় করে বলে যাচ্ছে ওইটুকু ছেলে! এবং প্রতিটি ধাপই নির্ভুল! এমনকী, আকাশে ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে বিমানকে কী ভাবে চালনা করতে হয়, কী কী পদক্ষেপ নিতে হয়, সে সবও আমেরের ঠোঁটস্থ।
হতবাক ক্যাপ্টেন সমীর আমেরের পরিবারের অনুমতি নিয়ে মোবাইলে আমেরের সেই বর্ণনার ছবি তুলতে শুরু করেন। তাকে নিয়ে গিয়ে বসান ককপিটেও। সেখানে বসে আমের বর্ণনা করে কী করে ইমারজেন্সি পরিস্থিতিতে বিমান সামলাতে হবে। তা-ও তুলে রাখেন মোবাইলে। সেই ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পরে তা নিয়ে শুরু হয় হইচই। মাত্র ৬ বছরের ছেলে কী করে এতটুকু বয়সে বিমান চালানোর মতো এত জটিল প্রযুক্তি রপ্ত করে ফেলল, তা নিয়ে হতবাক তামাম বিশ্ব। আমের এর আগে ককপিটে বসে বিমান চালিয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্নও কেউ কেউ করে ফেলেন।
ইতিহাদ এয়ারওয়েজের কর্তাব্যক্তিদেরও কানে যায় ঘটনাটি। চলতি সপ্তাহে আবুধাবিতে পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আমন্ত্রণ জানানো হয় আমেরকে। ইতিহাদের পাইলটেরা যে পোশাক ও টুপি পরেন, ৬ বছরের ছেলের মাপে সে রকম পোশাক ও টুপি তৈরি করা হয়। আমেরকে সেই পোশাক পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এয়ারবাস ৩৮০ বিমানের সিমুলেটারে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যে সিমুলেটর থাকে, তা কার্যত বিমানের মতোই। টেকঅফ থেকে ল্যান্ডিং, আকাশে বিভিন্ন পরিস্থিতি কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয় ককপিট সিমুলেটরে। সেখানে বসে পাইলটরা অনুশীলন করেন। জুনিয়র পাইলটরা প্রশিক্ষণ নেন। আর এয়ারবাস ৩৮০ এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিমান। তার চারটি ইঞ্জিন। অন্য বিমানের থেকেও জটিল তার ‘অপারেশন’। ইতিহাদ সূত্রে জানা গেছে, গোটা একটা দিন সেই সিমুলেটরে বসে নিখুঁত ভাবে সেই বিমান চালিয়ে গিয়েছেন আমের। ইতিহাদের ফ্লাইট অপারেশন-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন মাজেদ আল মারজুকি আমেরকে দেখে মুগ্ধ। জানিয়েছেন, ওইটুকু বাচ্চার খাতায়-কলমে এত জ্ঞান অবাক করে দেওয়ার মতো। তাঁর কথায়, ‘কী করে ইউটিউব দেখে ওইটুকু বাচ্চা ছেলে বিমান চালানো রপ্ত করে ফেলল, কিছুতেই আমার মাথায় ঢুকছে না।’ -আনন্দবাজার

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button