২০১৭ সালের আলোচিত প্রযুক্তি
জাফর ইকবাল: আর ক’দির পরেই ইতিহাস থেকে আরও একটি বছরের পরিসমাপ্তি ঘটবে। আগের বছরের ন্যায় বিদায়ী বছরে তথ্যপ্রযুক্তিতে নানা উত্থান-পতন হয়েছে। এবারের আলোচনায় বছরজুড়ে গুগল মাতালো যেসব ডিভাইস তা নিয়েই থাকছে বিস্তারিত। ২০১৭ সালের আলোচিত ভিডিও আর মিউজিক ভিডিওগুলোর শীর্ষ ১০-এর দুটি আলাদা তালিকা প্রকাশ করেছে বিনামূল্যের ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউব। এছাড়া বছরজুড়ে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি খাতের ভোক্তাপণ্যের মধ্যে গুগলে সবচেয়ে বেশি সার্চ করা পণ্যগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে গুগল। এক সময় মোবাইল ফোন বাজারে আধিপত্য বজায় রাখা নোকিয়া নামটি অ্যান্ড্রয়েড স্মাটফোন দিয়ে ২০১৭ সালে ফের আলোচনায় উঠে এসেছে। আর বছরের শেষের দিকে আলোচনায় ছিল অ্যাপলের আইফোন X এবং আইফোন ৮। পিছিয়ে ছিল না স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৮-ও। বছরজুড়ে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি খাতের ভোক্তাপণ্যের মধ্যে কোনগুলো নিয়ে গুগলে বেশি সার্চ করা হয়েছে? সেরা ১০-এর তালিকা নিচে দেয়া হলো।
১. আইফোন ৮- ১২ সেপ্টেম্বর নতুন অ্যাপল কার্যালয়ের স্টিভ জবস থিয়েটারে অ্যাপল ইভেন্টে আইফোন ৮ ও ৮ প্লাস উন্মোচন করা হয়। বাহ্যিক দিক থেকে দেখলে আইফোন ৭ ও ৭ প্লাস এর সঙ্গে খুব বেশি পার্থক্য নেই আইফোন ৮ ও ৮ প্লাস-এর। বাজারে আসার পর আইফোন ৮-এ ‘শব্দ সমস্যা’ দেখা দেয়। এই সমস্যার কারণে মাঝেমধ্যে ফোনে কথা বলার সময় ‘কচকচ’ শব্দ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে অবশ্য তা ঠিক করার জন্য অ্যাপল পদক্ষেপ নেয়।
২. আইফোন X- আইফোন ৮ উন্মোচনের পরপরই একই মঞ্চে আনা হয় আইফোন ঢ, এর উচ্চারণ ‘আইফোন টেন’ বলেও জানানো হয়। আইফোনের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আনা এই আইফোনে আনা হয় ‘ফেইস আইডি’ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় ব্যবহারকারী তার আইফোন ঢ-এর দিকে তাকালেই তার চেহারা শনাক্ত করে ডিভাইসটি আনলকড হয়ে যায়। কিন্তু এই ফেইস আইডি দেখাতে গিয়েই উন্মোচন মঞ্চেই দেখা যায় বিভ্রাট, পরে দেওয়া হয় এর ব্যাখ্যাও। বছরজুড়ে জমজ চেহারা শনাক্তকরণ, মানুষের মতো চেহারার মুখোশ শনাক্তকরণের মতো নানা বিষয় নিয়ে ফেইস আইডি ছিল আলোচনায়।
৩. নিনটেনডো সুইচ- চলতি বছর মার্চের শুরুতে সুইচ কনসোলটি উন্মোচনের পর থেকেই বিক্রির রেকর্ড গড়ে চলেছে গেইমিং প্রতিষ্ঠান নিনটেনডো। এর সঙ্গে ‘লিজেন্ড অফ জেলডা: ব্রিড অফ দ্য ওয়াইল্ড’ গেইমটি কনসোলটির জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজারে আসার এক মাসেরও কম সময়ে গেইমটির ২৮ লাখ কপি বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি।
৪. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৮- চলতি বছর মার্চে এই স্মার্টফোন উন্মোচন করে দক্ষিণ কোরীয় ইলেকট্রনিক জায়ান্ট স্যামসাং। এই স্মার্টফোনে রাখা হয়নি কোনো হোম বাটন, যোগ করা হয়েছে নতুন এক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট। ডিভাইসটি হাতে পাওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক গ্রাহক অভিযোগে জানান তাদের ডিভাইসের পর্দায় লাল আভা দেখা যাচ্ছে। পরে স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলা হয়, এটি হার্ডওয়্যারের কোনো ত্রুটি নয়। সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে এটি ঠিক করা সম্ভব।
৫. এক্সবক্স ওয়ান- চলতি বছর জুনে এক্সবক্স ওয়ান-এর নতুন সংস্করণ উন্মোচন করে মাইক্রোসফট। নতুন কনসোলটির নাম দেওয়া হয় এক্সবক্স ওয়ান এক্স।
৬. নোকিয়া ৩৩১০- ফেব্রুয়ারিতে নতুন রূপে উন্মোচিত হয় ২০০০ সালের সর্বাধিক বিক্রিত ফোন নোকিয়া ৩৩১০। নোকিয়া’র সঙ্গে চুক্তিতে এই ব্র্যান্ডনাম ব্যবহার করে ফোনটি তৈরি করেছে ফিনিশ প্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবাল। নতুন সংস্করণের এই নোকিয়া ৩৩১০ ফোনটি একটি ফিচার ফোন, যার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কথা বলা ও বার্তা আদান প্রদান। ৩৩১০ ফোনটিতে ২.৫জি সংযোগ ব্যবহার করা যায়। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে এস৩০+ অপারেটিং সিস্টেম।
৭. রেজর ফোন- গেইমিং প্রতিষ্ঠান রেজর নভেম্বরেই এই অ্যান্ড্রয়েডচালিত স্মার্টফোন বাজারে আনে। এই স্মার্টফোনটি মূলত গেইমারদের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়।
৮. অপ্পো এফ৫- ২০১৭ সালের অক্টোবরে অপ্পো এফ৫ স্মার্টফোন উন্মোচন করে স্মার্টফোন নির্মাতা চীনা প্রতিষ্ঠান অপ্পো। অ্যান্ড্রয়েড ৭.১ চালিত এই স্মার্টফোনে রয়েছে ছয় ইঞ্চির ১০৮০-বাই-২১৬০ পিক্সেলের ডিসপ্লে।
৯. ওয়ানপ্লাস ৫- চলতি বছর জুনে ওয়ানপ্লাস ৫ স্মার্টফোনটি উন্মোচন করা হয়। এ বছরেই নভেম্বরে এই স্মার্টফোনের নতুন সংস্করণ ৫টি আনা হয়।
১০. নোকিয়া ৬- মোবাইল ফোনে ‘নোকিয়া’ ব্র্যান্ডনাম ব্যবহারের স্বত্বাধিকার পাওয়ার পর বছরের শুরুতে নিজেদের প্রথম স্মার্টফোন নোকিয়া ৬ উন্মোচন করে এইচএমডি। নতুন এই স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়েছে ওয়েব জায়ান্ট গুগলের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম আর এর উৎপাদনকারী হচ্ছে তাইওয়ানভিত্তিক ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফক্সকন। শুরুতে শুধু চীনের বাজার লক্ষ্য করে বানানো হলেও পরে তা বিশ্ববাজারে ছাড়া হয়।
বছরজুড়ে ইউটিউবে শীর্ষে যারা: ২০১৭ সালের আলোচিত ভিডিও আর মিউজিক ভিডিওগুলোর শীর্ষ ১০-এর দুটি আলাদা তালিকা প্রকাশ করেছে বিনামূল্যের ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউব।
অ্যালফাবেট মালিকানাধীন গুগলের এই ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্মটিতে মিউজিক ভিডিওগুলোর মধ্যে সবার শীর্ষে জায়গা নিয়েছে ‘দেসপাসিতো’। শুধু এ বছরই নয় সর্বকালের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও’র তালিকাতেও এর অবস্থান সবার উপরে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিনোদনবিষয়ক মার্কিন সাপ্তাহিক ভেরাইটি’র প্রতিবেদনে।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি দেখা ভিডিও’র শীর্ষস্থান ছিল দক্ষিণ কোরীয় সঙ্গীতশিল্পী সাই-এর মিউজিক ভিডিও ‘গ্যাংনাম স্টাইল’। চলতি বছর জুলাইয়ে সাই-এর এই ভিডিও-কে সরিয়ে শীর্ষস্থান দখলে নেয় মার্কিন র্যাপার উইজ খলিফা-এর ‘সি ইউ অ্যাগেইন’। পরের মাসেই পুয়ের্তো রিকান সঙ্গীতশিল্পী লুইস ফনসি’র ‘দেসপাসিতো’ সবার উপরে উপরে চলে আসে। এক্ষেত্রে গানটির মূল সংস্করণের কথাই বলা হয়েছে, কানাডীয় শিল্পী জাস্টিব বিবারের সংস্করণটি নয়- বলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। বর্তমান হিসাবে ‘দেসপাসিতো’র মূল মিউজিক ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৪৪০ কোটি বারেরও বেশি। সবচেয়ে আলোচিত ভিডিওগুলোর মধ্যে শীর্ষ ১০টির মোট ভিউ সংখ্যা ৬৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি, দেখার সময়ে হিসাব করলে অংকটা চার কোটি ঘণ্টারও বেশি।
২০১৭ সালে ইউটিউব-এর শীর্ষ ১০ আলোচিত ভিডিও যথাক্রমে, থাই সঙ্গীত প্রতিযোগিতা দ্য মাস্ক সিঙ্গার-এর দ্বিতীয় আসরের ‘আনটিল উই উইল বিকাম ডাস্ট’। ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্প এড শিরান-এর গান ‘শেইপ অফ ইউ’। ক্রীড়া বিনোদন সেবাদাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান ডিউড পারফেক্ট-এর ‘পিং পং ট্রিক শটস ৩’। আমেরিকা’স গট ট্যালেন্ট ২০১৭ আসরের ১২ বছর বয়সী স্বরপ্রক্ষেপক ডারসি লিনে’র ‘গোল্ডেন বাজার’ পাওয়ার ভিডিও। স্বরপ্রক্ষেপক বা ভেনটিলোকুয়িস্ট হলেন বিশেষ এক দক্ষতার অভিকারী যারা এমন কৌশলে কথা বলেন যে, শুনলে তার স্বর তার মুখ থেকে নয় বরং ভিন্ন কোনো স্থান থেকে আসছে বলে মনে হয়। এড শিরান-এর ‘কারপুল কারাওকি’। মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী লেডি গাগা’র ‘ফুল পেপসি জিরো সুগার সুপার বোল লি হাফটাইম শো’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর অভিষেকের ভিডিওতে বিকৃত করা লিপ রিডিংয়ের ভিডিও ‘ইনঅগারেশন ডে’। ভিডিও নির্মাতা ও মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী বিল ওয়ার্টজ-এর ‘হিস্টোরি অফ দ্য এন্টায়ার ওয়ার্ল্ড, আই গেস’। অ্যানিমেটেড শর্ট ফিল্ম ‘ইন এ হার্টবিট’এবং বিবিসি নিউজ-এর সংবাদ সাক্ষাৎকারে বক্তার বাসায় শিশুদের ক্যামেরার ফ্রেমে চলে আসার ভাইরাল ভিডিও।
২০১৭ সালে ইউটিউব-এর শীর্ষ ১০ মিউজিক ভিডিও’র তালিকা হচ্ছে, দেসপাসিতো। শেইপ অফ ইউ। কলম্বিয়ান শিল্পী জে বালভিন আর ফরাসী শিল্পী উইলি উইলিয়াম-এর ‘মি জেনতে’ গানের অফিশিয়াল মিউজিক ভিডিও। কলম্বিয়ান শিল্পী মালুমা’র ‘ফেলিসেস লস ৪’ গানের অফিশিয়াল মিউজিক ভিডিও। মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী ব্রুনো মার্স-এর ‘দ্যাট’স হোয়াট আই লাইক’ গানের অফিশিয়াল মিউজিক ভিডিও। পুয়ের্তো রিকান পপতারকা’র ‘অ্যাহোরা ডাইস’ গানের অফিশিয়াল মিউজিক ভিডিও। পুয়ের্তো রিকান শিল্পী নিকি জ্যাম-এর ‘এল আমান্তে’ গানের অফিশিয়াল মিউজিক ভিডিও। মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী জেসন ডেরুলো-এর ‘সোয়ালা’ (অফিসিয়াল ভিডিও)। মার্কিন ডিজে ও সঙ্গীত প্রযোজক ডিজে খালেদ-এর ‘আই’এম দ্য ওয়ান’। স্প্যানিশ সঙ্গীতশিল্পী এনরিক ইগলেসিয়াস-এর ‘সুবেমে লা রেদিও’ (অফিশিয়াল ভিডিও)।
অ্যাপল মিউজিকে বছরজুড়ে সেরা গানের জায়গা নিয়েছে এড শিরান-এর ‘শেইপ অফ ইউ’। অ্যাপ স্টোর, অ্যাপল মিউজিক, আইটিউনস, আইবুকস আর অ্যাপল পডকাস্ট-এর মতো প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্লাটফর্ম জুড়ে ২০১৭ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ, সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, টিভি অনুষ্ঠান, বই আর পডকাস্ট-এর তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অ্যাপলের নজরে ২০১৭ সালে বিভিন্ন খাতে বছরসেরার জায়গা কারা দখলে নিয়েছে।
সঙ্গীত: অ্যাপল মিউজিকে ‘অ্যালবাম অফ দ্য ইয়ার’ হিসেবে শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে কানাডীয় র্যাপ সঙ্গীতশিল্পী ড্রেইক-এর অ্যালবাম ‘মোর লাইফ’। আর গানের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানটা দখলে নিয়েছে ব্রিটিশ সঙ্গীতশিল্পী এড শিরান-এর গান ‘শেইপ অফ ইউ’। যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৭ সালের শীর্ষ অ্যালবামগুলোর তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে ব্রিটিশ পপ তারকা টেইলর সুইফট-এর অ্যালবাম ‘রেপুটেশন’, যদিও অ্যালবামটি অল্প কিছুদিনই অ্যাপল মিউজিকে ছিল বলে অ্যাপলের সাইটে উল্লেখ করা হয়।
অ্যাপলের সাইটে বলা হয়, অ্যাপ স্টোরের সম্পাদকরা ২০১৭ সালের অ্যাপ সংস্কৃতিতে নতুন ধারা শনাক্ত করেছেন। এগুলো হচ্ছে অগমেন্টেড রিয়ালিটি বা এআরভিত্তিক অ্যাপ আর গেইম আসা, বাস্তব সময়ে প্রতিযোগিতামূলক গেইম, মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া অ্যাপ আর গল্প বলা আর পড়াকে রূপান্তরিত করছে এমন অ্যাপ আসা। অ্যাপলের অ্যাপ সম্পাদকদের চোখে ২০১৭ সালের সেরা আইফোন অ্যাপ হয়েছে সিপ্লটার ক্রিটারস। এই অ্যাপে আঙ্গুলের স্পর্শে স্ক্রিনে দেখানো জগতকে দুইভাগ করে ফেলা যায় আর পরে পাজল মিলিয়ে অ্যাপে দেখানো প্রাণিগুলোকে তাদের স্পেসশিপে ফিরে যেতে রাস্তা করে দিতে হয়। এ বছর আইপ্যাডের ক্ষেত্রে সেরা অ্যাপ হয়েছে ছবি সম্পাদনার অ্যাপ অ্যাফিনিটি ফোটো। আইপ্যাডে ২০১৭ সালের সেরা গেইমের জায়গা নিয়েছে পাজলভিত্তিক গেইম দ্য উইটনেস।
অ্যাপলের চোখে বছরের সেরা চলচ্চিত্র হয়েছে ওয়াল্ট ডিজনি অ্যানিমেশন স্টুডিও’র বানানো কাল্পনিক-রোমাঞ্চধর্মী কাহিনীর ৩ডি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘মোয়ানা’। এরপরে অবস্থান নিয়েছে ‘রোওগ ওয়ান: এ স্টার ওয়ার্স স্টোরি’ এবং ‘দ্য ওয়ান্ডার ওমেন’। ‘রোওগ ওয়ান: এ স্টার ওয়ার্স স্টোরি’ চলচ্চিত্রটি লুকাসফিল্ম-এর বানানো। দ্য ওয়ান্ডার ওমেন হচ্ছে ডিসি কমিকস-এর চরিত্র ওয়ান্ডার ওমেন-এর নামে বানানো সুপারহিরো মুভি। আইটিউনস টিভি-তে ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া টিভি অনুষ্ঠান ‘গেইম অফ থ্রোনস’। ছবি: অ্যাপল। এ বছরে আইটিউনস টিভি অনুষ্ঠানের তালিকায় শীর্ষে আছে ‘গেইম অফ থ্রোনস’ এবং ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’। অ্যাপল পডকাস্টস-এ বছর সেরা পডকাস্ট হিসেবে নির্বাচিত হিয়েছে ‘ফ্রেশ এয়ার’। এক্ষেত্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরানা ছিল প্রতিদিনের সংবাদ।
এ বছর আইবুকস-এর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় শীর্ষে ছিল দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেইল। বইয়ের ক্ষেত্রে বছর সেরা তালিকায় শীর্ষে আছে ‘দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেইল’, ‘বিগ লিটল লাইস’ আর ‘বিফোর উই অয়্যার ইওরস’। শিক্ষাখাতের কনটেন্ট সেবাদাতা অ্যাপলের প্লাটফর্ম আইটিউন্স ইউ-তে ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি আগ্রহে ছিল কম্পিউটার বিজ্ঞানবিষয়ক কোর্সগুলো। শীর্ষ তিনটি কোর্সই ছিল কোড শেখা আর সুইফট অ্যাপ নির্মাণভিত্তিক।
সেরা অ্যাপ কোনগুলো?: বছর জুড়ে ফেইসবুক, মেসেঞ্জার আর স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপগুলো আলোচনায় থাকলেও, অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের সেরা অ্যাপ তালিকায় এদের কেউই শীর্ষস্থান পায়নি। তাহলে ২০১৭ সালে অ্যাপ স্টোরে আধিপত্য ছিল কাদের? অ্যাপ স্টোরে বছরের সেরা অ্যাপগুলো নিয়ে অ্যাপলের তালিকায় সবার শীর্ষে ছিল বিটমোজি। এই অ্যাপ ব্যবহারকারীদের স্ন্যাপচ্যাটে টেক্সট মেসেজ পাঠানোর সময় নিজেদের তৈরি কার্টুন চরিত্র স্টিকার হিসেবে পাঠানোর সুযোগ দেয়। অ্যাপলের প্রকাশিত পুরো তালিকা- বিটমোজি, বিনামূল্যের ভিডিও স্ট্রিমিং সেবাদাতা ইউটিউব, যা প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন। ফেইসবুক মালিনাকাধীন ছবি শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রাম। অ্যালফাবেট অধীনস্থ দিকনির্দেশনা ও মানচিত্র সেবাদাতা অ্যাপ গুগল ম্যাপস। সঙ্গীত স্ট্রিমিং সেবাদাতা অ্যাপ স্পটিফাই মিউজিক। অ্যালফাবেট মালিকানাধীন গুগলের ইমেইল সেবাদাতা অ্যাপ জিমেইল। ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন-এর অ্যাপ। ই-কমার্স অ্যাপ উইশ। সঙ্গীত স্ট্রিমিং সেবাদাতা অ্যাপ সাউন্ডক্লাউড। জিপিএসভিত্তিক দিকনির্দেশনাদাতা অ্যাপ ওয়েইজ। স্ন্যাপ অধীনস্থ ছবি শেয়ারিং অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাট। ফেইসবুক অধীনস্থ মেসেজিং অ্যাপ মেসেঞ্জার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক-এর অ্যাপ। ভিডিও স্ট্রিমিং সেবাদাতা নেটফ্লিক্স। অ্যাপভিত্তিক যাত্রী সেবাদাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান উবার-এর অ্যাপ। সঙ্গীত স্ট্রিমিং সেবাদাতা অ্যাপ পান্ডোরা মিউজিক। ফেইসবুক মালিকানাধীন সংকেতায়িত মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার-এর অ্যাপ। অ্যালফাবেট মালিকানাধীন গুগলের ওয়েব ব্রাউজার গুগল ক্রোম অ্যাপ। অ্যাপভিত্তিক যাত্রী সেবাদাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান লিফট-এর অ্যাপ।