আওয়ামী লীগ ইসলামের খেদমতে নিবেদিত : প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সবসময় ইসলামের খেদমতে নিবেদিত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার ইসলামের প্রচার ও প্রসারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, খুব কষ্ট পাই, যখন দেখি ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এই ধর্মের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। আশা করি, এ তত্পরতার সঙ্গে জড়িতরা এ ধরনের অপরাধ করবেন না।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরার আশকোনায় হজক্যাম্পে চলতি বছরের হজ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্বোধনের পর আজ শনিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৫৮২ জন যাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হবে। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের হজ ফ্লাইট। হজযাত্রী পরিবহনে মোট ৯২টি বিশেষ ফ্লাইট চালাবে বিমান। এছাড়া ২২টি নিয়মিত ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করবে বিমান। বাকি অর্ধেক বহন করবে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স এবং নাস এয়ারওয়েজ। সৌদি আরব থেকে ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১৯ অক্টোবর থেকে। শেষ হবে ১৮ নভেম্বর। সৌদি আরবে যাওয়ার পর দেশে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এবার প্রত্যেক হজযাত্রীকে একটি করে সৌদি আরবের মোবাইল সিম কার্ড দেয়া হচ্ছে।
হজ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন প্রকৃত মুসলমান। তিনি তার সাড়ে তিন বছরের সরকারের আমলে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে অনেক অবদান রেখেছেন। আইন করে মদ ও জুয়া নিষিদ্ধ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে আরবি, বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পবিত্র কোরআনের প্রচার ও প্রসারের ব্যবস্থা করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে এবং বিদেশে বসবাসরত বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী কোরআন সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন এবং সহজেই কোরআনের সরল ও সঠিক তরজমা শুনতে, পড়তে ও বুঝতে পারছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এই ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে হবে। তিনি বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া শিক্ষা সম্পূর্ণ হতে পারে না। এ কারণে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি জেলায় জেলায় একটি করে মসজিদকে উন্নতমানের মসজিদ হিসেবে গড়ে তুলবে। পর্যায়ক্রমিকভাবে প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে উপজেলাভিত্তিক সমজিদ হবে। সব থেকে সুন্দর ও উন্নতমানের মসজিদ আমরা তৈরি করব।অথবা যে মসজিদ আছে, তাকে উন্নতমানের মসজিদ করা হবে।
তিনি বলেন, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় গত চার বছরে হজযাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মহাজোট সরকারের ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের পথে এক বিশাল সাফল্য।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আকামা পরিবর্তন ও অবৈধ বাংলাদেশীদের বৈধকরণে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
গত কয়েক বছর হজযাত্রীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়ে এলেও এবার কিছুটা কমে গেছে। গত বছর হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল এক লাখ নয় হাজার ৯৫২ জন। কিন্তু চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৮ হাজার ৯১১ জন হজে যাচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে সংস্কার কাজ চলায় যারা গত পাঁচ বছরে হজ করেছেন, তারা আর এ বছর হজে যেতে পারছেন না। এছাড়া সৌদি সরকার এবার বাংলাদেশের কোটা থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ ২০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। সব দেশের জন্যই এটা করা হয়েছে।
পরে প্রধানমন্ত্রী হজক্যাম্প পরিদর্শন এবং হজযাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খান এবং সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ আল-নাসের আবদুল্লাহ আল-বুশাইরী বক্তৃতা করেন।