বিশ্বে উৎপাদিত মোট খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশই অপচয় হচ্ছে
বিশ্বে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায় কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু থেমে নেই উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য অপচয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে বছরে অপচয় হচ্ছে উৎপাদিত খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশই। অপচয় হওয়া বিপুল পরিমাণ এই খাবারের এক-চতুর্থাংশ বাচানো গেলে ৮৭ কোটি মানুষের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।
বিশ্বে উৎপাদিত মোট খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশ কোনো না কোনোভাবে নষ্ট বা অপচয় হচ্ছে। অংকের হিসাবে এর পরিমাণ ১৩০ কোটি টন দাবি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার।
গবেষণা বলছে, উন্নত দেশগুলোতে বছরে মাথাপিঁছু খাবারের উৎপাদনের হার ৯’শ কেজি। এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে পশ্চিমাদেশে মাথাপিছু অপচয়ের হার ৯৫ থেকে ১১৫ কেজি। বিপণন পর্যায়ে পণ্যের মান বিবেচনা করতে নিয়েও নষ্ট হয় প্রচুর খাদ্য। বছরে শিল্পোন্নত দেশে ৬৮ হাজার কোটি, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে খাবার অপচয়ের বাজার মূল্য ৩১ হাজার কোটি ডলার।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার কর্মকর্তা রবার্ট ভ্যান অথারিভজক বলেন, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, মানুষের অভ্যাস ও বিভিন্ন কারণে মানুষের খাদ্যের অপচয় হয়। আর খাদ্যের অপচয় হলে তার উৎপাদনে ব্যবহৃত পানি, জমির শক্তি ও অর্থের অপচয় ঘটে। কৃষকসহ বেসরকারি পর্যায়ে সচেতন হলে প্রচুর পরিমাণ খাদ্য অপচয় রোধ করা সম্ভব।
উন্নয়নশীল দেশে জমি থেকে ফসর সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত পর্যায়ে ৪০ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয়। আর শিল্পোন্নত দেশে ৪০ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয় বিপণন ও ভোক্তা পর্যায়ে। ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পর্যায়ে নষ্ট হওয়া খাবার কৃষকের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বাড়ায় এবং সবশেষে ভোক্তা পর্যায়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা কর্মকর্তা ক্যামেলিয়া বুকাতরিউ বলেন, উন্নয়নশীল থেকে শুরু করে শিল্পোন্নত দেশে এ সমস্যা বিদ্যমান। যার প্রভাব সারা বিশ্ব জুড়ে। টেকসই উন্নয়নের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভারসাম্য বিবেচনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপচয় হওয়া খাবারের এক-চতুর্থাংশ বাচানো গেলে বিশ্বে অন্তত ৮৭ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটানো সম্ভব।