ডিবি লটারি নয়, মেধার ভিত্তিতে অভিবাসী নেবে যুক্তরাষ্ট্র
ডিবি লটারির বদলে শুধু মেধার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী নেবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি চাই আমেরিকাকে যারা আবারও শক্তিশালী ও মহান করতে পারবেন শুধু তারাই আমাদের দেশে আসবেন। লোকজন মেধার ভিত্তিতে এখানে আসবেন, আর লটারি নয়! সবার আগে আমেরিকা।
অন্য এক টুইটে ওবামা প্রশাসনের বহুল আলোচিত ড্রিমার কর্মসূচি বা ‘ডেফারড অ্যাকশন ফর চিলড্রেন অ্যারাইভাল’ (ডিএসিএ) নিয়ে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এটি ‘সম্ভবত মৃত’। কারণ ডেমোক্র্যাটরা আসলে এটা চায় না, তারা শুধু এ নিয়ে বকবক করতে চায়। তারা আমাদের সেনাবাহিনীদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য খাতে নিয়ে যেতে যায়।
এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নির্বাহী আদেশে ড্রিমার বিল বাতিলের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ডাকা বা ড্রিমার নামে পরিচিত এই কর্মসূচি বাতিলের নির্বাচনি অঙ্গীকারও ছিল তার। বিলটি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর বিষয়টির আইনি সমাধান খুঁজে বের করতে মার্কিন কংগ্রেসকে ছয় মাসের সময় বেঁধে দেন ট্রাম্প। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ ওই ছয় মাসের সময়সীমা উত্তীর্ণ হবে।
ড্রিমার বিল নিয়ে এমন ডামাডোলের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসনের হুমকিতে রয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত হাজার হাজার তরুণ অভিবাসী। ওই কর্মসূচির আওতায় যারা শৈশবে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত না করার পদক্ষেপ নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রায় সাত লাখ অভিবাসী শিশু অবস্থায় অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করে। ওবামা প্রশাসন তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু ওই কর্মসূচি বাতিলে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ফলে এই মানুষেরা এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
এই অভিবাসীদের বেশিরভাগই ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ভারত থেকে গিয়ে মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমানো এমন অভিবাসীর সংখ্যা অন্তত দুই হাজার ৬৪০ জন। আর এমন বাংলাদেশি ড্রিমারের সংখ্যা ৪৯০ জন। এই ড্রিমারেরা এখন বয়সে তরুণ। তাদের অনেকেই শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নেওয়া উচ্চশিক্ষিত মানুষ। মার্কিন অর্থনীতিতে সাধারণভাবে তাদের সম্পদ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
২০১৭ সালের নভেম্বরে আইবিএম, আমাজন, কোকাকোলা, ফেসবুকসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি জোট গঠন করে। এর নাম দেওয়া হয় ‘কোয়ালিশন ফর দ্য আমেরিকান ড্রিম’। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ড্রিমারদের ব্যাপারে একটি আইনি সমাধান এবং তাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করা। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এসব প্রচেষ্টা যদি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় তাহলে ড্রিমার কর্মসূচির আওতায় পাওয়া সুযোগ হারাব্নে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হাজার হাজার অভিবাসী।