বাংলাদেশে বৈধতা পেল অ্যাপ নির্ভর পরিবহনসেবা
অবশেষে বৈধতা পেল ঢাকায় স্মার্টফোন অ্যাপিস্নকেশন (অ্যাপ) নির্ভর ট্যাক্সি পরিবহনসেবা উবার-পাঠাও-এর মতো সার্ভিসগুলো। এজন্য রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা-২০১৭-এর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ।
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। পরে বিকেলে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
শফিউল আলম বলেন, ‘রাইড শেয়ারিং বিষয়টি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা হয়েছে। এই নীতিমালায় ৮টি অনুচ্ছেদ এবং ১১টি শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী নতুন গাড়ি রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে দেয়া যাবে না। তবে এক বছর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার পর গাড়ি অ্যাপসভিত্তিক বিভিন্ন সার্ভিসে দেয়া যাবে। আর সরকারের ট্যাক্সিক্যাব আইন-২০১০ অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে।’
সভা সূত্রে জানা যায়, আলোচনার এক পর্যায়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘যাত্রীরা যদি গাড়িতে উঠে মালিক ও চালক সম্পর্কে তথ্য জানতে চান, তাহলে অ্যাপসের মাধ্যমেই যাতে জানতে পারেন সেই ব্যবস্থা রাখতে পারলে ভালো হবে। অর্থাৎ অ্যাপসেই গাড়ির মালিক ও চালক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যদি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয় তাহলে আইসিটি মন্ত্রণালয় তাদের সহযোগিতা করবে।’
এসব আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোস্তফা জব্বারের প্রস্তাবে সায় দেন এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
নীতিমালায় যে ১১টি শর্ত দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো
১. কোম্পানিকে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) থেকে তালিকাভুক্তির সনদ নিতে হবে।
২. অ্যাপসের মালিককে টিআইএনধারী হতে হবে এবং নিয়মিত ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। আর কোম্পানি হলে জয়েন্ট স্টক থেকে কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে।
৩. নিজস্ব অফিস থাকতে হবে।
৪. ঢাকায় সেবা দেয়ার জন্য কমপক্ষে ১০০, চট্টগ্রামে ৫০টি এবং অন্য জেলা শহরে ২০টি গাড়ি থাকতে হবে।
৫. গাড়িগুলোর বিআরটিএ থেকে ট্যাক্স পরিশোধ ও রম্নট পারমিট আপডেট থাকতে হবে।
৬. মালিক ও চালকের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি থাকতে হবে।
৭. স্ট্যান্ডছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
৮. বিআরটিএর ওয়েবসাইটে এই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, মালিক ও চালকের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকতে হবে।
৯. তালিকাভুক্তির জন্য আবেদনের সঙ্গে এক লাখ টাকাসহ অন্যান্য ফি জমা দিতে হবে। তালিকাভুক্তির মেয়াদ হবে তিন বছর। পরে এটি নবায়ন করতে হবে। নবায়ন ফি হবে ১০ হাজার টাকা।
১০. মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে অনলাইনে অভিযোগ করা যাবে।
১১. শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তালিকাভুক্তির সনদ বাতিলসহ প্রচলিত আইনে মামলা করা যাবে।
এই শর্তগুলো মোটরসাইকেল ও মোটরযান উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।