আল্লামা ফুলতলীর ঈসালে সাওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত
গতকাল সোমবার মেঘাচ্ছন আকাশ সাথে কুয়াশামাখা দিন। শীতের তীব্রতার পাশাপাশি বালাই হাওর এলাকাজুড়ে ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। সকাল ১০ টা পর্যন্ত আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। সকাল থেকে দেখা যায় লাখো মুসল্লিদের পদভারে মুখরিত হতে লাগলো জকিগঞ্জের আকাশ-বাতাশ। দেশ-বিদেশ থেকে আগত অতিথিদের বয়ান শুনতে দিনের সাথে সাথে বাড়তে থাকে মুসল্লিদের জনস্রোত। লাখো মুসল্লিগনের উপস্থিতিতে বালাই হাওরের যেদিকে চোখ যায় শুধু মুসল্লিদের সারি। ফুলতলী ছাহেব (র.)-এর ১০তম ঈসালে সাওয়াবকে কেন্দ্র করে বালাই হাওরে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। জকিগঞ্জে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে সাওয়াব মাহফিল আজ মঙ্গলবার বাদ ফজর ফুলতলী ছাহেব বাড়ি সংলগ্ন বালাই হাওর মাঠে আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।
আল্লামা ফুলতলী (র.)-এর ১০তম বার্ষিকী ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে এবং পরদিনের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে মুসল্লিরা বালাই হাওর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিক আপসহ নানা ধরণের যানবাহন এবং পায়ে হেঁটে বালাই হাওরে এসে পৌঁছান। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বাড়তে থাকে শীত। এমন তীব্র শীত উপেক্ষা করে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে এবং ফজরের নামাজ ও আম বয়ান শুনতে মাহফিল স্থলে ছুটতে থাকে লাখো মুসল্লিদের কাফেলা। আম বয়ান ও আখেরি মোনাজাত শুরুর আগেই তীব্র শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে মুসল্লিদের পদভারে পূর্ণ হতে থাকে বালাই হাওরসহ আশপাশের এলাকা।
লাখো মুসল্লিদের উপস্থিতিতে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হলো আল্লামা ফুলতলী কিবলাহ (র.)-এর ১০ম বার্ষিকী ঈসালে সাওয়াব মাহফিল। সকাল সাড়ে ১০টায় এতিমখানার হাজারো এতিমদের নিয়ে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতি বছরের মতো সকাল থেকেই দেশ-বিদেশের মুরিদীন-মুহিব্বীন জড়ো হতে থাকেন। ধীরে ধীরে ফুলতলী ছাহেব বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, মাজারসহ আশপাশের এলাকাও লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।
খতমে কুরআন, খতমে বুখারী, খতমে খাজেগান, খতমে দালাইলুল খাইরাতের পাশাপাশি স্মৃতিচারণমূলক ও জীবনঘনিষ্ট আলোচনায় অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে অতিবাহিত হয় পুরো দিন। দেশ-বিদেশের অতিথিবৃন্দের হৃদয়গ্রাহী বক্তব্যে মুসল্লিদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। প্রিয় মুর্শিদের স্মৃতি আর বিরহ-ব্যথা অশ্রুসিক্ত করে তাদের। কান্নাজড়িত লাখো কন্ঠে উচ্চারিত হয় প্রিয় মনীষীর দরজাবুলন্দির জন্য আন্তরিক প্রার্থনা আর তাঁর শিক্ষা অনুসরণের প্রত্যয়দীপ্ত শ্লোগান।
মাহফিলে মুরিদীন-মুহিব্বীনের উদ্দেশ্যে তা’লীম-তরবিয়ত ও হৃদয়গ্রাহী বয়ান পেশ করেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর উত্তরসূরী আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা মানুষ, সৃষ্টিগতভাবে অত্যন্ত দূর্বল। এর তুলনায় আমাদের উপর শয়তানের প্রভাব অত্যন্ত শক্তিশালী। সে আমাদের আমলকে বিনষ্ট করার জন্য আমলের মধ্যে রিয়া বা লোক দেখানোর মনোভাব সৃষ্টি করে ফেলে। এ থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। দীন-দুঃখী মানুষের পাশে মাটির আসনে বসে তাদের খিদমত করতে হবে। সকল কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করতে হবে। অন্তরে হুব্বে রাসূল পয়দা করতে হবে। যার অন্তরে রাসূলপ্রেমের আগুন আছে দুনিয়ার কোনো আগুন তাকে পোড়াতে পারে না। নামায কায়েম, উত্তম চরিত্র শিক্ষাদান ও দ্বীনের সঠিক পথ-পদ্ধতি অনুসরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ অঙ্গনে নামায প্রতিষ্ঠা করবেন। উত্তম চরিত্র শিক্ষা দিবেন। নিজে নামায আদায়ের পাশাপাশি অন্যদের নামাযের প্রতি যতœবান করতে সচেষ্ট হবেন। তাহলেই ইকামতে সালাতের হক আদায় হবে। হযরত ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) আমাদের নিকট ইলমে কিরাতের আমানত রেখে গেছেন। এ আমানতের প্রতি খেয়াল রাখবেন। মনে রাখবেন ভিন্ন পদ্ধতিতে তিলাওয়াত করলে রাসূল (সা.) পর্যন্ত যে সনদ লাভ করেছেন তার সম্পর্ক বিনষ্ট হয়ে যাবে। যারা খানকা পরিচালনা করেন জেহরী যিকরের পাশাপাশি খফী যিকর করবেন। কেননা খফী যিকরের ক্ষেত্রে রিয়া থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক কুসংস্কার পরিলক্ষিত হয়। এসব থেকে বেঁচে থাকবেন। জিন বশ করার চেষ্টা করবেন না। যিকর মহাফিলে, কিরাত ও হাদীসের দরসে জিন শরীক হতে পারে কিন্তু তাদের বশ করবেন না। এসব আমাদের সিলসিলায় নেই। আমাদের কোনো বুযুর্গ কোনো বুযুর্গের মাজার সেজদা করেননি। এসব থেকে বিরত থাকবেন। কোনো বিষয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। সিলসিলার বুযুর্গানে কিরাম হক পন্থায় তাবিয দিবেন। যারা তাবিয দেন সতর্ক থাকবেন। কোনো কুফরিমূলক তাবিয দিবেন না। এতে হয়তো রোযগার করতে পারবেন কিন্তু সিলসিলার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বার বার মযলুম রোহিঙ্গাদের করূণ অবস্থা স্মরণ করে বলেন, মায়ানমারের কত নির্যাতিত মুসলমান চোখের সামনে আপনজনকে হারিয়েছে। তারা ঘর-বাড়ি ছেড়ে আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ সকল বিপন্ন মানুষের সেবায় এগিয়ে আসুন। তিনি তাওবা-বয়াত পরবর্তী ছাহেব কিবলাহ (র.)-এর নসীহত স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামায শান্তিমনে আদায় করবেন। দৈনিক কমপক্ষে দুইশত বার দুরূদ শরীফ এবং একশত বার ইস্তেগফার শরীফ পড়বেন। বড়দের সম্মান করবেন এবং ছোটদের দয়া করবেন। অন্যের ভালো দেখলে মন খুশি রাখবেন। হিংসা-বিদ্বেষের পরিবেশ থেকে দূরে থাকবেন। এতিম-অনাথ, অসহায়, পঙ্গু, নির্যাতিত মানুষের খিদমত করবেন। তিনি হাদীসে নববীরে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, দুটি বিষয় মানুষের হৃদয়কে নরম করে। এ দুটি হলো মিসকিনকে খাদ্য খাওয়ানে ও এতীমের মাথায় হাত বুলানো।
তিনি আরো বলেন, একদল লোক জিহাদের নামে মুসলমান হত্যা করে। এটা আসলো কোত্থেকে? এটা তো বাতিলপন্থী খারিজীদের ধারা। তিনি বলেন, যে সব মানুষ তাবিঈন, আইম্মায়ে কেরাম, আউলিয়ায়ে কেরামকে গালি-গালাজ করে, তাদের প্রতি বিষবাক্য প্রয়োগ করে এদের থেকে দূরে থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে যেন আমরা বিভ্রান্তির শিকার না হই। কিছু লোক তরীকা-তাসাউফের দাবী করে কিন্তু নামায পড়ে না। অথচ সকল ওলী নামাযের জন্য তাকীদ দিয়েছেন। চিশতিয়া, কাদরিয়া, নকশবন্দিয়া, মুজাদ্দিদিয়াসহ বিভিন্ন হক তরীকা আছে। এসব তরীকার যিকরের নিজস্ব রীতি-পদ্ধতি আছে। সিলসিলামতো যিকির করবেন। একে দুনিয়াবী স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন না। কেননা এরূপ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বাংলাদেশ আন্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী’র যৌথ পরিচালনায় মাহফিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাসূলে পাক (সা.)-এর অন্যতম বংশধর, মিশরের আল আযহার ইউনিভার্সিটির দাওয়া ফ্যাকাল্টির ডীন প্রফেসর ড. সায়্যিদ জামাল ফারুক জিবরীল মাহমুদ আল হাসানী, উপমহাদেশের প্রখ্যাত শায়খুল হাদীস আল্লামা হবিবুর রহমান, ভারতের উজানডিহির মাওলানা সায়্যিদ মোস্তাক আহমদ আল মাদানী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান, মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, মুফতী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, সোবহানীঘাট কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, মুফতী মাওলানা আবূ নছর জিহাদী, মহাখালী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিছ মাওলানা মাহবুবুর রহমান।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জ.উ.ম আব্দুল মুনঈম, সৎপুর কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা ছালিক আহমদ, মিশিগান আল ইসলাহ ইসলামিক সেন্টার, আমেরিকা-এর প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু নছর মুহাম্মদ কুতুবুজ্জামান তাপাদার, দারুল হাদীস লতিফিয়া নর্থওয়েস্ট-এর প্রিন্সিপাল মাওলানা সালমান আহমদ চৌধুরী, দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিছ মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ, দৈনিক শুভ প্রতিদিন’র সম্পাদক সরওয়ার হোসেন।
মাহফিলে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, সৎপুর কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা শফিকুর রহমান, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম সিদ্দিকী, শাহজালাল মসজিদ কিথলী, ইউকে’র ইমাম ও খতীব মাওলানা ফখরুল ইসলাম, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা এ.কে.এম মনোওর আলী, সোনাকান্দার পীর ছাহেবজাদা মাওলানা হোসাইন আহমদ, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে ও দারুল হাদীস লাতিফিয়া নর্থওয়েস্ট-এর অ্যাডভাইজর গোলাম মোস্তফা চৌধুরী এমবিই।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আলিমে দ্বীন মাওলানা আব্দুশ শাকুর চৌধুরী ফুলতলী, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারী হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী, কানাডা আওয়ামীলীগের সভাপতি সরওয়ার হোসেন, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রহীম, রাখালগন্জ সিনিয়র মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা হবিবুর রহমান, ইকড়ছই আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ছমির উদ্দিন, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নূরুল ইসলাম, ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা এখলাছুর রহমান, খানকায়ে লতিফিয়া ইউকে’র পরিচালক সূফী কারী আব্দুল মুন্তাকিম, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্সিপাল মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, অর্থ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবূ ছালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সৎপুর কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবূ জাফর মুহাম্মদ নুমান, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শামসুল ইসলাম, মাথিউউরা সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুল আলিম, স্কুল অব এক্সেলেন্স-এর প্রিন্সিপাল মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান, বুরাইয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, ইছামতি কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্যকল্যাণ পরিষদের সভাপতি শেখ মখন মিয়া, ভারতের রাজনীতিবিদ আজিজুর রহমান তালুকদার, মাওলানা শামছুদ্দীন নূরী, লতিফিয়া দারুল কিরাত সমিতি, উত্তর পূর্বাঞ্চল, আসাম’র সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার উদ্দিন, ঢাকা জেলা লতিফিয়া কারী সোসাইটির সভাপতি মাওলানা আবু সাদেক মুহাঃ ইকবাল খন্দকার, মাওলানা কাজী আলাউদ্দিন আহমদ, ভারতের বদরপুর (বুন্দাশিল) জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা মাহবুবুর রহমান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়ায্যিন মাওলানা হাবিবুর রহমান মিশকাত, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিয আলাউর রহমান টিপু, কুলাউড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুল হক খান শাহেদ প্রমুখ।
ফুলতলী কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা রায়হান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী জানান, প্রতিবছরের মতো এবারো সকলের আন্তরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতায় মাহফিল সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মাহফিলে আসা সকল মুসল্লিদের জন্য শিরনীর ব্যবস্থা করা হয়। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশাকে উপক্ষো করে প্রিয় মনীষীর ভালোবাসায় মুসল্লিয়ানরা জড়ো হয়েছেন। তবে বিগত বছরের চেয়ে এই বছর ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে আসা মুসল্লিয়ানদের উপস্থিতি অনেক বেশি বলে তিনি মনে করছেন।
হযরত শাহ্জালাল মুজাররদে ইয়ামনি মাদ্রাসা ও এতিমখানার সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা সৈয়দ দেলওয়ার হোসেন জানান, অন্যান্যবারের থেকে এইবছর মাহফিলে মুসল্লিদের উপস্থিতি অনেক বেশি। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশাকে হার মানিয়ে প্রিয় মুর্শিদের ভালোবাসায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বালাই হাওরপাণে ছুটে আসেন। মাহফিলে আসা মুসল্লিদের জন্য শিরনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জকিগঞ্জ-বিয়ানীবাজার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকার জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পাশাপাাশি মাহফিল আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে হাজারো স্বেচ্ছাসেবক, গ্রাম পুলিশ ও আনসার বিডিপির অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছ। মাহফিল মাঠে প্রবেশের পথে পথে গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসবকরা নিশ্চিন্দ্র নিরাপত্তা গড়ে তুলেন। এছাড়া ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে আগতদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয় এবং সার্বক্ষনিক নজরদারিতে রাখা হয়।