ব্রেক্সিট রূপান্তরকালীন চুক্তির শর্ত কঠোর করছে ইইউ
যুক্তরাজ্যের জন্য ব্র্রেক্সিটপরবর্তী রূপান্তর চুক্তির শর্ত কঠোর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জোটের দাবি, ইইউ ত্যাগের পর প্রায় দুবছর যুক্তরাজ্যকে ইমিগ্রেশন, বহিঃস্থ বাণিজ্য চুক্তি ও মত্স্য আহরণ অধিকারের কঠোর শর্ত মেনে চলতে হবে। এদিকে ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনার আগে বাণিজ্য বিষয়ে ইইউর অবস্থানের কারণে বিভক্ত হয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা। জোটের সদস্য দেশগুলো ইইউর ব্রেক্সিটবিষয়ক প্রধান আলোচক মিশেল বানিয়ের জন্য সংশোধিত ‘নির্দেশাবলি’ প্রস্তুত করেছে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের হাতে আসা একটি খসড়া অনুসারে, সদস্য দেশগুলোর বানিয়ের ওপর যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল বিভিন্ন বিষয়বস্তুসংক্রান্ত আরো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চাপিয়ে দেয়ায় তা ব্রেক্সিট সমঝোতাকে জটিল করে তুলছে। সংশোধিত নির্দেশনায় ২০২০ সালের শেষে ব্রেক্সিটের চূড়ান্ত দিনের আগ পর্যন্ত ব্রিটেনে আগত সব ইইউ নাগরিকের স্বাধীন চলাচলের অধিকার স¤প্রসারণ ও একটি বিশেষ মর্যাদা প্রদানের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তি থেকে প্রাপ্ত সুবিধা অব্যাহত রাখতে হলে ব্রিটিশ মন্ত্রীদের ব্রাসেলসের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে বলে শর্ত দেয়া হয়েছে। নতুবা চুক্তিটি ব্রেক্সিটের দিন থেকেই বাদ পড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে ইইউর সদস্য দেশগুলোর এ কঠোর নির্দেশনার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ব্রিটেনের ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। গত মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে ইইউ সম্মেলনে প্রস্থান চুক্তি নিশ্চিত করার পর এ মুহূর্তে একটি রূপান্তরকালীন চুক্তি চূড়ান্ত করা দেশটির সরকারের জন্য সবচেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যমান ইউরোপীয় আইনের আওতায় নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করার নিশ্চয়তা এবং আগামী বছরের মার্চে ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগের অন্তত ১২ মাস আগে এ নিশ্চয়তা পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা। উভয় পক্ষ একটি স্থিতিশীল রূপান্তরকালীন চুক্তি সম্পর্কে সম্মত হলেও, চুক্তির নিশ্চয়তা এখনো অনেক দূরেই রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যকে শর্ত প্রদানে ব্রাসেলসের প্রস্তুতি বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে আরো জটিল করে তুলতে পারে। মিশেল বানিয়ের প্রতি কঠোর শর্তের নির্দেশনার মধ্য দিয়ে ইইউর অবশিষ্ট ২৭ সদস্য দেশ আসন্ন সপ্তাহগুলোয় ব্রেক্সিট আলোচনায় ব্রাসেলসের অবস্থান আরো শক্তিশালী করছে। এদিকে ব্রাসেলসের এ অবস্থান নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায়। ইইউর সঙ্গে বাণিজ্যবিষয়ক আসন্ন আলোচনায় ব্রিটেন কী অবস্থান নেবে, সে নিয়ে মন্ত্রিসভা মতবিরোধে জড়িয়েছে।