নওয়াজ শরিফের উত্তরসূরি মেয়ে মারিয়াম
আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার ব্যাপারে মারিয়ম নিজে কোনো মন্তব্য না করলেও পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমগুলোর দাবি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মারিয়াম নওয়াজ আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন।
খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-নওয়াজ) বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে লাহোরে বাবার আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন মারিয়াম নওয়াজ। এ ছাড়া প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচনেও প্রচারাভিযানে অংশ নেবেন তিনি। আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে মরিয়ম নওয়াজ এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। তবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি।
মরিয়মের নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেয়ে মাঠে নেমে দলীয় রাজনীতির প্রতিই আগ্রহ ছিল বেশি। ২০১৬ সালের পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির পর থেকে মারিয়ামের নাম উঠতে থাকে। তখন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল, বাবা নওয়াজ শরিফের কালো টাকার মালিকানা মারিয়ামের। ৪৪ বছর বয়সী মরিয়ম ১৯৭৩ সালে লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৯ সাল থেকেই সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিলেন তিনি।
গত বছরের জুলাই মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। এরপর তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপরই রাজনীতিতে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠেন মারিয়াম। গত বছর উপনির্বাচনে মা বেগম কুলসুম নওয়াজের হয়ে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এবার দলের হয়ে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
২০১৩ সালের নির্বাচনে বাবা নওয়াজ শরিফের নির্বাচনী আসনে প্রচারাভিযানে অংশ নিয়েছিলেন মারিয়াম। এবার লাহোরের সেই আসন থেকেই নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে তার। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
অবশ্য সমালোচকরা বলছেন, রাজনৈতিক দলে কখনোই কোনো পদে ছিলেন না মারিয়াম। সুতরাং তার রাজনীতির কোনো বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। তাই মরিয়ম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হতে চাইলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার এই ঘাটতি বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নওয়াজ শরিফ ও তার ভাই শাহবাজ শরিফের পর পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) উত্তরসূরি হওয়ার পথে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন মারিয়াম। এ ক্ষেত্রে ঢের পিছিয়ে আছেন মারিয়ামের দুই ভাই- হাসান শরিফ ও হোসাইন শরিফ এবং তাদের চাচাতো ভাই হামজা শাহবাজ। এদিকে নওয়াজের শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তার স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ। অনেকে তাকেও উত্তরসূরি ভাবছে।
মারিয়াম তারা বাবার আসন থেকে নির্বাচনে লড়াই করবেন- এ খবরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেয়ার পর দলীয় রাজনীতিতে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভাই শাহবাজ শরিফকে বেছে নেন নওয়াজ শরীফ। মোট তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন নওয়াজ শরিফ। ইতিমধ্যে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে শাহবাজের নাম ঘোষণা করেছেন নওয়াজ।
প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পরও পিএমএল-এন এর প্রধান হিসেবে আছেন নওয়াজ শরিফ। শাহবাজকে দলীয় প্রধানের পদে নিয়োগ না করায় ভাইয়ে ভাইয়ে আস্থার ঘাটতি আছে বলে মনে করেছিলেন অনেকে। মারিয়মের নির্বাচনে অংশগ্রহণের খবরে সেই সম্পর্কে ফের ফাটল ধরে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে আসন্ন নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে শাহবাজ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় দুই ভাইয়ের সম্পর্কে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।