অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে বিরোধী দল জয়ী
অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে বিজয়ের পর লিবারেল ন্যাশনাল পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা টনি অ্যাবোট দেশটির ২৮তম প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় লেবার পার্টির ছয় বছরের শাসনের অবসান ঘটছে। দেশব্যাপী অর্ধেক ভোট গণনায় দেখা যায়, অ্যাবোটের জোট লেবার পার্টির থেকে গড়ে ৩ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতের মধ্যে ফারাক রয়েছে। দ্বীপরাজ্য তাসমানিয়ায় তারা লেবার পার্টির চেয়ে ১০ শতাংশ এবং ভিক্টোরিয়ায় ৪.৫ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে। অ্যাবোট গত চার বছর ধরে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। তিনি ২০১০ সালের বিগত নির্বাচনে লেবার পাটিকে সংখ্যালঘু সরকার গঠনে বাধ্য করেন। বিবিসি ও এএফপি। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় এ ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ৬ বছর সরকারি দলে থাকার পর এবার লেবার পার্টিকে মতা ছাড়তে হচ্ছে। এবারের সাধারণ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন প্রায় এক কোটি ৪৭ লাখ দেশের নাগরিক, যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তাদের বাধ্যতামূলক ভোট প্রদান করে। তিন মাস আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন কেভিন রাড। ২০১০ সালে তাকে সরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন জুলিয়া গিলার্ড। গত জুনে গিলার্ড লেবার পার্টি প্রধানের পদ থেকে অবসর নিলে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রাড। নির্বাচনের আগে প্রাথমিক জনমত জরিপের ফল থেকে জানা যায়, মতাসীন দলের চেয়ে বিরোধী দল ৫২ শতাংশ মানুষের সমর্থনে এগিয়ে রয়েছে। আর মতাসীন দলের পে জনসমর্থন ৪৭ শতাংশ। নির্বাচনে লিবারেল পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটকে বিজয়ী করার জন্য বিরোধী দলের নেতা টনি অ্যাবট মাঠেই রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে দেশটির অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও কার্বন ট্যাক্সের মতো বিষয়গুলোই ভোটারদের নতুন সরকার নির্ধারণে প্রভাবিত করেছে। উভয় দলের প্রচারাভিযানেই অর্থনীতির পরিবর্তনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। রাড তার নির্বাচনী প্রচারণায় লেবার পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় অর্থনৈতিক সাফল্যের ওপর জোর দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে তিনি বলেন, ‘চাকরি, চাকরি এবং আরো চাকরি, স্বাস্থ্য, হাসপাতাল ও ব্রডব্যান্ড, এবং জীবনধারণের খরচ কমাতে তার সরকার সহায়তা অব্যাহত রাখবে।’ এর আগে লেবার পার্টি গাড়ি শিল্পের উন্নয়নে ২০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। অ্যাবট তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে বলেন, ‘তিনি অপচয় বন্ধ করবেন এবং একবিংশ শতাব্দীর জন্য সুগম পথ তৈরি করবেন।’ তিনি জনগণকে লেবার পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘ভঙ্গুর ও ঝুলে যাওয়া সংসদ’ সম্পর্কে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘নতুন পথ সৃষ্টিতে একমাত্র উপায় হচ্ছে নতুন সরকার নির্বাচিত করা।’ নির্বাচনে অ্যাবটের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলোর মধ্যে ছিল করপোরেট দূষণ কর ও খনি থেকে অর্জিত লাভের ওপর কর বাতিল, কর্মীদের বেতন, মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটির পরিকল্পনাসহ অর্থনীতি জোরদার করা।