বন্যা কবলিত প্যারিস
অবিরাম বর্ষণে সিন নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয়াবহ বন্যার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ফ্রান্সের প্যারিস শহর। ইতিমধ্যে শহরের নদীর তীরবর্তী অনেক বাড়ির বেজমেন্ট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে সপ্তাহান্তে পানি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে কয়েকমিটার বাড়তে পারে। ওই অঞ্চলের অনেক রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লুভ্যর জাদুঘরের একাংশ। আশঙ্কা করা হচ্ছে নদীর পানি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে ৬ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। শহরের পরিচিত ক্রিমিয়ান সৈনিকের ভাস্কর্য জোভেকে ব্যবহার করা হচ্ছে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির নির্দেশক হিসেবে। গত শুক্রবার পর্যন্ত এর হাঁটুর ওপরে পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে ছিলো। পরবর্তী সপ্তাহ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শহরের ব্যস্ত কমিউটার ট্রেন সার্ভিস। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় নদীভ্রমণ স্পটসহ বেশ কিছু নৌচলাচল। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় লুভ্যর যাদুঘরের ইসলামিক আর্টস অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যার এই সময়ে শহরে ইঁদুরেরও আনাগোনা বেড়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে ইঁদুরের কারণে সংক্রমণের হার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে। প্যারিসের মেয়র অ্যানে হিদালগো বলেছেন, এটা পরিষ্কার যে আমাদের শহর আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াচ্ছে। পরবর্তী সপ্তাহ পর্যন্ত পানিবদ্ধতা থাকতে পারে বলে জানান তিনি। খবরে বলা হয়, প্যারিসের নদীতীরবর্তী বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ১৯১০ সালে একবার সিন নদীর পানি ভাস্কর্যটির ঘাড় পর্যন্ত পৌঁছেছিল, সেবার পুরো শহর প্রায় দুই মাস পানিবদ্ধ ছিল। বন্যার আশঙ্কায় শহরের ব্যস্ত কমিউটার ট্রেন সার্ভিস আরইআর-সি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ল্যুভ জাদুঘরের ইসলামিক আর্টসের লোয়ার লেভেলও। শহরের বিভিন্ন নর্দমায় ইঁদুরের উৎপাতও আগের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়। এবছর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মৌসুমে ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে ফ্রান্সের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। কয়েকদফা তাপদাহের পর এ বন্যাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করে শহরের মেয়র অ্যান হিডালগো বলেছেন, এ পরিবর্তন শহরটি মানিয়ে নিতে পারবে কিনা, তাই এখন দেখার বিষয়। ওই অঞ্চলের মাটির পানি শোষণক্ষমতা কম থাকায় উপচে পড়া পানি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত থেকে যেতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।