কিছু কিছু পুলিশ বন্ধু নয়

policeবলা হয়, পুলিশ জনগণের বন্ধু। কিন্তু কিছু কিছু পুলিশ কিন্তু বন্ধু নয়। তারা কখনো মানব সেবার মহান আদর্শকে ধারণ করেন না।
কিছুদিন আগেই ধানমণ্ডিতে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন গ্রিন লাইফ হাসপাতালের নার্স হেলেনা বেগম। ঘটনার আকষ্মিকতায় হেলেনা বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম মন্টু যখন হাহাকার করে ওঠেন তখন সেখানকার দায়িত্বরত পুলিশ যে ভূমিকায় আবির্ভূত হন তা ছিল একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও হতাশাজনক।
ছিনতাইকারীর হ্যাঁচকা টানে পড়ে গিয়ে তাদেরই গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে হেলেনা বেগমের (৩৫) যখন মর্মান্তিক মৃত্যু হয়, তখন হেলেনার স্বামীকে দায়িত্বরত ধানমন্ডি থানার এক এসআই নয়ন মন্টুকে ঘটনাটি ছিনতাইকারীরা ঘটিয়েছে বলতে বারণ করেন।তিনি মন্টু বলেন, ‘ছিনতাই বলার দরকার নেই, দুর্ঘটনা বলো’।
তবে তিনি পুলিশের এমন অনৈতিক অনুরোধ শোনেননি। ন্যায়বিচারের আশায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের কাছে সেদিন সাহস করে সত্য ঘটনা প্রকাশ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মন্টু বলেন, ‘পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার আগে ধানমন্ডি থানার এক এসআই আমাকে ঘটনা অন্যভাবে বলার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি আমাকে বলেন, “আমাদের আপনি ফাঁসালে ফাঁসাতে পারেন, বাঁচাতেও পারেন। আপনি স্যারদের বলবেন, পুলিশ ৫ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে আসে। তা না হলে আমাদের অসুবিধা হবে।” তিনি এটা দুর্ঘটনা বলতে বলেন। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, কেন আমি মিথ্যা বলবো? তখন তিনি চুপ হয়ে যান।’
ওই এসআইয়ের নাম জানতে চাইলে মন্টু বলেন, ‘তার নাম নয়ন। ঘটনার পর তার সঙ্গে কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছে। তবে স্ত্রী হত্যার সঠিক বিচারের জন্য আমি তার কথা শুনিনি। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিস্তারিত বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালেই গ্রিন লাইফ হাসপাতালে রমনা বিভাগের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন। তারা বিস্তারিত শোনেন। রমনার ডিসি আমার কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনেন। ঘটনার কতক্ষণ পর পুলিশ এসেছিল, তিনি তা জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাকে সব খুলে বলেছি। তখন আমার সামনেই ধানমন্ডি থানার পুলিশের সঙ্গে তিনি রাগারাগি করেন। তিনি তাদের কাছে জানতে চান, স্পটে যেতে কেন দেরি হলো? পুলিশ তখন তাকে ব্যাখ্যা দেয়।’
সেদিন ওই এলাকায় ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি টহল পুলিশের দল দায়িত্বে ছিল। ঘটনাস্থলে তারাই গিয়েছিলেন।
তবে মন্টুর অভিযোগ অস্বীকার করেন এসআই নয়ন কুমার চক্রবর্তী। তিনি প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমরা হেলেনা বেগমকে ভ্যানে তুলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মন্টু তাতে রাজি হননি। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলেন। আমি তাকে কোনও কিছু বলতে বলিনি। তিনি এসব মিথ্যা বলছেন। আমরা কেন তাকে শেখাতে যাবো?’
ওই ঘটনায় করা মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘থানা পুলিশের পাশাপাশি অনেকেই তদন্ত করছে। ডিবি কাজ করছে। তবে এখনও কোনও গ্রেফতার নেই। তদন্ত চলছে।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button