সৌদিতে কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে প্রবাসীদের
সৌদি আরবে ১২ ধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজে কেবল সে দেশটির বাসিন্দারাই নিয়োগ পাবেন—এমন ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি শ্রমমন্ত্রী আলি আল ঘাফিজ। এর ফলে দেশটিতে প্রবাসীদের জন্য শ্রমবাজার আরও সংকুচিত হবে।
সম্প্রতি সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত নতুন আইন জারি করে। ৭ মাস পর আরবি নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
সৌদি সরকারের এ ধরণের সিদ্ধান্তে দেশটিতে প্রবাসীদের শ্রমবাজার সংকুচিত হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন ও সৌদি নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশটিতে মোবাইল, বোরকার দোকান, রেন্টে কার, একাউন্টিং, নারীদের তৈরি পোশাকের দোকানের পর এবার নতুন করে ১২ ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবাসীদের কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়।
নতুন আইন অনুযায়ী, চশমা, ঘড়ি, বাড়ি বা গৃহ নির্মাণ সামগ্রী, গাড়ির যন্ত্রাংশ, গাড়ির শো রুম, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও বিদ্যুৎ চালিত সামগ্রী, হাসপাতালে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, চকলেট বা মিষ্টান্নের দোকান, রেডিমেড কাপড়ের দোকান, ক্রোকারিজ সামগ্রী, কার্পেট, ফার্নিচার বা ডেকোরেশনের দোকানে শুধুমাত্র সৌদি নারী-পুরুষ কাজ করতে পারবে। এতে দেশটিতে প্রবাসীদের কাজের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নতুন এ সিদ্ধান্তে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কেউ কেউ দেশে ফিরে আসার কথা ভাবছেন।
এক প্রবাসী বাংলাদেশী বলেন, ‘এই সেক্টরগুলোতে লাখ লাখ মানুষ কাজ করে। সবাই চাকরি হারাবে।’
অপর একজন বলেন, ‘সৌদি সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমাদের মতো মধ্য আয়ের বাংলাদেশি প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন বাধ্য হয়ে আমাদের দেশে ফেরত যেতে হবে।’
প্রায় তিন বছর ধরে চলা ভঙ্গুর অর্থনীতি, বার্ষিক বাজেট ঘাটতি, ইয়েমেনের সাথে যুদ্ধসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত সৌদি আরব। বর্তমান অবস্থা কাটিয়ে উঠতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সেক্টরে সৌদিকরণের অংশ হিসেবে বিদেশি শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিদেশি শ্রমিকদের আকামা নবায়ন ফি বাড়ানো, ফ্যামিলি ফিসহ বিভিন্ন ট্যাক্স যুক্ত করায় হতাশা ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
এ অবস্থায় সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা পুনর্বাসনের ব্যাপারে দ্রুত বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা চেয়েছেন।