সেনাবাহিনীর দখলে মালদ্বীপ পার্লামেন্ট
মালদ্বীপের সেনাবাহিনী দেশটির পার্লামেন্টের দখল নিয়েছে। গ্রেপ্তার করেছে বিরোধী দলের দুই এমপিকে। কারান্তরীন রাজনীতিকদের মুক্তি দিতে প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের অস্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজনীতিকে পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়া শুরু করে। তারই সূত্র ধরে দেশটির সেনাবাহিনী পার্লামেন্টের দখল নিয়েছে। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, বিরোধী দল পার্লামেন্টে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও শীর্ষ প্রসিকিউটরকে অপসারণের জন্য পিটিশন দাখিল করে পার্লামেন্টে। এর কিছুক্ষণ পরেই সেনারা পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে ফেলে। বিরোধী দলের অভিযোগ, নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ পাল্টে সুপ্রিম কোর্ট তাদের মুক্তির যে রায় দিয়েছে তা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রসিকিউটর। শীর্ষ আদালতের রায় নতুন করে দেশটিতে রাজনীতিতে নতুন করে ঝড় তুলেছে। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের জন্য এটা নতুন একটি ধাক্কা। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ অবশ্য তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। খবরে বলা হয়, আদালতের রায়ে পার্লামেন্টের ১২ সদস্য পুনর্বহাল হওয়ায় ৮৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পায় বিরোধী দল। তবে, ওই ১২ জনের দুজন কয়েক মাস পর দেশে ফিরলে তাদের বিমানবন্দরে আটক করা হয়। আব্দুল্লাহ সিনান ও ইলহাম আহমেদ নামের ওই দুই নেতাকে ঘুষের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ এক মুখপাত্র।
বিরোধী দলের সংসদীয় নেতা ইব্রাহীম মোহাম্মদ সোলিহ এক বিবৃতিতে তাদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান। অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ অনিল আজ টিভিতে প্রচারিত এক বক্তব্যে অভিযোগ করেন সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত করার চেষ্টা করছে। এরপরই তাকে অপসারণের জন্য পার্লামেন্টে বিল আনে বিরোধী দল। ওই বক্তব্যে অনিল বলেছিলেন, ‘আমি সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বলেছি, এমন অবৈধ আদেশ যেন তারা না মানেন।’ দেশটির সেনাপ্রধান আহমেদ শিয়াম বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী অনিলের পরামর্শ অনুসরণ করবে এবং দেশকে সংকটের দিকে ধাবিত হতে দেখার জন্য অপেক্ষা করবে না।’ ওদিকে, দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ টুইটারে দেয়া এক পোস্টে অনিলের বিবৃতিকে ‘অভ্যুত্থানের সমতুল্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্টের যে রায় নিয়ে এতো উত্তেজনা তা স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যরা। দেশগুলো মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।