ব্রিটিশ অনলাইন মিডিয়ার জনপ্রিয়তা
অস্তিত্ব রক্ষায় সংবাদপত্রের কৌশল পরিবর্তন
একবিংশ শতাব্দীর এই ডিজিটাল যুগে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক অভ্যাসও বদলে গেছে। বদলে গেছে সংবাদ পাঠের ধরণও। আগের মতো গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সংবাদপত্রের পাতা উল্টানো আর দেখা যায় না। কাগজের সংবাদপত্রের জায়গা কেড়ে নিয়েছে স্মার্ট ফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ।
সংবাদপত্রও একই সাথে ডিজিটাল হয়েছে। এখন অনলাইন নিউজপোর্টালের ক্রমান্বয়ে বিস্তারে হুমকির মুখে পড়েছে মূলধারার পত্রিকা থেকে শুরু করে রঙচঙ মাখানো ট্যাবলয়েডগুলোও। ওয়াশিংটন পোস্ট, শিকাগো ট্রিবিউন, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ অনেক অভিজাত ও প্রভাবশালী দৈনিক ছাপা সংস্করণ বন্ধ করে কেবল অনলাইনে আসার বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করে ব্রিটিশ পত্রিকাগুলো অস্তিত্ব রক্ষায় ‘সুদূরপ্রসারী কৌশল’ নিয়েছে।
বর্তমান বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষই ‘জেনারেশন জেড’র। এই জেনারেশন বা প্রজন্ম বলতে বোঝানো হয় ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ২০০০ দশকের শুরুর দিকে জন্ম নেওয়া মানুষদের। ইন্টারনেট আর অনলাইন সংবাদমাধ্যমের বিস্তার লাভের সময়ের এই প্রজন্মকে নিয়ে একটি কথা প্রচলিত আছে, তারা সংবাদপত্র পড়ে না। তাই যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্রগুলো তাদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় ‘জেনারেশন জেড’ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে অভিনব সব পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
জাপানি মালিকানার ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, আগে কেবল ব্রিটেনের ১৬-১৯ বছর বয়সী পাঠকরা বিনামূল্যে তাদের ওয়েবসাইট সাবস্ক্রিপশন করতে পারলেও এখন এ সুবিধা গোটা বিশ্বের টিনেজারদের জন্যই করে দেওয়া হয়েছে।
ডেইলি মিরর, সানডে মিরর, সানডে পিপল, সানডে মেইলসহ প্রায় আড়াইশ’ সংবাদমাধ্যমের প্রকাশক কোম্পানি ট্রিনিটি মিররের মার্কেটিং ডিরেক্টর জোয়ে হ্যারিস এ বিষয়ে বলেন, ‘বয়স্কদের চেয়ে তারুণ্যই আমাদের নিউজ ব্র্যান্ডকে এগিয়ে নিচ্ছে।’
আরেক দৈনিক দ্য সান যুব পাঠকদের মনোযোগ টানতে চাইছে শোবিজ জগতের সংবাদ এবং মোবাইল ভিডিও আপ করার মাধ্যমে। তাদের ওয়েবসাইটের ৫১ শতাংশ পাঠক এখন নারী এবং ৪২ শতাংশেরই বয়স ১৫ থেকে ৩৪ বছর। দ্য টাইমসও ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী পাঠকদের আকৃষ্ট করতে এমন নানা উদ্যোগ নিয়েছে, যেটা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
সববয়সী পাঠক থাকলেও ১৮-২৪ বছর বয়সী পাঠকদের টানার এই প্রতিযোগিতায় উদ্যোগী দেখা যাচ্ছে দ্য টেলিগ্রাফকেও। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারসহ যুব পাঠকদের টানতে এতসব উদ্যোগের মধ্যেও সম্প্রতি জার্মানির এলএমইউ মিউনিখের জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনলাইন ও ছাপা সংস্করণ একইসঙ্গে চালিয়ে যাওয়া পত্রিকাগুলোর পথচলা দ্বিধাগ্রস্তই বলা চলে।