খালেদা জিয়ার মামলার রায়, জনমনে চাপা উত্তেজনা
মোহাম্মদ জাফর ইকবাল: তারিখ অপরিবর্তিত থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত-সমালোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রায়কে কেন্দ্র করে নতুন মোড় নিতে পারে দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। পাল্টে যেতে পারে বর্তমান দৃশ্যপট। সরকারি দল এবং বিরোধী দলের বক্তব্যে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। জনমনে তৈরি হয়েছে চাপা উত্তেজনা। খালেদা জিয়ার মামলার পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই। গোটা রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণ চলছে। মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হবে কি-না, সাজা হলে কী হবে, না হলে কী হবে, নিম্ন আদালতে সাজা হলেই খালেদা জিয়া নির্বাচনে অযোগ্য হবেন কি না, সাজা হলে উচ্চ আদালতে আপিল করার পর কী হবে, নিম্ন আদালতের রায় উচ্চ আদালত স্থগিত করলে বা না করলে কী হবে, স্থগিত না হয়ে উচ্চ আদালতে শুধু বিচারাধীন থাকলে কী হবে বিএনপিতে ভাঙন হবে কি, বিএনপি ছাড়াই কি আবারো একতরফা নির্বাচন হবে? -এ রকম খুঁটিনাটি হিসাব-নিকাশ চলছে রাজনীতির অলিগলিতে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের রায় নিয়ে দেশবাসী আছেন আতঙ্কে। আছে উৎকণ্ঠাও। কী রায় হবে ৮ ফেব্রুয়ারি? রায় বিএনপির বিপক্ষে গেলে কী কর্মসূচি আসতে পারে? সরকার বিরোধী দলকে দমন করতে কী পদক্ষেপ নেবে? পুলিশ কি আবারও দেশব্যাপী ধরপাকড় শুরু করবে? বিএনপি-জামায়াত সন্দেহে সাধারণ মানুষকেও হয়রানিতে পড়তে হবে নতুন করে? আবারও কি গুম-নিখোঁজ বেড়ে যাবে দেশজুড়ে? এমন নানা প্রশ্ন আর পাল্টা প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। যদিও এরই মধ্যে দেশব্যাপী গণগ্রেফতার চলছে। বিএনপির বেশকয়েকজন শীর্ষ নেতাসহ সাত শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাসায় বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক লুট, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, নতুন আইজিপি, প্রধান বিচারপতি। সহায়ক সরকার নাকি শেখ হাসিনার অধীনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু এ সব ছাপিয়ে এখন আলোচনা একটাই, খালেদা জিয়ার মামলার রায়।
খালেদা জিয়া দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। দুইবার বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন সংসদে। ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনের লড়াইয়ে হারের নজির নেই তার জীবনে। দেশের শীর্ষ দুই রাজনৈতিক শিবিরের একটির প্রধান খালেদা জিয়া। সবসময় আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এসেছেন তিনি। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার মানসিকতা যে তার নেই এটাও প্রমাণ করেছেন বারবার। সর্বোপরি খালেদা জিয়া একজন ৭৩ বছর বয়স্ক নারী। তারপরও কোনো সৌজন্য আচরণ পাচ্ছেন না তিনি। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের অভিযোগ, আদালত প্রাঙ্গণে মানসম্মত দূরে থাক, মহিলাদের জন্য সাধারণ মানের কোনো ‘ওয়াশ রুমের’ ব্যবস্থাও নেই। কিন্তু ৭৩ বছর বয়স্ক দেশের একজন নারী সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সপ্তাহে তিনদিন (১৬, ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি) একটি অস্থায়ী আদালতে পূর্ণ কার্যদিবস হাজির থাকতে হয়েছে। মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনও আদালতে কেটেছে খালেদা জিয়ার। পুত্র কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীর দিনও তাকে থাকতে হয়েছে আদালতে। বিএনপির দাবি, মূলত খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই সরকার ভিত্তিহীন মামলায় তাকে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে দোষী প্রমাণের জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন নিজেও সে আশঙ্কার কথা আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনকালে তুলে ধরেছেন। বাস্তব অবস্থাদৃষ্টেও তাই মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
সূত্র বলছে, বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের দৃষ্টিও এখন চেয়ারপার্সনের মামলার রায়ের দিকে। তারা বলছেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর কোনো চেষ্টা হলে দেশ অচল করে দেয়া হবে। একই কথা বলছেন কেন্দ্রীয় নেতারাও। সেই সাথে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতেও বলেছেন দলের মহাসচিব। আর আওয়ামী লীগ বলছে, যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত আছে। এতে গোটা রাজনৈতিক অঙ্গনজুড়ে এখন টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট হতে চলেছে। এ মামলা ঘিরে সরকার ও বিরোধী শিবিরে জোর প্রস্তুতি চলছে। তবে সরকারের সময় ফুরিয়ে যাওয়ায় বিরোধী শিবিরে সাহস ও শক্তি বাড়ছে। সময় যত গড়াবে সরকারের অবস্থান ততই দুর্বল হবে। মামলার রায় ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সবশেষ ২৭ জানুয়ারি রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। এর আগে ২০ জানুয়ারি আইনজীবীদের সঙ্গে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দীর্ঘসময় কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
এদিকে, সরকারের মন্ত্রীরা আদালতে বিচারধীন মামলার রায় নিয়ে আগাম কথা বলায় পরিস্থিতি ভিন্ন রূপ নিচ্ছে। ‘১৫ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে’, ‘একদিনের জন্য হলেও খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে’, ‘নির্বাচন বন্ধের চেষ্টা হলে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসবে’ বা ‘বাতাসে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের গন্ধ’ পাওয়ার কথা বলছেন তারা। এতে রাজনৈতিক মাঠে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়। এরই মধ্যে মামলার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে রায় ঘোষণার দিন নির্ধারিত হওয়ায় মন্ত্রীদের বক্তব্যের সঙ্গে একটা মিল খুঁজে পাচ্ছে বিএনপি। তাই বিএনপি নেতারাও ধরেই নিয়েছেন যে, রায়ে খালেদা জিয়া দ-িত হতে যাচ্ছেন। বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ‘অন্তঃসারশূন্য’ এই মামলাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য আর মামলার গতিবিধিতে বিএনপি মনে করছে, সরকার- খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠাতে চায়। এ জন্য মামলার কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে আসছে ক্ষমতাসীন দল। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও সে কথা আদালতে মামলা চলাকালে একাধিকবার বলেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে, এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। রায়ের আগে ও পরে কী ঘটতে যাচ্ছে- সেটা অজানা থাকলেও সরকারী দলের হুমকিতেই জনমনে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেই দিয়েছেন, সরকারের হঠকারি সিদ্ধান্তে তার দলের নেতাকর্মীরা পা দেবেন না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন।
মামলার শুনানিতে খালেদা জিয়ার যাবজ্জীবন সাজা চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। ন্যায়বিচার পেলে তিনি অভিযোগ থেকে খালাস পাবেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ কোনো অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। প্রসিকিউশনের কোনো এভিডেন্সেই মামলাটি প্রমাণিত হয়নি। সর্বোপরি মামলায় খালেদা জিয়ার ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হয়নি। তারা আশা করছেন- আদালত সাক্ষ্য, কাগজপত্র, তথ্য-প্রমাণ বিবেচনায় নিলে এ মামলায় খালেদা জিয়া বেকসুর খালাস পাবেন। বিএনপির আইনজীবীরা জানান, রায় ঘোষণায় সাজা হলেও তাৎক্ষণিক উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করার পরিকল্পনা অনেক আগেই নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে যাতে নিম্ন আদালতে সাজা হলেও আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আইনগত কোনো বাধা না থাকে।
সূত্র মতে, রায়ে সাজা হলে কৌশল কী হবে- তা এখনও চূড়ান্ত করেনি বিএনপি। তবে আগে-ভাগে নেয়া পরিকল্পনা ছাড়াও নতুন নতুন কৌশল বের করতে আলোচনা করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। এ নিয়ে চূড়ান্ত কৌশল নির্ধারণ করতে দলের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন খালেদা জিয়া। ২৭ জানুয়ারি রাতে চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে- তা স্পষ্ট করে নেতারা না বললেও ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া জেলে গেলে দল কীভাবে চলবে, কর্মসূচি কী হবে, আইনগত বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে- এসব আলোচনা হয়েছে। এমন পরিস্থিতি হলে রায়ের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে আলাপ করে স্থায়ী কমিটিকে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য চেয়ারপার্সন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। আর, ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা নাও হতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপির কেউ কেউ। সে ক্ষেত্রে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হতে পারে। সেটি হলেও খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ারই যে একটি লক্ষণ তা আরো পরিষ্কার হবে এবং তাও ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ৮ তারিখের আগে কিছুটা ধোঁয়াসা থেকেই যাচ্ছে।
বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বিগত সময়ে নানা ইস্যুতে মাঠে জোরালো অবস্থান না দেখিয়ে আমরা শক্তি সঞ্চয় করেছি। ম্যাডামের সাজা হলে হুট করে শক্তি প্রয়োগ করা হবে কিনা এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রায় ১১ মাস বাকি। তাই বুঝেশুনে পা ফেলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। অতীতের মতো ভুল করে আর প্রায়শ্চিত্ত করতে রাজি নন তারা। তাই বলে খালেদা জিয়ার সাজা হলে নেতা-কর্মীরা ঘরেও বসে থাকবে না বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা পরিষ্কার যে, সরকার আইনি জটিলতার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়। দলের চেয়ারপার্সনকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে এ মামলাকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগাতে পারে সরকার। সে ক্ষেত্রে শুধু আইনি লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করা সম্ভব হবে না। আবার রাজনীতির বৃহত্তর পরিসরে আলোচনার প্রেক্ষিতে নির্বাচনের সুযোগ পেলেও রায়কে হাতিয়ার করে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালাবে সরকার।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, ‘নিম্ন আদালতে সাজা হলেই কেউ নির্বাচন করতে পারবেন কি-না, বিষয়টি আসলে আমাদের আইনে স্পষ্ট নয়। নিম্ন আদালতে খালেদা জিয়ার সাজা হলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন, এটা স্বাভাবিক। উচ্চ আদালত যদি নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ না দেয় এবং আপিল বিচারাধীন থাকলে আইনের স্বাভাবিক হিসাব বলে-কারাগারে থেকেই তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। আর উচ্চ আদালত যদি তার আপিল খারিজ করেন তাহলে অন্য কথা। তাছাড়া উচ্চ আদালতের ইদানীং কিছু রায়ে বিষয়গুলো নিয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে। যেমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সাজা হয়েছিল। হাইকোর্ট তার আপিল খারিজ করে দেয়, এরপর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ খারিজ করে নতুন করে শুনানির নির্দেশ দেয়। এর অর্থ হচ্ছে, মামলাটি এখনো হাইকোর্টে বিচারাধীন। কিন্তু মায়ার মন্ত্রিত্ব কিংবা সংসদ সদস্য পদ তো যায়নি। আপিল করা অবস্থায় তিনি সংসদ সদস্য পদে বহাল আছেন। কাজেই এখানে মন্ত্রী মায়ার বিষয়টি একটি উদাহরণ হয়ে থাকছে। এই উদাহরণ ধরে এটা বলা যায়, উচ্চ আদালতে আপিল থাকলে কেউ নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার কথা নয়।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২)(ঘ) উপ-অনুচ্ছেদে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে বলা আছে। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে’ তাহলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন।’ তবে উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন গৃহীত হলে উচ্চ আদালত সাজা পরিবর্তন ও রায় স্থগিত করতে পারেন। সে ক্ষেত্রেও নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। যার উদাহরণ- আওয়ামী লীগ নেতা ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, বিএনপির লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন দুর্নীতির মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত হয়েও আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।