ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দরপতন মার্কিন শেয়ার বাজারে
ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দরপতনের মুখে পড়েছে মার্কিন শেয়ার বাজার। উচ্চ সুদের হারের কারণে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে যায়। শুরু হয় দরপতন। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সোমবার ডো জোসন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনডেক্স ১ হাজার ১৭৫ পয়েন্ট বা ৪.৬ শতাংশ নেমে আসলে একে ব্ল্যাক মানডে আখ্যা দেওয়া হয়। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। তবে এরইমধ্যে বিশ্ববাজারে দরপতনের প্রভাব দেখা গেছে। মার্কিন বাজার-বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রত্যাশার চেয়ে অর্থনৈতিক বাস্তবতা ভালো হওয়ার কারণেই হঠাৎ করে দরপতন ঘটেছে।
হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর তা অত্যন্ত শক্তিশালী থাকবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।
২০১৬ সালের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আবাসন ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকবারই শেয়ার বাজারের দরবৃদ্ধি নিয়ে টুইট করেছেন। সে সব টুইটে নিজে দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ার মার্কেটের উর্ধ্বমূখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। ২০১১ সালের আগস্টের পর সোমবার সবচেয়ে বড় দরপতন ঘটে। ওই দরপতনকে ‘ব্ল্যাক মানডে’ আখ্যা দেওয়া হয়।
মার্কিন শেয়ার বাজারের এই দরপতন প্রভাব ফেলেছে বিশ্বজুড়ে। লন্ডনে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর এফটিএসই-১০০ সূচক ১.৪৬ শতাংশ নেমে ১০৮ পয়েন্ট নিচে নেমেছে। মঙ্গলবার সকালে এশিয়ার শেয়ার বাজারেও ওই প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। জাপানে ৪.৮ শতাংশ দর পড়ে যাওয়ার পর সামান্য বেড়েছে, অস্ট্রেলিয়া কমেছে ২.৭ শতাংশ আর দাক্ষিণ কোরিয়ায় ২.৩ শতাংশ।
বিবিসির বিশ্লেষণ বলছে, বিনিয়োগকারীরা আমেরিকা ও বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। শুক্রবার মার্কিন শ্রম দফতর আগের ধারনার চেয়ে বেশি পরিমাণে মজুরি ঘোষণা করে। সুদের হার বাড়ানো হয়। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখন শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বন্ড ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অর্থ রাখার দিকে ঝুঁকছেন। এই কারণেই শেয়ার বাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে।
আর্থিক উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান মুটলি ফুলের প্রধান নির্বাহী ডেভিড কুয়ো বিবিসিকে বলেন, আশঙ্কার চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে মার্কিন অর্থনীতি। ইতিবাচক খবরে ভারমাম্য প্রতিষ্ঠা হচ্ছে মার্কিন শেয়ার বাজারে। একইভাবে এস এন্ড পি গ্লোবাল মার্কেট ইনটেলিজেন্সের কর্মকর্তা এরনি গিবস বলেন, এটা অর্থনীতির বিপর্যয় নয়। এই দরপতন দেখে মনে করার কারণ নেই যে, বাজারের অবস্থা ভালো না। প্রত্যাশার চেয়ে অর্থনৈতিক বাস্তবতা ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য বাজারের পুনর্মূল্যায়ন দরকার।