সেনাবাহিনী এখন অনেক বেশী দক্ষ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকারের আমলে সশস্ত্র বাহিনীগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করার কারণেই আজকের সশস্ত্র বাহিনী অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস।
আজ বুধবার রাজধানীর মীরপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (সিএসসিএসসি)-এর ২০১৭-১৮ র গ্রাজুয়েশন কোর্স অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা দাবি করেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা ক্ষেত্রে ‘আমরা শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, অনেক উন্নত দেশকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি’।
যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই- স্লোগান উচ্চারণ করে, সরকার প্রধান বলেন, “আমাদের দেশ প্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলায়ও প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন।
“দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে আসছে।”
বহির্বিশ্বেও বিভিন্ন শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। তাদের সাফল্যে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিন বাহিনীর জন্য বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা ও জনবল বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু ও কক্সবাজার বিমানঘাঁটি। এছাড়া সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে নতুন নতুন ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন একাডেমি প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের নৌবাহিনীর সাবমেরিন ছিল না। সম্প্রতি অত্যাধুনিক সাবমেরিন যুদ্ধ জাহাজ নৌ বাহিনীতে যুক্ত হয়ে আমাদের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়েছে। আক্ষরিকভাবেই বাংলাদেশ নৌবাহিনী এখন ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।”
অনুষ্ঠানে ২৬৬ জন গ্রজিুয়েটকে সনদ দেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩৬ জন, নৌবাহিনীর ৪০ জন এবং বিমানবাহিনীর ২২ রয়েছে।
সনদপ্রাপ্ত বাকি ৬৮ জন বিদেশি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, সিয়েরা লিওন, শ্রীলঙ্কা, সুদান, তানজানিয়া, উগান্ডা প্রভৃতি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত স্টাফ কলেজে সেনাবাহিনীর ৪২টি, নৌবাহিনীর ৩৬টি ও বিমান বাহিনীর ৩৮টি স্টাফ কোর্স সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি দেশের ১০৬৬ জন অফিসারও এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
এ বছর ৭ জন মহিলা অফিসার গ্রাজুয়েট হওয়ায় নিজের আনন্দ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলা অফিসারের কোর্সে অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এটি সশস্ত্র বাহিনী তথা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে।