চার মোবাইল অপারেটর থ্রিজি তরঙ্গ বরাদ্দ পেল
বাংলাদেশে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি -থ্রিজি সেবার প্রথম নিলামে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি করে সরকারের আয় হয়েছে ৫২৫ মিলিয়ন ডলার বা ৪০৮১ কোটি টাকা। নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের দাম উঠে ২১০ মিলিয়ন ডলার (১৬৩৩ কোটি টাকা) । ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোন। অপর তিন অপারেটর বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেলের প্রত্যেকে কিনেছে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ।
রোববার বেলা ১১ টায় হোটেল রূপসী বাংলায় এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। টেলিযোযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন, বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসসহ কমিশনাররা নিলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। নিলামে অংশগ্রহণকারী চার অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল ও রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৫ জন করে প্রতিনিধি অংশ নেয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে এই নিলাম শুরু হয়। ২১০০ ব্যান্ডের মোট ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ এ নিলামের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয় ২১ মিলিয়ন ডলার । নিলাম পরিচালনা করেন বিটিআরসির থ্রিজি পরামর্শক আবদুল্লাহ ফেরদৌস। প্রথমে ১০ মেগাহার্টজ ও পরে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য দুই ধাপে নিলাম ডাকা হয়। প্রথম বিডে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য গ্রামীণ ফোন ২১০ মিলিয়ন ডলারের ডাক দেয়। অন্য কোনো অপারেটর এই ডাকে অংশ না নেয়ায় ওই দরেই ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ পেয়ে যায় গ্রামীণ ফোন। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য প্রথম ডাকে ১০৫ মিলিয়ন ডলার দাম (৮১৬ কোটি টাকা) তোলে বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেলের কর্মকর্তারা। এরপর আর কেউ দর বাড়াতে রাজি না হওয়ায় সেখানেই শেষ হয় দ্বিতীয় ধাপের নিলাম।দুই ধাপে ২৫ মেগাহার্টজের নিলাম হওয়ার পর হাতে থাকা বাকি ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গও নিলামে তোলে বিটিআরসি। কিন্তু অংশগ্রহণকারী চার প্রতিষ্ঠানের কেউ কিনতে আগ্রহী না হওয়ায় তা অবিক্রীত থেকে যায়।এই নিলামের ফলে ২১০ কোটি ডলারে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের থ্রিজি লাইসেন্স পাচ্ছে গ্রামীণ ফোন। ১০৫ মিলিয়ন ডলারে ৫ মেগাহার্টজ থ্রিজি তরঙ্গের লাইসেন্স পাবে বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল। থ্রিজি নীতিমালা অনুসারে অপারেটররা ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স পাচ্ছে।থ্রিজি লাইসেন্স বিক্রি করে ৪ বেসরকারি অপারেটরের কাছ থেকে মোট ৫২৫ মিলিয়ন ডলার বা ৪০৮১ কোটি টাকা আয় করবে সরকার। নিলামে ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হলে সরকারের ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় হওয়ার কথা ছিল।চূড়ান্ত নীতিমালা অনুযায়ী টেলিটক নিলামে অংশ না নিলেও নিলামে যে দর উঠবে, সে পরিমাণ টাকা দিয়েই টেলিটককে লাইসেন্স নিতে হবে। দেশের ছয় মোবাইল অপারেটরের মধ্যে পরীক্ষামূলক থ্রি-জি সেবা দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক । নিলামের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলেও দেশের প্রথম ও একমাত্র সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেল আর্থিক সমস্যার কারণে টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে নিলাম থেকে ছিটকে পড়ে।