রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে ইইউ’র প্রতিনিধিদল
রাখাইন মর্মান্তিক নির্যাতনের মূখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেই ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া একটু বিলম্বিত হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের রোহিঙ্গা বিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’কে সম্পৃক্ত করে চুক্তি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের এই সংস্থাকে সাথে নিয়ে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া করলে এই পরিস্থিতি ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সোমবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে নব গঠিত শরনার্থী ক্যাম্প মধুরছড়া কিউ কিউ জোন এলাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধিদলকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে এইসব কথা বলেন পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
সোমবার সকালে ইইউ প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসলে ক্যাম্পে অপেক্ষমান সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান। পরে প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে তাদের আবাসস্থল, থাকা, খাওয়া,পয়োনিষ্কাশন, চিকিৎসাসহ প্রভৃতি প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় তারা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও কথা বলেন।
এসময় বেশ কয়েকজন ধর্ষিত ও নির্যাতিত স্বামীহারা রোহিঙ্গা মহিলা তাদের স্বজন হারানোর শোকাহত ঘটনাবলী বর্ণনা দেন। পাশাপাশি মিয়ানমার সেনা কর্তৃক গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন পঙ্গু রোহিঙ্গা তাদের সর্বস্ব হারানোর কথা বলেন। দাবি জানান, মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলে তাদেরকে যেন আবারো এদেশে ফিরে আসতে না হয়।
ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ইইউ প্রতিনিধি দলের প্রধান জিন লামবারট বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক মহল মনে করেন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আগে মিয়ানমার সরকারকে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের যে পরিস্থিতি কথা বর্ণনা করেছেন তাতে কোনোভাবেই সেই পরিবেশ তাদের অনুকূলে নয়। যে কারনে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহবান জানান জিন লামবারট।
প্রতিনিধি দলে জেমস নিকলসন, রিচার্ড করবেট, ওয়াযিদ খান, সাজ্জাদ করিম, মার্ক তারাবেলাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩২ জন সদস্য ছিলেন। পরিদর্শনের সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ ছাড়াও ত্রাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখেন তারা।