মিয়ানমার জেনারেলের ওপর কানাডার অবরোধ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিপীড়নে ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা’ রাখায় সে দেশের এক জেনারেলের ওপর অবরোধ আরোপ করেছে কানাডা। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিসটিয়া ফ্রিল্যান্ড এই অবরোধ আরোপের তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এই অবরোধের কারণে কানাডায় কোনও অর্থ লেনদেন বা সেখানে ভ্রমণ করতে পারবেন না ওই জেনারেল। জব্দ করা হবে সেখানে থাকা তার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ক্রিসটিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে আর মেজর জেনারেল মং মং সোয়ে ছিলেন এই নিপীড়নের অন্যতম নেতা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া এই মানবতাবিরোধী অপরাধ কানাডা নীরব দাঁড়িয়ে দেখতে পারে না। আমরা রোহিঙ্গা এবং অধিকার ও সম্মানের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর পাশে সহমর্মিতা নিয়ে দাঁড়াবো।
কানাডার এই সিদ্ধান্ত এমন এক দিনে এলো যেদিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনযজ্ঞের একটি স্বাধীন ও আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে। নয় সদস্যের ইউ মানবাধিকার সাব-কমিটি বলছে, সামরিক স্বৈরতান্ত্রিকতা থেকে গণতন্ত্রের পথে মিয়ানমারের অগ্রযাত্রায় রোহিঙ্গা নিপীড়ন মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
কানাডা সরকারের ওয়েবসাইটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার ভঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখার ফলাফল হচ্ছে এই অবরোধ। ওই সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে ছয় লাখ ৮৮ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ওই অভিযানের ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। জাতিসংঘ এই অভিযানকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছে।