আজ পিলখানা ট্র্যাজেডির ৯ বছর
আজ ২৫ শে ফেব্রুয়ারি। পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস। ইতিহাসের এক ভীষিকাময় দিন। ২০০৯ সালের এই দিনে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালকসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত হয় নারী ও শিশুসহ আরও ১৭ জন।
সেদিন সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে তৎকালীন বিডিআরের বার্ষিক দরবার চলাকালে দরবার হলে ঢুকে পড়ে একদল বিদ্রোহী সৈনিক। এদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। এরপরই ঘটে যায় ইতিহাসের সেই নৃশংস ঘটনা। বিদ্রোহী সৈনিকরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহূর্মুহূ গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে রাজধানীবাসী। জিম্মি অবস্থায় ফোনে অনেকেই বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন, সাহায্য চেয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। রক্তে ভেসে যায় পিলখানা।
তারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে জিম্মি করে রাখে। পুরো পিলখানায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চারটি প্রবেশপথ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় গুলি ছুঁড়তে থাকে তারা। বিদ্রোহীরা দরবার হল ও এর আশপাশ এলাকায় সেনা কর্মকর্তাদের গুলি করতে থাকে। তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘন্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। পরে পিলখানা থেকে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিডিআর সদস্য ও ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। জিম্মি করে রাখা হয় অনেককে।
ঐ ঘটনার পরেই বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বাহিনী বা বিজিবি।
এই নারকীয় ঐ হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ের পর গত বছর হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১শ’ ৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখা হয়। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় আরো ১শ’ ৯৪ জনকে এবং খালাস দেওয়া হয় ২৯ জনকে।
প্রতিবারের মতো নিহতদের স্মরণে এবারও নানা কর্মসূচি পালন করবে বিজিবি ও সেনাবাহিনী।