নাজমুদ্দিন এরবাকান: এক ঘুমভাঙ্গা সিংহের উপাখ্যান

erbakanআবিদ ইহসান: তুরস্কে তখন ইসলামী অনুশাসনের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা। মুসলমানরা নিজেকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে দ্বিধাবোধ করতো। আল্লাহর দেয়া ফরজ কাজসমূহ পালনের ক্ষেত্রে সর্বদা ভয়ে ভয়ে থাকতে হতো।
সে দুঃসময়কে পালটে দিতে, সময়ের বিপরীত স্রোতে চলার অবিচল মনোবল নিয়ে, তুরস্কের মানুষের ভেতরে ইসলামী ধ্যান-ধারণা জাগ্রত করার লক্ষ্যে ও আবারও বৃহৎ তুরস্ক গড়ার লক্ষ্যে এবং জায়োনিজমের বিষদাত ভেঙ্গে নতুন এক বিশ্বব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রখ্যাত আলেম জাহেদ আহমেদ কুতকু এর পরামর্শে ১৯৬৯ সালে ১০ জন উম্মাদকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন মিল্লি গুরুশ (জাতীয় ভিশন অর্থাৎ ইসলামী ভিশন) আন্দোলনের।
“পৃথিবীকে গড়তে হলে সবার আগে নিজকে গড়ো।” এটি শুধু স্লোগান নয়, বাস্তব একটি সত্য কথা। যাদের লক্ষ্য হবে পৃথিবীকে পরিবর্তন তাদের প্রথম কাজ হবে নিজেদেরকে পরিবর্তন করে শক্তিশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া।
সে লক্ষ্যে তার্কির উন্নয়নের জন্য, মুসলিমদের জীবন-যাপন সহজ করার উদ্দেশ্যে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং দল গঠনের পরপরই বলেছিলেন- “আগামী নির্বাচনে আমরাই ক্ষমতায় থাকবো।” সবাই বলেছিলো- লোকটা ইউটোপিয়ান।
নির্বাচনের ফলাফলে মিল্লি সালামেত পার্টির আসন সংখ্যা ৪৮। এখন তাদের সাথে কোয়ালিশন ব্যতিত ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে সিএইচপি প্রফে.ড.নাজমুদ্দিন এরবাকানের মিল্লি সালামেত পার্টির সকল দাবী দাওয়া মেনে নিয়ে(৫ মন্ত্রণালয়, ও ভাইস-প্রাইমিনিস্টার পদ দেওয়ার শর্তে) কোয়ালিশন করে।
তখন মিডিয়ার সামনে এসে বলেছিলেন- “এখন কারা ক্ষমতায়??”
ক্ষমতায় এসে কীভাবে কাজ করা যায়, আমেরিকাকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে কীভাবে নির্যাতিত মুসলিমদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া যায় তা করে দেখিয়েছেন মাত্র ৪ বছরের ক্ষমতায় তাও মাত্র ৪৮ টি আসন নিয়ে।
৭৪-৭৮ সালের কার্যাবলী-
১) উপ-প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে, তার্কির প্রধানমন্ত্রী বৃটেন সফরে গেলে প্রধানমত্রীর দায়িত্ব অর্পিত হয় এরবাকান হোজার উপর। সাথে সাথেই দেরী না করে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন। সাইপ্রাস দখল করার, একরাতে যতটুকু পারা যায়। আমেরিকান ওয়ারক্রাফট যদি আসে তাহলে সেখানেও হামলা করার নির্দেশ দেন। সাইপ্রাস বিজয়ের পর আমেরিকাও কোন কথা বলতে সাহস পায় নি এবং বাধ্য হয়ে তার্কির প্রধানমন্ত্রী দ্রুত বৃটেন ত্যাগ করে দেশে ফিরে আসেন।
২) আজ যারা আমেরিকার ভয়ে তাদের ঘাঁটিসমূহ বন্ধ করতে সাহস পায় না তাদের জন্য উদাহরণ হচ্ছেন ড.এরবাকান।
৭৪ এর সাইপ্রাস বিজয়ের পর আমেরিকা তার্কির উপর ঊসনধৎমড় দেয়। তার্কির ইসলামপন্থী থেকে শুরু করে অনেকেই তাকে দোষারোপ করছিলো সাইপ্রাস বিজয়ের জন্য এবং আমেরিকার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে শংকিত ছিলো। সে সময়ে যারা আমেরিকার ভয়ে কাবু ছিলো তাদের উদ্দেশ্যে সংসদে দাঁড়িয়ে ধমকের সুরে বলেছিলেন- “আমেরিকা আমার কী??” (আমেরিকা আমার কী করবে?)
এমবার্গো দিয়ে তাকে দমিয়ে রাখা যায় নি, উলটো তিনি আমেরিকার ২৫ টি সামরিক ঘাটি (বর্তমান ইনজিরলিক সহ) বন্ধ করে দিয়ে সেসব ঘাটিতে তার্কির পতাকা উড়িয়ে দেন।
এরপর ১৯৮০ সালে তার দল বিরোধীদলে ছিলো। সেসময়ে তার কুদুস মিটিং এর কারণে ইতিহাসের প্রথম কোন বিরোধীদলের বিরুদ্ধে ক্যু সংগঠিত হয়। ক্যু এরপর সকল মিলিটারী বেস আবার চালু করা হয়। সে সময়ের সি’আইএর এডভাইজর বলেন- “Our boys did it”। (দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আজ পর্যন্ত এই ঘাটিগুলো বন্ধ করার সাহস পায় নি কেউ। এসকল ঘাটি থেকে এখনো প্রতিদিন বিমান হামলা করা হচ্ছে সিরিয়াতে ইরাকে। আর নিহত হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুরা।)
সেই সাথে তার্কির অবকাঠামো উন্নয়নে মনোযোগ দেন এবং ইসলামী পুনর্জাগরণের জন্য কাজ শুরু করেন। তিনি যে কাজগুলো করেছেন মাত্র পাচ বছর ক্ষমতায় থেকে আজ পর্যন্ত তার নজির কেউ স্থাপন করতে পারেনি। তার কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১- আধ্যাত্মিক উন্নয়নকে সরকারী কাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিকরন
২- পুনরায় মাদ্রাসা স্থাপন
৩- ৫০০০ এর বেশী কুরআন কোর্স চালু করা
৪- সকল স্কুলে দ্বীন ও আখলাক দারস বাধ্যতামূলক করে দেওয়া
৫- মুসলিম দেশসমূহ থেকে পাশ করে আসা শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটের স্বীকৃতি দেওয়া। (বর্তমান সময়েও যা নাই। কয়েকটি দেশের সার্টিফিকেটকে এখনো স্বীকৃতি দেওয়া হয় না)
৬- তুরস্ককে ওআইসির অন্তর্ভুক্তিকরন
৭- ইসলামীক ডেভলেপমেন্ট ব্যাংক গঠনে অগ্রনী ভূমিকা পালন
৮- তুরস্কে সুদ মুক্ত ব্যাংক চালু করা (বর্তমানে যেখানে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় অবস্থিত)
৯- ভারী শিল্প কারখানা স্থাপন করা। ২৭০ টির বেশি ভারী শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
১০- নতুন বৃহৎ তুরস্কের পরিকল্পনা
১১- ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য জাতির সামনে ১০০ বছরের বিস্তারিত ভিশন পেশ করা।
১২- তুরস্ক এবং ইরানের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং ডলারের পরিবর্তে স্থানীয় মুদ্রা দিয়ে ব্যবসা শুরু করা।
১৩- বসনিয়াকে স্বাধীন করার জন্য মুজাহিদ বাহিনী প্রেরণ এবং সেখানে অত্যাধুনিক অস্ত্র কারখানা প্রতিষ্ঠা করা।
মিল্লি সালামেত ও রেফাহ পার্টির শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত কারখানা-
১৮ টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি,
১৬ টি সার-কারখানা,
১৪ টি চিনির ফ্যাক্টরি…
২৩ টি সুমের ব্যাংক ফ্যাক্টরি
৬ টি উদ্ভিদ ফ্যাক্টরী
৭৭ টি বৃহৎ শিল্প সেবা প্রতিষ্ঠান
৬৩ টি organized industrial Zone
২৫৩ টি ছোট শিল্প-কারখানা,
৩২ টি বৃহৎ মেশিনারী ফ্যাক্টরী
৪ টি নৌ কারখানা
১০ টি ইঞ্জিন ফ্যাক্টরী
১১ টি ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল শিল্প-কারখানা
৩ টি গবেষণা সেন্টার(প্রাকৃতিক সম্পদ)
৪ টি ইলেক্ট্রোনিক শিল্প-কারখানা এবং
সর্বশেষ Taksan প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা ছিলো “ফ্যাক্টরী বানানোর ফ্যাক্টরী।” মানে অন্যান্য ফ্যাক্টরী বানাতে হলে যা সরঞ্জাম লাগবে তা এই ফ্যাক্টরি সরবরাহ করবে।
এতো কম সময়ে এরকম উৎপাদন আর কেউ করে দেখাতে পারে নি তার্কির ইতিহাসে।
এটি হচ্ছে উন্নয়ন, সত্যিকারের উন্নয়ন। যারা রাস্তা-ঘাট আর বিল্ডিং এর মধ্যে উন্নয়ন খুজে ওরা অজ্ঞ। কারণ এই সাদা বিল্ডিং আমাকে আপনাকে খাবার দিবে না। রেড ইন্ডিয়ানদের একটি কথা ছিলো- “যখন নদীর মাছ শেষ হয়ে যাবে, গাছ-পালা ধ্বংস হয়ে যাবে, খাবারের কিছু অবশিষ্ট থাকবে না, তখন এই সাদা চামড়ার বৃটিশরা বুঝতে পারবে যে টাকা চিবিয়ে খাওয়া যায় না।” তেমনি বর্তমান সময়ে ভারী শিল্পে উন্নয়ন ব্যতিত দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, তার প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কারখানার অধিকাংশই বিক্রি করে দেয়া হয়েছে যা তার্কির নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার শামিল।
এরবাকান হোজার নির্মিত বিখ্যাত Taksan ফ্যাক্টরি যখন বিক্রি করে দেয় সরকার, সেসময় তা নিয়ে তার্কির পত্রিকা রিপোর্ট করেছিলো- “শিক্ষক তৈরী করেছিলো, আর ছাত্ররা বিক্রি করে দিল।”
(লিংক- https://www.evrensel.net/ha…/139910/hoca-yapti-ogrenci-satti)
বসনিয়ার স্বাধীনতাঃ
বসনিয়ার নিপীড়িত মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর সাহস যখন কেউ পাচ্ছিলো না তখন প্রফেসর এরবাকান বিরোধীদলে থেকেও সবরকমের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। বসনিয়ার বিখ্যাত নেতা আলীয়া ইজ্জেত বেগভিচ যখন তার কাছে সাহায্যের জন্য আসেন। এক মাসের মধ্যে ৩৬ মিলিয়ন ডলার দিয়ে সেসময়ে বসনিয়ার একটি স্ট্র্যাটিজক পজিশনে অবস্থিত মার্সিডিজ ফ্যাক্টরীকে অস্ত্র ফ্যাক্টরীতে রুপান্তর করেন, তাও মাত্র ১১ মাসের মাথায়, তার উপর বিরোধীদলে থেকে। সেই সাথে আলীয়া ইজ্জেত বেগভিচের পার্টির প্রধান কার্যালয়ের ভাড়া পর্যন্ত এরবাকান হোজার রেফা পার্টি বহন করতো।
বসনিয়ার স্বাধীনতায় প্রফেসর এরবাকানের অবদান অনেকটা উহ্যই থেকে গিয়েছে কারণ তিনি ডাক-ঢোল পিটানোর চেয়ে কাজে বিশ্বাসী ছিলেন।
ক্ষমতায় থেকে হোক আর না থেকেই হোক, আমেরিকা, ইসরাঈল, ন্যাটো কাউকে পরোয়া না করে মুসলিমদের সহায়তায় সর্বদা পাশে দাড়িয়েছেন।
বর্তমান সময়ের তার্কির সবচেয়ে বড় দাতব্য সংস্থা (IHH) তিনিই গড়েছিলেন ১৯৯২ সালে বসনিয়ায় সাহায্য প্রেরণের জন্য। উল্লেখ্য ২০০৯ সালে গাজায় যে ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরাঈল হামলা করেছিলো সেটা তারই পাঠানো জাহাজ ছিলো।
# ৫৪তম সরকারের অবদানসমূহ (১১ মাস)
১। সরকারী চাকুরীজীবীদের বেতন ১০০ ভাগ বৃদ্ধি করা,
২। কৃষকদেরকে ২০০ ভাগ বেশী ভর্তুকি দেওয়া,
৩। সকল প্রকার কর্মচারীর বেতন ভাতাকে ৩০০ গুন বাড়িয়ে দেওয়া।
৪। ব্যাল্যান্স বাজেট করা (তুরস্কের ইতিহাসে প্রথম, এর আগে এবং পরে আর কেউ করতে পারেনি)
৫। অর্থনীতিকে সুদ মুক্ত করার লক্ষ্যে নতুন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা এবং সুদকে সম্পূর্ণ রূপে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা। সেই সাথে তার্কির সুদের পরিমাণ ইতিহাসের সর্বনিম্নে নিয়ে এসেছিলেন মাত্র ১১ মাসের ক্ষমতায়।
৬। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নতুন ফান্ড গঠন। এক্ষেত্রে ভ্যাট না নিয়ে, ঋণ না নিয়ে শুধু মাত্র ১ বছরে দেশীয় ভাবে ৬ মাসের মধ্যে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের ফান্ড গঠন করা।
৭। তুরস্কের অভ্যন্তরে অবস্থিত সকল বিদেশী সৈন্যকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া।
৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে সব মিলিয়ে তিনি মাত্র ১৫ বছর রাজনীতি করেছেন সক্রিয়ভাবে। আর বাকি ২৫ বছর হয় জেলে অথবা রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ছিলেন। (২০০৩ সালেও তাকে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। এরপর আবার ফিরে আসেন ২০০৭ সালে)
মাত্র পাঁচ বছরের শাসনামলে তিনি দেখিয়ে গিয়েছেন কীভাবে পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে লড়তে হয়, কীভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। দেশকে স্বনির্ভর করার ক্ষেত্রে নিজেদের উৎপাদন বৃদ্ধি করা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি মুসলিম বিশ্বকে সেদিকেই বেশি জোর দেয়ার কথা বলেছেন বারবার। নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উ-৮ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আমেরিকা- ইসরাঈলের প্রতিষ্ঠিত সুদভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বিরুদ্ধে নতুন অর্থব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে D-8 গঠন করেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল একবার এরবাকান হোজার কাছে এসে বলেছিলো- “হোজা, আমেরিকার সাথে আমরা কীভাবে পারবো? ওদের এই আছে সেই আছে।”
এরবাকান হোজা হেসেছিলেন। কারণ ওরা সবাইই আন্দোলনের সুসময়ে এসে যোগ দিয়েছিলো। কঠিন সময় ওরা দেখে নাই। তাই তিনি বলেছিলেন-
“তুমি এ কথার বলার মাধ্যমেই নিজেকে ওদের বুদ্ধিবৃত্তিক দাসে ও গোলামে পরিণত করেছো। মিল্লি গুরুশ কী তুমি কী ভুলে গিয়েছো??
https://www.youtube.com/ watch?v=0BWn8zSzVyk
তিনি বলতেন- “আমরা শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য নয় বরং সিস্টেম পরিবর্তন করার জন্য রাজনীতি করি।”
তার লক্ষ্য ছিলো জায়োনিজমের হাত থেকে উম্মাহকে রক্ষা করা এবং একটি বাসযোগ্য পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করা। সে জন্য তিনি কাজ করে গিয়েছেন আজীবন।
তিনি এক বক্তব্যে বলেছিলেন- “আমার পরেও তোমরা তোমাদের লক্ষ্য থেকে তোমরা বিচ্যুত হয়ো না।
“বিজয় মুমিনদের জন্য এবং বিজয় অতি নিকটবর্তী।”
“এই মিল্লিগুরুশের ভাইয়েরা, এরপর তোমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দ্বিতীয় ইয়াল্টা কনফারেন্স করে নতুন দুনিয়া প্রতিষ্ঠা করা।”
https://www.youtube.com/watch?v=H_S9MfKrzJo
বর্তমানে এরকম একজন নেতা প্রয়োজন খুব, যার কথা শুনলে ইসরাঈল ভয়ে কাপবে। আমেরিকা-ইসরাঈলকে যে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে তাদের সকল ঘাটি বন্ধ করে দিয়ে ইসরাঈলের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করবে।
১৯৯৭ সালে তার ক্ষমতাকালে ইসরাঈল কোন হামলা করার সাহস পায় নি ফিলিস্তিনে। তাই সে সময়ের ইসরাঈলী প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো যে, আপনারা কী কারণে হামলা করেননি।
উত্তরে সে বলেছিলো- “যে ব্যক্তি একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে সাইপ্রাস দখল করে নিতে পারে, তার ক্ষমতাকালে ফিলিস্তিনে হামলা করা আত্মহত্যার শামিল।”
আজ পর্যন্ত তার মতো কেউ সাহস করেনি আমেরিকার সকল ঘাটি বন্ধ করে দিয়ে সেখানে তার্কির পতাকা উড়িয়ে দেওয়ার। মাত্র ৫ বছরের ক্ষমতাকালে তিনি তার্কিকে যে শক্ত ভিত দিয়েছেন তার উপর নির্ভর করেই তার্কি আজ এ পর্যন্ত এসেছে।
প্রফেসর.ড.নাজমুদ্দিন এরবাকান ছিলেন একজন প্রধানমন্ত্রী, গণিতবিদ, বিজ্ঞানী, কুর’আনে হাফেজ, আলেম এবং রাজনীতিবিদ।
তার্কির রাজনীতিতে তার সম্মান কত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আস্তিক নাস্তিক জাতিয়তাবাদী সকলেই তার নাম যে সময়ই বলে না কেন বলার সময় “এরবাকান হোজা (উস্তাদ)” বলে।
যে ঘুম-ভাঙ্গা সিংহের গর্জনে বাতিল শক্তি সদা-কম্পমান থাকতো, সে সিংহ-পুরুষ ২০১১ সালের আজকের এই দিনে আল্লাহর এই দুনিয়া ছেড়েছিলেন আর রেখে গিয়েছেন তার স্মৃতি ও প্রেরণার কিছু রঙের তুলি।  তার্কির ইতিহাসে এতো পরিমাণ মানুষ কারও জানাযায় আসে নি, যে পরিমাণ মানুষ তার জানাযায় এসেছিলো।
আল্লাহ তার্কির এই সিংহ-পুরুষকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
এরকম ঘুম-ভাঙ্গা সিংহের গর্জনের অপেক্ষায় পুরো উম্মাহ…।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button