ট্রাম্পের ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’র বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি ইইউ’র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধাতব পদার্থের ওপর শুল্ক বাড়ালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার কঠোর জবাব দেবে হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ইইউ কর্মকর্তারা। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৫০ কোটি ডলারের আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ কর আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছেন ইইউ বাণিজ্য কর্মকর্তারা। তবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো বলেছেন, কেউই বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ ভাল বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক টুইটের পর থেকে বিষয়টি নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া জানালো ইইউ। বৃহস্পতিবার ওই টুইট বার্তায় তার দেশে ইস্পাত আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করার পরিকল্পনার কথা জানান। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি কার্যকর করা হবে বলেও সেখানে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত, কৃষিসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর কর বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জিন ক্লাউডি জানকার এর কঠোর জবাব দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন। তিনি বলেন, ‘কোনও অন্যায্য ব্যবস্থার কারণে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরাও চুপ বসে থাকব না। এমন হলে হাজার হাজার ইউরোপিয়ানের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’ জার্মানির এক টেলিভিশন প্রোগ্রামে জানকার বলেন, ‘আমরা হার্লি-ডেভিসন, লেভিস এর বোরবোন ও নীল জিনসের ওপর কর আরোপ করবো।’
ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লি মাইরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ বাণিজ্য যুদ্ধে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বিষয়টি নিয়ে ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিশালী, সহযোগিতামূলক ও সমন্বিত প্রতিক্রিয়া’র প্রতিজ্ঞা করেন।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করছে কানাডা, মেক্সিকো, চীন ও ব্রাজিলও। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ইস্পাত রফতানি করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই কর আরোপকে ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তারা কানাডার শিল্পকে রক্ষা করতে সমর্থ হবেন বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, যদি সব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে তাহলে বিশ্ব বাণিজ্য শৃঙ্খলায় নিসন্দেহে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, ট্রাম্পের এই বিধিনিষেধ শুরু যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেই প্রভাব ফেলবে না, যুক্তরাষ্ট্রের নিজের অর্থনীতিরও ক্ষতি করবে।
এমনকি অনেক মার্কিন কোম্পানিও এই খবরে বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে দেশটির ক্যানে খাদ্যপণ্য সংরক্ষণের জন্য অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহারকারী বিয়ার ব্রিউয়ারস রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক দিয়ে বলেছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অনেকের চাকরি ঝুঁকিতে ফেলবে আর তার ভোক্তাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে। -বিবিসি