নেপালে বাংলাদেশের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৫০
ঢাকা থেকে নেপালের কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ইউএস বাংলার একটি বিমানে কাঠমান্ডু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ইউএস-বাংলার একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ৭৮ আসনের প্লেনটির বেশিরভাগ যাত্রীরই প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকায় ইউএস বাংলার কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৬৭ জন যাত্রী নিয়ে এটি ছেড়ে যায়। তবে প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানাতে পারেননি কর্মকর্তারা। সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে দেখা যাচ্ছে কাঠমুন্ডু বিমানবন্দর থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডুলী উঠছে। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে পার্বত্য শহর কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
নেপালের গণমাধ্যম জানিয়েছে কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের খবরে বলা হয়েছে, বিমানটিতে ৭৮ জন আরোহী ছিলেন, তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর বলা হচ্ছে ৬৭ জন আরোহী ছিলেন। বিধ্বস্ত বিমানটি থেকে ১৭ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্লেনটিতে ৬৭ আরোহী ছিলেন। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের খবর, প্লেনটি অবতরণের সময় বিমানবন্দরের পূর্ব পাশে আছড়ে পড়ে। দুর্ঘটনাকবলিত প্লেনের আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন দমকলকর্মী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সুরেশ আচার্য্য জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৭ জনকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেমনাথ ঠাকুর জানান, প্লেনটি অবতরণের সময় তীব্র ঝাঁকুনি খেয়ে দিক বদলে পূর্ব পাশের একটি ফুটবল মাঠে আছড়ে পড়ে। এসময় প্লেনটিতে আগুন ধরে যায়।
ঘটনাস্থলে বিমানবন্দরের উদ্ধারকর্মী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তৎপরতা চালাচ্ছেন। ত্রিভুবন বিমানবন্দরের পূর্ব পাশে দুর্ঘটনা কবলিত উড়োজাহাজ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্লেনটি বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ মডেলের এস২-এজিইউ। বাইরে পাখাবিশিষ্ট এ ধরনের প্লেনে সর্বোচ্চ ৭৮টি আসন থাকে।
বিবিসির নেপালি সার্ভিস জানাচ্ছে, বিমানটি কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যান্ডিং করার সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
বিমান বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান থেকে ধোয়া বেরুতে এবং তাড়াহুড়া করে যাত্রীদের বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেছেন তারা। যাত্রীদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র মনোজ নেউপানে বিবিসি নিউজ নেপালিকে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজ কুমার ছেতরি জানিয়েছেন, আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে দমকল কর্মীরা।
ইউএস বাংলার মোট আটটি বিমান আছে, এর মধ্যে চারটি ড্যাশ এইট, চারটি বোয়িং। এর মধ্যে একটি ড্যাশ এইট নষ্ট থাকার কারণে কিছুদিন যাবত হ্যাঙ্গারে পড়ে রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন গন্তব্য ছাড়াও কোলকাতা, কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, দোহা এবং মাসকট রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস বাংলা। এছাড়া এপ্রিলে চীনের গুয়াংঝু শহরে ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।