রাশিয়াকে কোন প্রক্রিয়ায় শাস্তি দিতে পারে যুক্তরাজ্য?

nerveসাবেক এক রুশ গুপ্তচরের ওপর বিষপ্রয়োগের ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি হুমকি দিয়েছেন, মঙ্গলবারের মধ্যে মস্কোর কাছ থেকে ব্যাখ্যা না পেলে রাশিয়াকে পরিণতি ভোগ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন- রাশিয়াকে কীভাবে শাস্তি দিবে দেশটি? বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথমে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করতে পারে যুক্তরাজ্য। এর আগে ২০০৬ সালে অ্যালেক্সান্ডার লিতভিয়েঙ্কো নামে আরেক রুশ ‘ডাবল এজেন্ট’কে বিষপ্রয়োগে হত্যার পর যুক্তরাজ্য তেমন পদক্ষেপই নিয়েছিল। তখন সন্দেহভাজন কয়েকজন রুশ নাগরিকের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এতে তেমন কোনো চাপ তৈরি হয়নি। বরং প্রধান সন্দেহভাজন অন্দ্রে লুগোভোই এখন রাশিয়ার একজন এমপি।
তাহলে আর কী করতে পারে যুক্তরাজ্য? করণীয়র মধ্যে থাকে রুশ রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসে যেসব কর্মকর্তাকে গোয়েন্দা বলে সন্দেহ করা হয়, তাদের বহিষ্কার করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে বসবাসরত রুশ ধনকুবেরদের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। তাদের সম্পদের উৎস সম্পর্কে ব্যাখ্যা না পাওয়া পর্যন্ত সেগুলোকে সাময়িকভাবে বাজেয়াপ্ত করতে পারে। রাশিয়ায় আসন্ন বিশ্বকাপ ফুটবলও বয়কট করতে পারে যুক্তরাজ্য। কিন্তু মিত্র দেশগুলো এতে আগ্রহী হবে বলে মনে হয় না। এর পাশাপাশি রাশিয়ার টিভি চ্যানেল ‘আরটি’র সম্প্রচার যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করতে পারে।
রাশিয়ার ওপর ইইউ নিষেধাজ্ঞার বিস্তার?
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নেয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপায়। প্রায় ১৫০ জন রুশ নাগরিকের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয় এবং ৩৮টি রুশ কোম্পানির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইইউ সদস্যদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ইতালি, গ্রিস এবং হাঙ্গেরি এই নিষেধাজ্ঞা ওঠানোর পক্ষে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, যুক্তরাজ্য যেখানে ইইউ জোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, সেখানে রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ব্যাপারে তাদের অনুরোধে সাড়া না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ন্যাটো সামরিক জোট ব্যবস্থা নিতে পারে?
যুক্তরাজ্য এই বিষপ্রয়োগে হত্যাচেষ্টাকে তাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ‘অবৈধ শক্তি প্রয়োগ’ হিসেবে দেখছে। ন্যাটো সামরিক জোটের সংবিধানের পঞ্চম ধারায় রয়েছে, কোনো সদস্য দেশের বিরুদ্ধে হামলাকে জোটের বিরুদ্ধে হামলা হিসেবে দেখা হবে। এই ধারা একবারই কার্যকর করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেন সন্ত্রাসী হামলার পর।
তবে যুক্তরাজ্য এখনো স্যালসবেরির ঘটনাকে অনুচ্ছেদ ৫ বিষয় বলে দেখাতে চাইছে না। কিন্তু ব্রিটিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সদস্য দেশগুলোতে অতিরিক্ত সেনা এবং অস্ত্র মোতায়েন করতে পারে ন্যাটো জোট।
মিত্র দেশগুলোর সমর্থন কতটা?
ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মে। কিন্তু উত্তরে গতানুগতিক বক্তব্য দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ। যুক্তরাষ্ট্র স্যালসবেরির ঘটনার নিন্দা করেছে, তবে রাশিয়ার নাম উচ্চারণ করেনি। তাই রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্য পশ্চিমা মিত্রদের কতটা পাশে পাবে, তা নিয়ে অনেক পর্যবেক্ষকের সন্দেহ রয়েছে। -বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button