বাংলাদেশে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। খাতটিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। যা পরবর্তী বছর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ১২ হাজার ১৩১ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। খেলাপির এ পরিমাণ মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৯৮ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা, অথচ খেলাপির এ পরিমাণ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদ ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা।
বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংকিং খাতের ঋণ খেলাপির বড় কারণ রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো। পার্শবর্তী দেশগুলোতে খেলাপিদের নাম প্রকাশ করলেও আমাদের দেশে সেটা হচ্ছে না। খেলাপিদের নাম প্রকাশ করলে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে এমন হতো না।
তবে বার্ষিক হিসেবে খেলাপির পরিমাণ বাড়লেও ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের এ খাতে ঋণ খেলাপি ছিল ৮০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে তা নেমে এসেছে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে খেলাপি ঋণ কমেছে ৬ হাজার ৬ কোটি টাকা।
বরাবরের মতো খেলাপির বোঝা রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ঘাড়েই বেশি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ রাষ্ট্রীয় খাতের সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে এক লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা।