রাশিয়ার নেতৃত্বে আবারও ভ্লাদিমির পুতিন
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রত্যাশিত জয় নিশ্চিত করে ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ছয় বছরের জন্য রাশিয়ার নেতৃত্বে থাকছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
রোববার নির্বাচন শেষ হওয়ার পর একটি বুথ ফেরত জরিপে পুতিনের পক্ষে ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পড়ার হিসাব দেওয়া হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর আগে ২০১২ সালের নির্বাচনে ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল তার পক্ষে।
এবার বুথ ফেরত জরিপের এই হিসাব নির্বাচনের ফলে প্রতিফলিত হলে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে বিপুল ব্যবধান জয় হবে পুতিনের।
২১ দশমিক ৩ শতাংশ বাক্সের ভোট গণনায়ও পুতিনের পক্ষে প্রায় ৭২ শতাংশ ভোট এসেছে।
শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এ নির্বাচনে পুতিন জয় প্রত্যাশিতই ছিল। ২০০০ সালের পর থেকেই প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাশিয়ার ক্ষমতার কেন্দ্রে আছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাত প্রার্থী লড়াই করেছেন। এসব প্রার্থী হলেন- পাওয়েল গ্রোদিনিন, ভ্লাদিমির ঝিরিনোভোস্কি, সের্গেই ব্যাবুরিন, গ্রেগরি ইউলিনেস্কি, বরিস তিতোভ, ম্যাক্সিম সেরিকিন ও নারী প্রার্থী কিসনিয়া সাবচাক।
জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় জনপ্রিয় বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। আদালতের ওই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে আসছেন পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনি।
বুথ ফেরত জরিপে এবার ভোট পড়ার হার বলা হয়েছে মোট ভোটের ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০১২ সালের চেয়ে কম।
রাশিয়ার নির্বাচন পরিচালনা বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছে, ৩০ হাজার পর্যবেক্ষক সারাদেশে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন।
নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিওতে রাশিয়ার অনেক শহর-নগরের ভোট কেন্দ্রে জালিয়াতির চিত্র উঠে এসেছে। বেশ কয়েকটি ভিডিওতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভরতে দেখা গেছে।
বিবিসি বলছে, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই বুথ ফেরত জরিপ প্রকাশ করা হয়, যাতে পুতিনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পাভেল গ্রুদিনিনের পক্ষে মাত্র ১১ দশমিক ২ শতাংশ ভোটের আভাস দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী একজন রাজনীতিবিদ ছয় বছরের জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অবশ্য ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই মেয়াদ ছিল মাত্র চার বছর। কিন্তু ওই বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের শাসনামলে প্রেসিডেন্টের মেয়াদকাল চার বছর থেকে বাড়িয়ে ছয় বছর করা হয়। এ ছাড়া, একজন প্রেসিডেন্ট পরপর দুই দফার বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেন না।
প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০০০ সালে প্রথমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। টানা দুইবারে আট বছর এই দায়িত্ব পালনের পর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি তিনি। ওই বছর দিমিত্রি মেদভেদেভ রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পুতিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার পুতিন প্রার্থী হন এবং জয়লাভ করেন।